মেজর পরিচয়ে চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণায় গ্রেফতার ৫

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক :
মেজর পরিচয়ে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের ৫ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

সেনাবাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এই চক্রের আরেকজন মূল হোতাও নিজেকে পরিচয় দিতেন মেজর হিসেবে। জানা গেছে, সচিবালয়েও ছিল তাদের যাতায়াত। সেই সাথে, বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরিয়ে তারা চাকরি প্রত্যাশীদের হাতে ধরিয়ে দিতেন ভুয়া নিয়োগপত্র।

একই চক্রের কাছে এভাবে তিন তিনবার প্রতারণার শিকার হয়েছে মেহেদুল ইসলাম। তিলতিল করে বাবার জমানো অর্থ এই চক্রের হাতে তুলে দিয়েছিলেন একটি চাকরির আশায়। নানা অযুহাতে ফের টাকা চাইলে বিক্রি করেন জমি, গাছ। সেই সাথে, ঠাকা জোগাড় করতে তিনি ধারও করেন স্বজনদের কাছে। সচিবালয়ের অভ্যর্থনা কক্ষে তাকে বসিয়ে রেখে হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া দু’জন। এরপর চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে মেহেদুল বুঝতে পারেন যে, প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েছেন তিনি।

ভাড়া গাড়িতে চড়ে মেজর সাজতেন শরিয়তপুরের ইব্রাহীম খলিল। চুক্তি অনুযায়ী চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে নগদ টাকা গ্রহণ করতো তার ছোট ভাই সাইফুল। অবসরে যাওয়া সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট আব্দুল জলিল শিকদারের কাজ ছিল চাকরিপ্রত্যাশী সংগ্রহ করা। এ কাজে নানা সহযোগিতা করতো রাজু ও সাগর নামে আরও দু’জন।

সরকারি কাজের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে চক্রটির সাথে কারা যুক্ত তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দা পুলিশ। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম বলেন, অনেকেরই মন্ত্রণালয়ে পরিচিত থাকতে পারে। চাকরি প্রত্যাশীদের গেটের বাইরে রেখে এইসব চক্রের সদস্যরা রুমের ভেতর থেকে ঘুরে আসে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য। এই লোকগুলোকে খুঁজে বের করতে পারলে অবশ্যই আমরা আইনের আওতায় আনবো।

চাকরি দেয়ার নামে এমন প্রতারণা বন্ধ না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, চাকরির বাজারে অনেকেই আছেন বেকার। অনেকের মাঝেই ধারণা আছে যে, দালাল না ধরলে, টাকাপয়সা না দিলে হয়তো চাকরি হবে না। কিন্তু যারাই দালাল ধরেছেন ও টাকা দিয়েছেন, তারাই প্রতারিত হয়েছেন।

পুলিশ বলছে অনেক চাকরীপ্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষা এড়িয়ে সহজে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেন। তাদেরই টার্গেট করে প্রতারক চক্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.