মো.পাভেল রাজশাহী থেকে :
রাজশাহীতে দাঁতের চিকিৎসার জন্য খিচুনির ওষুধ দেওয়ায় কথিত এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রোববার সকালে রাজশাহীর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে মামলাটি দায়ের হয়।
মামলার বাদী আয়নাল হক। মামলার একমাত্র আসামি কথিত চিকিৎসক মফিজুল হক। তিনি রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার এমাদপুর মহল্লার সান্ডু মণ্ডলের ছেলে। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল)। কিন্তু তিনি কাটাখালী বাজারে রীতিমতো চিকিৎসকের মতো চেম্বার খুলে প্র্যাকটিস করতেন।
সাইনবোর্ডে নিজের নামের সঙ্গে ব্যবহার করতেন ‘ডা.’ পদবীও। এলাকার লোকজন তাঁকে ‘মফিজ ডাক্তার’ নামেই চেনেন। মামলার বাদী আয়নাল হকের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার দালালপাড়া গ্রামে। সম্প্রতি তিনি তাঁর ছেলে আবদুর রাফির (৭) পোকা লাগা একটি দাঁত তোলেন মফিজুলের চেম্বারে গিয়ে। এরপর ব্যাথা না কমার কারণে ২৬ আগস্ট আবার তাঁর চেম্বারে যান। তখন মফিজুল একটি সিরাপ দেন।এই সিরাপ খিচুনি রোগীদের প্রয়োগ করা হয়। এই সিরাপ সেবনের আধাঘণ্টার মধ্যেই শিশুটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সারাশরীর চুলকে আগুনে পোড়ার মতো ফোসকা পড়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় শিশুটির খাওয়া-দাওয়াও। এখনও শিশুটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন। শিশুটির চোখ ও কণ্ঠনালীর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।
এ কারণে শিশুর বাবা মামলা করলেন। তাঁর পক্ষে আদালতে মামলাটি উপস্থাপন করেন আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম বাবু। তিনি জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। আগামী ২৩ নভেম্বর এ ব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদারকে নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
এদিকে ঘটনার পর থেকে চেম্বার খোলেন না কথিত চিকিৎসক মফিজুল হক। ওই শিশুকে দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে দেখা গেছে, মফিজুল হকের নামের নিচে পদবী হিসেবে লেখা হয়েছে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল), এফটি, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ রেজিস্ট্রেশন নম্বর- ৭৬৫৩। অথচ তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেউ নন। বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ রেজিস্ট্রেশন নম্বরটিও ভূয়া। অনুষদ এ ধরনের কোন নিবন্ধন দেয় না।