আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চারটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী দ্য হেগে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার পর আইসিজের প্রধান বিচারপতি আবদুল কাভি আহমেদ ইউসুফ সর্ববম্মতিক্রমে এ আদেশ ঘোষণা করেন।
যে চার আদেশ দিলেন আন্তর্জাতিক আদালত
>> মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধসহ গণহত্যার প্রচেষ্টা বা ষড়যন্ত্র না করার জন্য দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ।
>> রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে আগামী চার মাসের মধ্যে মিয়ানমারকে অবশ্যই প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। প্রথম প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রতি ছয় মাস পরপর একই ধরনের প্রতিবেদন আদালতের কাছে উপস্থাপন করতে হবে।
>> গাম্বিয়া ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় বিষয়ে আবেদন করতে পারবে।
>>মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব ধরনের নির্যাতন-নিপীড়নের প্রমাণাদি সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া, গণহত্যা সনদের ২নং ধারা অনুসারে রোহিঙ্গাদের বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছেন আন্তর্জাতিক আদালত।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে গত বছরের নভেম্বরে মামলা করে গাম্বিয়া। গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। গাম্বিয়ার পক্ষে মামলার শুনানিতে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন দেশটির নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি।
এর আগে, আদেশ ঘোষণার শুরুতে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার পক্ষে রোহিঙ্গা নিপীড়ন ও গণহত্যার যেসব আলামত আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেসব বিরোধের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি ইউসুফ।
সেসময় শুনানিতে মামলাকারী গাম্বিয়া রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যাতে আর কোনও ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ৫টি আদেশ চেয়েছিল।
বৃহস্পতিবার মামলার আদেশ ঘোষণায় জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালত বলেছেন, গণহত্যা সনদের ৪১ ধারার আওতায় তিনটি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশের শর্তসমূহ বিরাজ করছে। গাম্বিয়া সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর সুরক্ষায় অন্তর্বর্তী যেসব ব্যবস্থার আদেশ চেয়েছে সেগুলোর প্রথম তিনটির লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।