বিশেষ প্রতিবেদক :
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সব ধরনের সবজির। কেজিতে পাঁচ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে সবজিভেদে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পটল, চিচিঙ্গা, লাউ, বরবটি, ছোট করলা আর কাঁচা মরিচের দাম। একইসঙ্গে দাম বেড়েছে শাকের বাজারেও।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে মালের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন সবজির মৌসুম না হওয়ায় দাম বাড়তি রয়েছে।
অন্যদিকে, আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল, মসলা, চাল ও ডাল। একইসঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে সব ধরনের মাছ, মাংস, মুরগি ও ডিমের দাম।
১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কারওয়ান বাজার (খুচরা বাজার), কাঁঠালবাগান কাঁচা বাজার, গ্রিনরোড, হাতিরপুল বাজার, নিউমার্কেট ও পলাশি বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া যায়।
বসুন্ধরা আবাসিক এরিয়ার বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে পটল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, উস্তি ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে, লাউ ৫০টাকা থেকে ১০০টাকা।
কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গাজর বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। একইসঙ্গে টমেটো ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম (কালো) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম (সাদা) ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৮০ টাকা, নতুন আলু ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া আকারভেদে প্রতি পিস বাঁধাকপি-ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা
দাম বেড়েছে শাকের বাজারেও। প্রতি আঁটি (মোড়া) কচুশাক সাত থেকে ১০ টাকা, লালশাক ১০ টাকা, মুলাশাক ১২ টাকা, পালংশাক ১৫ টাকা, লাউশাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তবে ইলিশের দাম তুলনামূলক কম। আগের নিম্নমুখী দর রয়েছে বাজারগুলোতে। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১১০০ টাকা ও ৭৫০ গ্রাম ওজনের ৬০০ টাকা কেজি।
এছাড়া ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, কাচকি ৩০০ টাকা, মলা ৩৫০ টাকা, ছোট পুটি (তাজা) ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৪৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, বাগদা ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৩০০ থেজে ৪৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাতল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এসব বাজারে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে মাংস ও ডিম। প্রতি কেজি বয়লার ১৩০ টাকা, লেয়ার ২২০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৮০ টাকা ও সোনালি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, খাসি ৭৮০ টাকা ও বকরি ৭২০ টাকা কেজি দরে।
আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল, চাল ও মসলা। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা লিটার। খোলা সাদা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা লিটার। অপরিবর্তিত আছে সরিষা তেলের দরও।
এসব বাজারে বস্তা প্রতি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চিনিগুঁড়া চালের দর। বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ হাজার ২৫০ টাকায়।
মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪৫০ টাকা, মিনিকেট (পুরানো) দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৫৫০ টাকা, আটাশ চাল এক হাজার ৮৫০ টাকা ও বিভিন্ন প্রকার নাজিরশাইল চাল দুই হাজার ২৫০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা বস্তা।
এসব বাজারে এলাচি বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৬০০ থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে। অথচ এক/দেড় মাস আগে এই এলাচি বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ৭০০ থেকে তিন হাজার টাকা কেজি।
বর্তমানে জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা কেজি। এর আগে জয়ত্রী বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা কেজি। একইসঙ্গে জায়ফল গত দেড় মাসে দ্বিগুণ বেড়ে বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এর আগে জায়ফল বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা কেজি।
সবজির বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে রয়েছে ভিন্নমত। আনোয়ারা বেগম নামে কাঁঠালবাগান বাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসায়ীরা কারণে-অকারণে সজির দাম নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করেন। বেশি মুনাফার আশায় দাম বাড়তি রাখেন প্রতিনিয়ত।
তবে তার কথার সঙ্গে একমত নন হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা সুমন। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এখন অনেক সবজির মৌসুম না। এ কারণে সেগুলোর দাম বাড়তি। এছাড়া পাইকারি বাজারে মালের সরবরাহ কম থাকলে দাম বাড়তি হয়। কাঁচামালের বাজার প্রতিনিয়ত দাম ওঠা-নামা করে।