নাজমুল হক, নওগাঁ থেকে :
রাজশাহীর, পুঠিয়ার, গন্ডগোহালী গ্রামের হোসনে আরা প্রান্তি (২০) নামের এক মেয়েকে হত্যার দায়ে ভাইকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাতে উপজেলার গণ্ডগোহালী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে হত্যার শিকার হোসনেয়ারা প্রান্তির নিজ ভাই নাসিম (১৮) কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায় এ বছরের ৪ মার্চ রাতে হোসনেয়ারা প্রান্তিকে মারধর করেন তার আপন ভাই নাসিম। এ সময় প্রান্তি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে আম গাছে ঝুলিয়ে রাখে তার ভাই। এরপর পুঠিয়া থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। এই বিষয়ে পুঠিয়া থানায় সে সময় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছিলো।
এদিকে প্রান্তির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসে পৌঁছে পুঠিয়া থানায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী প্রান্তিকে মারধর করে হত্যা করার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর নিহত হোসনেয়ারা প্রান্তির ভাই নাসিমকে গ্রেফতার করে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন পুঠিয়া থানা পুলিশ।
পৌর এলাকার আমজাদ হোসেনের, ছেলে নিহত হোসনেয়ারা প্রান্তির স্বামী জিয়ারুল ইসলাম তিনি অগ্রযাত্রা'কে বলেন, আমরা দুজনে প্রেম করে পালিয়ে কোর্টে বিয়ে করেছিলাম, সে সময় প্রান্তি দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। আমাদের বিয়ের বিষয়টি প্রান্তির পরিবারের কেউই মেনে নিয়েছিলেন না এবং আমাকে জামাই হিসেবেও মেনে নিয়েছিলেন না। আমার স্ত্রী প্রান্তি একাই মাঝেমধ্যে তার দাদার বাড়ির নাম করে, মায়ের সাথে দেখা করার জন্য, বাপের বাড়ি যেত। সে অনুযায়ী সেদিনও গিয়েছিলেন তার বাপের বাড়ি। শেষবার যখন আমার স্ত্রী বাপের বাড়ি যায়, তখন আমি শুনতে পাই সে মারা গেছে। আমি আমার স্ত্রীকে দেখতে যাওয়ার চেষ্টা করলে অনেকেই নিষেধ করেছিলেন কারণ সেখানে গেলে আমাকে মারধর করা হতে পারে এমন সম্ভাবনা ছিল। কারণ তারা আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন না। শেষবারের মতো, আমি আমার স্ত্রীর মরা মুখটাও দেখতেও পারিনি।
এ বিষয়ে আমাকে জড়ানোর চেষ্টাও করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষাপটে পুলিশ আমাকে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়ার্দী হোসেন অগ্রযাত্রাকে জানান, শুধু একজনকে গ্রেফতার করেছি। নিহতের আপন ভাই। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।