মোঃ খাইরুজ্জামান সজিব :
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: নুরুজ্জামান মুসল্লী পরিচয় প্রত্র নং – 01550000637, মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলা থেকে গুরুত্বর অবস্থায় মুগদা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাদের কর্মচারী এবং নার্সদের অবহেলা ও দুর্ব্যবহার দেখে তিনি ক্ষোপ প্রকাশ করে বলেন , আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও প্রাপ্য চিকিৎসা সেবা ও সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা তারা আমাকে দেয় নাই। এমতবস্থায় আমি বেঁচে থেকে যদি মুক্তিযোদ্ধার সুযোগ সুবিধা না পেয়ে মরে যাই তাহলে মরার পর সরকারের গার্ড অফ অনার দিয়ে আমি কি করবো? তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ডাকে বাঙালির মুক্তির জন্য আমি সেদিন একজন পুলিশ সদস্য হিসাবে সর্বপ্রথমে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরি । আজ আমার এই প্রচন্ড অসুস্থ সময়ে প্রশাসনিক ভাবে কোন কর্মকর্তা/কর্মচারী কেউ একবারের জন্যে খোঁজ খবর নিতে আসেনি বরং ঢাকায় এসে আমি যা দেখলাম তাতে আমি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি, তাই আমি আমার ছেলেদের বলেছি ,তোমরা তাড়াতাড়ি আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাও এখানে থাকলে আমি এমনি মোর যাবো । তিনি আর কিছু বলতে পারেননি এই বলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মোঃ আক্তারুজ্জামান কাবুল জানান, হাসপাতালে ভর্তির শুধুমাত্র ১০ টাকার টিকিট ছাড়া আমরা কোনো সুযোগ-সুবিধা পাইনি। ডাক্তার উক্ত রুগীর জন্য যেসব টেস্ট দিয়েছিল নার্স সেগুলো বাহিরের কোনো এক হাসপাতাল থেকে অন্যকে দিয়ে করিয়ে আনার জন্য বলে(আমার ভাতিজা,মোজাহিদ হাসান জেসন) যে সময় আমি হাসপাতালে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলাম না।
আমি হাসপাতালে আসার পর সব কিছু শুনে নার্সকে জিজ্ঞাসা করলাম টেস্টগুলো তো এখানেই করা সম্ভব তাহলে এত টাকা দিয়ে আপনারা কেন বাহিরে পাঠালেন। উত্তরে উক্ত হাসপাতালের নার্স বলেন ডাক্তারের অনুমতি নিয়েই তিনি নির্দেশ প্রদান করেছেন টেস্ট এর জন্য কিন্তু ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান,যে টেস্ট গুলো হাসপাতালে করা সম্ভব সেগুলো আমরা বাহিরে করতে বলি না। আমি নার্সকে বললাম আপনার কত টাকা কমিশনের বিনিময়ে উক্ত টেস্টগুলো বাহির থেকে(আপনাদের নিদিষ্ট হাসপাতাল) করিয়ে আনাইছেন । তখন নার্স আমার সাথে খারাপ ব্যবহার এবং বিশ্রী ভাষা ব্যবহার করেছেন । এর পর উক্ত নার্স সহ অন্যান্য নার্সসহ ডা:মোঃনিয়াতুজ্জামান পরিচালক(ভারপ্রাপ্ত) রুমে যান এবং তারা কিছুক্ষণ পরে আমাদেরকে জানান,আপনার আব্বাকে রোগমুক্তি ছাড়াই ছাড়পত্র দিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি আর কিছু না বলে আমার ছোট ভাই মোঃহাসানুজ্জামান কে ফোন করি। ওএসে পরিচালকের সাথে কথা বলতে চাইলে তার সাথেও কথা বলে না । তখন তখন আমার ছোট ভাই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পিএ ফারুক আহমেদকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত বলেন। পরিচালক ফোন পেযে ছোট ভাইকে ডেকে কথা বলেন। আর বলেন আপনার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা পাবে আপনি একটা আবেদন করেন। আবেদনপত্র জমা দিতে গিয়ে অফিস স্টাফদের দুর্ব্যবহার দেখে আমরা অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে যায়। হিসাব সহকারী অনিমেষ ও অফিস সহকারি লিজার কাছে দরখাস্ত জমা দিতে গেলে ফটোকপি নিয়ে খুবই খারাপ আচরণ করে এবং লিজা একপর্যায়ে ফাইলটি আমার ছোট ভাইয়ের দিকে ছুঁড়ে ফেলে এই ঘটনার পর আমার ছোট ভাইয়ের বন্ধু দৈনিক খবরের আলোর সহকারী সম্পাদক আজিজুর রহমান টুটুল কে বলে ঘটনার বিস্তারিত শুনে সে নার্স ও অফিস সহকারীর সাথে কথা বলতে গেলে তার সাথেও দুর্ব্যবহার করে। সঙ্গে সঙ্গে ডা:মোঃনিয়াতুজ্জামান পরিচালক(ভারপ্রাপ্ত) আমার ছোট কে বলেন সামনে যে আনসার আছে উনার কাছে দরখাস্ত জমা দিয়ে যান। এদিকে আমার আব্বার দিকে তেমন একটা নজর দিচ্ছিল না হাসপাতালের দায়িত্বরত ডাক্তার ,নার্স এবং কর্তৃপক্ষ।
আমার বাবাকে (বীর মুক্তিযোদ্ধা),এবং আম্মাকে চিকিৎসার জন্য মোহাম্মদপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসি এবং তাদের দেখা শুনা ,খাওয়া-দাওয়া,ওষুধপত্র টেস্ট সহ প্রায় লক্ষাধিক টাকার বেশি খরচ হয়। এত খরচ বহনে আমরা উপায়ন্তর না দেখে ১০/১০/২২ ইং তারিখে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে যায়। এখনো আমার আব্বা ও আম্মার অবস্থা খুব একটা ভালো না শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ।উক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মোঃ বাবুল আক্তার (সাপ্তাহিক একুশে নিউজ) এর স্টাফ রিপোর্টার তিনি বলেন,স্বাধীনতার ৫০বছর পরেও বীর মুক্তিযোদ্ধাগন বিভিন্ন ভাবে অবহেলার পাত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে এর প্রাধান্য বেশি দেখা যাই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ন্যায্য মর্যাদা আশা করি, তিনি বলেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান , সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি এবং জাতির বিবেক। তিনি সবখানেই তাদেরকে যথাযথ সম্মান দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান কিন্তু আমরা যা দেখি /দেখলাম অবশেষে চিকিৎসা শেষ না করে বাড়ি ফেরত যেতে হলো। আমি অনুসন্ধান করে দেখেছি ,শুধু আমাদের সাথেই নয় সব রুগীদের সাথে নার্সদের প্রচন্ড দুর্ব্যবহার করা হয় এমনকি প্রতিটি ওয়ার্ডে যেসব রোগী ভর্তি রয়েছে অনেকেই বলেন এই হসপিটালে নার্সগণ প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশি ক্ষমতাশালী। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ডা:মোঃনিয়াতুজ্জামান পরিচালক(ভারপ্রাপ্ত) আমার ছোট ভাইকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে ,আমার বাবার খরচের আবেদনটি পাইলে আমরা যতদূর সম্ভব কিছুটা ছাড় দিব কিন্তু দেখা যায় ছাড়পত্র নেয়ার পর একটি টাকাও কম নেয়নি এতে আমরা সরকারের ন্যায্য সুবিধা থাকে বঞ্চিত হয়েছি।
উক্ত হাসপালে ১২৩৮ নং ১১তালাতে শুধু নাম মাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে একটি কেবিন এ দুটি সিট রয়েছে কিন্তু হসপিটালের অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কোনটাই দেয়া হয় না। আমার বাবা-মা একই কেবিন ভর্তি ছিলেন। এ প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয় হিসাব শাখা উপসচিব মো:জাহাঙ্গীর আলম বলেন আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে ১৯জানুয়ারি ২০২২-এ ১২৯ নং প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।সকল সরকারি হসপিটালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে। যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাদ্দ না করে তাহলে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় বরাবরে লিখিত পাঠালে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রলয় থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবার জন্য আরো অর্থ