সুচিত্রা রায় :
কাল ২৬ মার্চ,মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এ দিবসে জাতির বীর সন্তান একাত্তরের মহান শহীদদের শ্রদ্ধা-ভরে স্মরণ করবে গোটা জাতি। তাই সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। দিবসকে ঘিরে পুরো এলাকা সাজানো হয়েছে নতুন আঙ্গিকে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৈরি করা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়।
সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে ১২ টার সময় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তা নিশ্চিততে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা জেলার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো: আসাদুজ্জামান।
তিনি জানান,২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভোর বেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং ভুটানের রাজা স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসবেন। এসময় স্মৃতিসৌধের মেইন গেটসহ তার আশপাশে,ওই সময় সাধারণ দর্শনার্থীরা থাকতে পারবেন না৷ তবে উনারা চলে যাওয়ার পরে সর্ব-সাধারণের জন্য এটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
এসময় ঢাকা জেলার এসপি মো: আসাদুজ্জামান বলেন,স্বাধীনতা দিবস-কে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস-কে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সকল ধরনের ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। নিরাপত্তার খাতিরে বহিরাগতদের ভেতরে ঢুকা এখন থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া নিরাপত্তা বেষ্টিত এলাকায় কারা কারা অবস্থান করছেন সেটা প্রযুক্তির মাধ্যমে চিহ্নিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিভিল পোশাকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করছেন,সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পুলিশ সদস্য এই মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিরাপত্তায় কাজ করবে। এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় রাখা হয়েছে স্পেশাল ব্যবস্থা,যেন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রকার অসঙ্গতি না থাকে,সে বিষয়ে দেয়া হয়েছে ট্রাফিক বিভাগ-কে বিশেষ নির্দেশনা।
উক্ত বিষয়ে ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য ও আশুলিয়া থানা আওয়ামী-লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সেই সঙ্গে দেশের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ সাধারণ মানুষও আসবেন। সেই লক্ষ্যে পুরো সাভার উপজেলা,বিশেষ করে স্মৃতিসৌধ এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়া স্মৃতিসৌধ ঘুরে দেখা যায়,১০৮ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকা নতুন করে সেজেছে। নানা রঙের ফুলের চাদরে প্রায় ঢেকে ফেলা হয়েছে স্মৃতিসৌধের সবুজ চত্বর। চত্বরের সিঁড়িসহ নানা স্থাপনায় পড়েছে তুলির আঁচড়। ধুয়ে মুছে চকচকে করা হয়েছে, সৌধচূড়া থেকে হেঁটে যাওয়ার পথসহ (হেরিংবন্ড) স্মৃতিসৌধ চত্বরের প্রতিটি স্থাপনা। শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো গাছগুলো ছেঁটে পরিপাটি করে তোলা হয়েছে। বসানো হয়েছে নানা রঙের ফুলের টব।
এছাড়াও স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে বঙ্গবন্ধু,রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি বসানো হয়েছে। সৌধ চত্বরের চারপাশে কয়েকশ টবে শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের ফুল আর পাতা বাহারের গাছ। স্মৃতিসৌধ এলাকার প্রস্তুতি সম্পর্কে জাতীয় স্মৃতিসৌধের গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আমরা গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা এবং সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন করেছি। পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষায় সিসিটিভি স্থাপনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আবদুল্লাহিল কাফী,সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ,আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ,তদন্ত ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান, ইন্টেলিজেন্ট ওসি মিজানুর রহমান ও ঢাকা জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ প্রমুখ।