আনোয়ার হোসেন,রংপুর থেকে :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ০৯/০৩/১৪ হতে ১৪/১২/১৫ পর্যন্ত সময়ের প্রাপ্য টাইমস্কেল প্রদানের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত ০৩/৬/২০২১ তারিখের ১৯৮ নং পত্রটি ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত ১০/১১/২০২১ তারিখে ১১০৫নং পত্রটি জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর করার এক দফা দাবি।
লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশের হাজার সমস্যার মধ্যেও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে এদেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেন এবং প্রায় দেড় লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষককে সরকারি কর্মচারি মর্যাদা দেন। জাতির জনক সেদিন কোটি কোটি নিরক্ষর দারিদ্র-নিপীড়িত জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার মাধ্যমে জনসম্পদে পরিণত করার প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
শুধু তাই নয় তিনি ডঃ কুদরত ই খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করে একটি যুগোপযোগী শিক্ষা নীতি ও উপহার দিয়েছিলেন এবং ১৯৮৩ সালের এই মধ্যে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ ছিল।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে দীর্ঘ ৩৮ বছর পর বর্তমান সরকার গৃহীত শিক্ষানীতিতে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হলেও তা এখনও কার্যকর হয় নাই বলে জানান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণ। আরো অবহিত আছেন যে, শিক্ষা কর্মকাণ্ড আবর্তিত হয় চারটি উপাদানের উপর।
১। শিক্ষক, ২ ।শিক্ষার্থী, ৩। পাঠ্যপুস্তক বা কারিকুলাম ৪। বিদ্যালয় ।
বর্তমানে সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি প্রদান করেছেন মেয়েদের জন্য ডিগ্রি পর্যন্ত বিনা বেতনে শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন। বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দিচ্ছেন এবং পি ডিপি ৪ এর মাধ্যমে বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর উন্নয়ন করছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষকদের অবজ্ঞা অবমূল্যায়ন করে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে কি আদৌ সম্ভব? প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের নির্মম পরিণতির শিকার হয়েছেন বলে জানান তারা।
সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো সেটা প্রফেশনের পরিপন্থী ও মর্যাদার সাথে প্রহসন বলে মনে করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে শিক্ষা পক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষকদের ক্ষুধার্ত রেখে আমরা শ্রেণিকক্ষে ভালো পাঠদান আশা করতে পারি না! এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব মহোদয় কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিলেও তার কোনো ইতিবাচক প্রতিফলন আমরা এখন পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি না।
আমরা প্রাথমিক শিক্ষক গণ আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ দেশে প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়ন অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করছি। বাড়তি জনবল ছাড়াই আমরা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় আগত ১০ বছর যাবৎ দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে আসছি। যার পাশের হার প্রায় ৯৮% ইতিমধ্যেই আমরা বিদ্যালয়ে গমনোযোগী শতভাগ শিশুর ভর্তি নিশ্চিত করেছি। প্রাথমিক শিক্ষা স্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট ও কর্মকর্তাদের সামাজিক মর্যাদা, যুক্ত সংগত বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার স্বার্থেই অপরিহার্য। প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন তথা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে টাইমস্কেল বঞ্চিত প্রধান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সুপারিশ প্রদান করছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা।
১। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ৯/৩/১৪ হতে ১৪/১২/১৫ পর্যন্ত সময়ের প্রাপ্য টাইমস্কেল মজুরি প্রদানের বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারীকৃত ০৩/০৬/২০২০ তারিখের ১৯৮ নং পত্রটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক জারিকৃত ১০/১১/২০২১ তারিখের ১১০৫ নং পত্রটি জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর করে টাইমস্কেল প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছেন।