ফেনীতে ট্রাফিক পুলিশের টোকেন চাঁদাবাজীর শীর্ষে সার্জেন্ট জলিল আর রফিকের নাম

অপরাধ

মাসিক টোকেন চাঁদাবাজীর কারণে সিএনজির মালিকরা রেজিঃ নবায়নে অনীহা সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

এম শাহীন আলম :
কথায় বলে পুলিশ জনগণের বন্ধু কিন্তু অসৎ কিছু পুলিশের কারণে পুরো পুলিশ জাতিকে এর দায় নিতে হয়। যেমনটি ফেনীর ট্রাফিক পুলিশের মাসিক টোকেন চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ট জেলার বিভিন্ন রোডে চলাচলকারী ছোট বড় যানবাহনের চালকরা। অন্য দিকে পুলিশের মাসিক টোকেন চাঁদাবাজীর কারনে সিএনজি’র মালিকরা গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে অনীহায় সরকার হারাচ্ছে চলমান রাজস্ব। সিএনজি ড্রাইভার মালিকদের ভাষ্য হলো তাদের গাড়ির কাগজপত্র থাকলেও ট্রাফিক পুলিশকে মাসিক টোকেনে ৫০০-১০০০টাকা দিতে হয় আর কাগজপত্র না থাকলেও মাসিক টাকা দিয়েই গাড়ি চালাতে হয়,যার কারনে তারা গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে নারাজ। সিএনজি গাড়ির বেশ কয়েকজন ড্রাইভারদের সাথে কথা বললে তারা জানান, তারা প্রতি মাসে যেহেতু ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে তাহলে কাগজের কি প্রয়োজন।

সরেজমিনে অনুসন্ধান কালে জানা যায়, ফেনী পৌর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যগণকে ডিউটিরত অবস্থায় দেখা যায়। এ সময়ের মধ্যে কিছু সংখ্যক অসাদু ট্রাফিক পুলিশের টিআই ও সার্জেন্ট সদস্যরা তাদের নিজেদের আখের গোছানোর জন্য শহরে চলাচলকারী যানবাহনে চালকদের বিভিন্নভাবে বেকায়দায় ফেলে প্রতিদিন প্রকাশ্যে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এসব হয়রানীর সাথে ফেনী জেলার ট্রাফিক পুলিশের টিআই সার্জেন্টদের সহযোগিতা করে আসছে তথা কথিত সোর্স নামে দালালরা।পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়গুলোতে ট্রাফিক পুলিশের টিআই সার্জেন্টের নির্দেশে রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ী আটক করে জোর পূর্বক গাড়ি চালকদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কাগজপত্র নিয়ে আসা বিষয়ে বহু অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া প্রতিদিনের ন্যায় অভিনব কায়দায় হুমকি দমকি দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী টাকা নেওয়ার মহা-উৎসব এভাবে চলেছে প্রতিনিয়ত। আরো জানা যায়, চালকরা যখন টাকা না দিয়ে প্রতিবাদ করে তাৎক্ষনিক চালকদের গায়ে লাঠি চার্জ করে তাদের আহত করার মতোও ঘটনা ঘটে। এছাড়াও সোর্স নামের লেওয়ারা যখন গাড়ি থামানোর জন্য গাড়ি সংকেত দেয় যদি তখন গাড়ি চালকরা গাড়ি না থামায়, তখন তারা তাদের হাতের লাঠি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাংচুরসহ চালকদের শরীরে হাত তোলতে দ্বিধাবোধ করে না বলে জানা যায়। তখন তাদের আচরণে তাৎক্ষনিক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মতই ব্যাপারটি মনে হয়। জানা যায়,এসব হয়রানীর ব্যাপারে যদি কোন চালক প্রতিবাদ করতে যায় তখন তাকে অহেতুক ট্রাফিক পুলিশের টিআই সার্জেন্টরা তার গাড়ির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা জরিয়ে দেয়। এই কারণে বেশির ভাগ চালকরাই বাধ্য হয়ে কোন প্রকার বাড়াবাড়ি না করে আপোষের মাধ্যমে টাকা দিয়ে ট্রাফিক পুলিশ টিআই সার্জেন্টদের কাছ থেকে রক্ষা পায়। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ফেনী পৌর এলাকার বিশেষ করে মহিপাল এলাকার চার পাশে, ট্রাঙ্ক রোডের এসএসকে রোড দোয়েল চত্তর, ফেনী ছাগলনাইয়া রোডের সদর হাসপাতাল মোড়, সালাউদ্দিন মোড় এই পাঁচটি পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের প্রতিদিনের রুটিন মাফিক গাড়ির রিক্যুজেশনের নামে হয়রানী এবং চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ফেনী শহরে চলাচলাকারি বিশেষ করে ছোট এবং মাঝারি ধরনের যানবাহনের চালকরা।

এছাড়া শহরে চলাচলরত প্রতিটি সিএনজি থেকে মাসিক ৫০০-১০০০ টাকা টোকেন চাঁদাবাজী তো আছেই। সরেজমিনে অনুসন্ধানে এসব চাঁদাজির সাথে জরিত থাকা ট্রাফিক পুলিশের কিছু অফিসারের নাম উঠে এসেছে তাদের মধ্যে অন্যতম সার্জেন্ট জলিল এবং সার্জেন্ট রফিক এর নাম। সরেজমিনে অনুসন্ধানকালে জানা যায় সার্জেন্ট জলিল গত কয়েক বছর আগেও ফেনী ট্রাফিক বিভাগে কয়েক বছর ছিলেন,তার মাঝে বছর খানেক অন্যত্রে বদলি হয়ে চলে যান,পুনরায় তদবির চালিয়ে ফেনী ট্রাফিক বিভাগে জয়েন্ট করেই বেপরোয়া টোকেন চাঁদাবাজি শুরু করেন।যা ফেনী চলাচলকারী সকল যানবাহনের চালকদের মুখে মুখে।
এছাড়াও অনুসন্ধানে পুলিশের টোকেন চাঁদাবাজির সাথে জড়িত কিছু সাংবাদিক নামধারী দালালদের নামও বলেন সিএনজি চালকরা।

ফেনীতে চলাচলরত যানবাহনের সংশ্লিষ্টরা জানান,আগের টিআই ওয়ান (এডমিন)মোটামোটি ভালোই ছিলেন কিন্তু বর্তমান টিআই এডমিন আনোয়ারুল আজীম মজুমদার ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সারা ফেনীতে সিএনজিতে বেপরোয়া টোকেন চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে এখনো পর্যন্ত চলছে একটি সিএনজিও পাবেন না ট্রাফিক পুলিশের মাসিক টোকেন ছাড়া বর্তমান টিআই এডমিন টাকা ছাড়া মনে হয় কিছুই বুঝেন না তিনি,মাসিক টোকেন থাকলে গাড়ির কাগজপত্র না থাকলেও বেশি একটা সমস্যা হয়না।সিএনজি চালকরা জানান,শহরের প্রতিটি সিএনজি গাড়িতে মাসিক ৫০০টাকা টোকেন চাঁদা দিতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে আর যারা শহরের বাহির থেকে আসা যাওয়া করে তারা দিতে হয় মাসিক ১০০০ টাকা টোকেন।সিএনজি চালকদের ভাষ্য হলো ফেনীতে যে কোন রোডে সিএনজি চালাতে হলে ট্রাফিক পুলিশকে মাসিক টোকেন দিয়েই চালাতে হয়।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, ট্রাফিক সার্জেন্ট জলিল এবং রফিক ফেনীর বিভিন্ন গেরেজ গিয়ে মালিকদের সাথে রফা করে মাসিক টোকেনের টাকা আদায় করে এবং মালিকরাও সার্জেন্ট জলিল এবং রফিকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে মাসিক টোকেনের টাকা দিয়ে থাকে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় সিএনজি কিংবা ছোট বড় যানবাহনের মালিক শ্রমিক ভুঁইফোড় সংগঠনের নামেও মাসিক টোকেন চাঁদাবাজির টাকা উত্তোলন করা হয় বলে সিএনজি চালকরা জানান।

এই রিপোর্ট লেখার আগে ফেনী শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে বেশ কয়েকদিন যাবৎ যাত্রী বেশে ঘুরে ঘুরে বহু ভুক্তভোগি সিএনজি চালকদের সাথে কথা বললে ট্রাফিক পুলিশের মাসিক টোকেন চাঁদাবাজি সহ রিক্যুজেশনের নামে হয়রানির চাঞ্ছল্যকর তথ্য উঠে আসে, গত সপ্তাহে সদর হাসপাতাল মোড়ে হানিফ নামের এক সিএনজি চালক দৈনিক বাংলা খবর’কে জানান, তিনি সদর হাসপাতাল মোড় থেকে মহিপালের দিকে গাড়ীতে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিলেন, ট্রাঙ্ক রোডে আসলে ট্রাফিক পুলিশ গাড়ী সিগন্যাল দিয়ে থামিয়ে কাগজপত্র চেকের পাশাপাশি মাসিক টোকেন আছে কিনা জিগাস করে তখন আমার কাছে মাসিক টোকেন না থাকায় গাড়ী থেকে যাত্রী নামিয়ে ফেনী সদর মডেল থানা সংলগ্ন ট্রাফিক অফিসের সামনে গাড়িটি নিয়ে যায় এবং আমাকে ট্রাফিকের সাথে থাকা দালালরা বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবী করে। আমি দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আমার গাড়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা দিবে বলে হুমকি দমকি দিতে থাকে। তারপর আমি আমার গাড়ীর মালিককে বিষয়টি অবগত করি। তখন তিনি ট্রাফিক পুলিশের এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানায়, গাড়ী ট্রাফিক অফিসে আছে, ঐ জায়গা থেকে জরিমানা দিয়ে নিয়ে আসেন। গাড়িটির মালিক পুলিশকে কে জিজ্ঞেস করে, আমার গাড়ীর অপরাধ কি, আমার তো সব কাগজপত্রই ঠিক আছে, তাহলে আমার গাড়ী আটক করলেন কেন? এর জবাবে তিনি জানান, এখন এত কথার উত্তর দেওয়ার সময় নেই, গাড়ী এভাবে ছাড়া যাবে না, গাড়ী ট্রাফিক অফিস থেকে নিয়ে আসেন। গত কয়েকদিন আগে দুপুর দিকে মহিপাল বক্সের সামনে রফিক নামের এক সিএনজি চালক জানান,আমার মাসিক টোকেন আছে প্রতিমাসে আমি ট্রাফিক পুলিশকে ১ হাজার টাকা করে দেই তারপরও আমার গাড়িটা আটক রেখে আমাকে ৩০০০ টাকা জরিমানা দেওয়ার জন্য বলে ট্রাফিকের এক সার্জেন্ট। তখন আমার কাছে এত টাকা না থাকায় আমি আমার পরিচিত এক সাংবাদিক ভাইকে ফোন দেই, তিনি তাৎক্ষনিক সার্জেন্ট কে ফোন দেন, তাদের দুইজনের কথা বলার পর সার্জেন্ট আমাকে জানায়, যেই ফোন দেক না কেন, জরিমানা না দিয়ে গাড়ী ছাড়া হবে না। তখন আমি বলি, স্যার আমার কাছে তো এত টাকা নেই, তখন সে আমাকে বলে গাড়ি নিতে হলে কমপক্ষে ৫০০ টাকা লাগবে। তখন আমি তাও দিতে না পারায় দালাল দিয়ে আমার পকেট চেক করে ৩৩০ টাকা পায়। তখন এই ৩৩০ টাকা রেখে আমার গাড়ী ছেড়ে দেয়। এরপর হুমকি দেয়- এব্যাপার যদি সাংবাদিক কে আবার জানাও তাহলে তোমার খবর আছে। এই কথা বলার পর আমি এই ঘটনার বিষয়টি আজ আপনার কাছে প্রকাশ করলাম।

আরও কয়েকজন সিএনজি চালক জানায়, একটি গাড়ি রোডে ট্রাফিক পুলিশে ধরলে কমপক্ষে ২/৩ হাজার টাকা দিতে হয় তাদের। আর যদি গাড়ি ট্রাফিক অফিসে নিয়ে যায় তাহলে ৩/৫ হাজার তো দিতেই হয়। চালকরা জানায়, পেটের দায়ে গাড়ি চালাই, যেভাবে ট্রাফিক পুলিশী হয়রানীর শিকার হতে হয় মন চায় গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেই। তারপরও নিরুপায় হয়ে গাড়ি চালাতে হয়। সিএনজি চালকরা আরো জানায়,ফেনী শহরে গাড়ী নিয়ে ঢোকার অনুমতি থাকলেও বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে ট্রাফিক পুলিশকে নির্দিষ্ট হারে মাসিক টোকেন চাঁদা দিতে হয়। তারা আরো জানায়, যে সব গাড়িতে মাসিক টোকেন পাওয়া না যায় গাড়ী ট্রাফিক অফিসে নিয়ে যায় এবং আটক রেখে প্রায়ই গাড়ী বিনা রশিদে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা রেখে গাড়ীগুলো ছেড়ে দিয়ে মাসিক টোকেন করার পরামর্শ দেয়া হয়।

সোজা কথা বললে চলে মাসিক টোকেন থাকলে সব কিছু বৈধ হয়ে যায় গাড়ির কাগজপত্র না থাকলেও বেশি একটা সমস্যা হয় না। সাধারণ মানুষের অভিযোগ আয়োতনের দিক থেকে ফেনী ছোট্র একটা শহর যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা নাজুক। রাস্তায় নামলে দেখা যায় ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনের নামে তারা যানবাহনের চালকদের কারণে অকারণে প্রতিনিয়ত হয়রানী করে আসছে। এই হয়রানী থেকে চালক এবং যাত্রীরা পরিত্রাণ চায় এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ফেনী জেলাটি ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়ক এবং ফেনী নোয়াখালী আঞ্চলিক মহা সড়ক হওয়াতে জেলার বিভিন্ন থানা থেকে সরকারী, বেসরকারি হাসপাতাল রেজিস্ট্রি অফিস,পাসপোর্ট অফিস,কোর্ট কাছারি হওয়ায় বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে এই ফেনী শহরে মানুষদের গাড়িতে করে আসতে হয় কিন্তু গাড়িগুলো যাত্রী বা মালামাল নামিয়ে তাদের গন্তব্যে যাত্রার পথে যদি কোন অবস্থায় ট্রাফিক পুলিশের সামনে পড়ে যায় তখন ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি গুলো আটক রেখে একাধিক মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় টাকা। তাৎক্ষনিক টাকা না দিলে গাড়িগুলোকে একাধিক মামলায় জরিয়ে দেওয়ার মতো দৃশ্য প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করার মতো, আর যদি কোন গাড়ির নাম্বার না থাকে তাহলো তো কথাই নেই। আল্লাহর ৩০ দিনই ট্রাফিক পুলিশের চাহিদা মতো চালকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের মহা উৎসব চলে মহিপাল ট্রাফিক বক্সে, যা দেখার কেউ নেই। আর টাকা না দিলে সোজা ট্রাফিক অফিসে গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। অযথা আর রেকার বিলের নামে যে কি পরিমাণ যানবাহনের সংশ্লিষ্টদের হয়রানি করা হয় এই বিষয়ে প্রমাণ দেখতে হলে ফেনী শহরের মহিপাল ট্রাফিক পুলিশ বক্সে,ট্রাঙ্ক রোড আর সদর হাসপাতাল মোড় এলাকায় দাঁড়িয়ে এই রকম অহরহ হয়রানীর দৃশ্য দেখা যায়।

টোকেন চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চেয়ে ফেনী জেলা ট্রাফিক বিভাগের টিআই এডমিন আনোয়ারুল আজীম মজুমদারের সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইলে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে যতদিন টোকেন চাঁদাবাজি বন্ধ না হবে ততদিন ধারাবাহিক ভাবে নিউজ চলমান থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.