সখিপুর (টাঙ্গাইল) থেকে :
টাঙ্গাইলের সখিপুরে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ও পাকা সড়কের এক পাশে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। কমপক্ষে ৫ বছর ধরে উপজেলার বনবিভাগের বহেড়াতৈলী রেঞ্জের এমএমচালা বিট কার্যালয়ের পাশে বনাঞ্চলের একাধিক স্থানে এ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে বন বিভাগ ও সখিপুর পৌরসভার মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। পাকা সড়কের ওপরে ও সংরক্ষিত বন এলাকায় ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
স্থানীয় বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বনবিভাগের বহেড়াতৈলী রেঞ্জের এমএমচালা বিট কার্যালয় থেকে মাত্র ২০০ গজ দক্ষিণে সখিপুর-মহানন্দপুর পাকা সড়কের এক পাশে ও বনাঞ্চলের ভেতর বিভিন্ন স্থানে পৌরসভার গাড়ি দিয়ে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। প্রায় তিন বছর ধরে এ বর্জ্য ফেলার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। মশা-মাছির উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। দুর্গন্ধে পাশের এলাকায় মানুষের বসবাস অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
ময়লার ভাগাড়ের পাশের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, কমপক্ষে পাঁচ বছর ধরে এই স্থানে পৌরসভা ময়লা ফেলছে। দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা দায়। আমরা গরিব মানুষ দুর্গন্ধ সহ্য করে চলছি। কাউকে কিছু বলতে পারছি না। স্থানীয়রা জানান, এই স্থান দিয়ে যেতে দুর্গন্ধে নাক চেপে ধরে সড়ক পার হতে হয়।
ময়লা ফেলার ২০০ গজ দূরে বনবিভাগের এমএমচালা বিট কার্যালয়। বিট কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভাকে বার বার বলার পরও আমাদের কথার কোনো কর্ণপাত করছে না। সামাজিক বনায়নের ভেতরেও ট্রাক ঢুকে গোপনে ময়লার ফেলে যায়। তিনি নিজে ময়লার ট্রাক কয়েকদিন ধরেছেন জানিয়ে এ কর্মকর্তা জানান, মেয়র সাব আর ফেলবেন না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রাখেননি।
বহেড়াতৈলী রেঞ্জ কর্মকর্তা হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, পৌরসভার মেয়রকে বনাঞ্চলে ও সড়কের পাশে ময়লা না ফেলার জন্য বহুবার অনুরোধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জহিরুল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট এরিয়ার রেঞ্জ কর্মকর্তা এবং বিট কর্মকর্তা তাকে অবগত করেছেন। ময়লা-আবর্জনা বা বর্জ্য বন ও আশপাশের এলাকায় ফেলার কারণে বনের পরিবেশ দূষিত হবে। এছাড়াও ওই বর্জ্যে অপচনশীল প্লাস্টিক ও পলিথিন থাকায় সেগুলোও পরিবেশের জন্য হুমকি। এছাড়াও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওই এলাকার মেয়র সাহেব কথা না শুনলে এ বিষয়ে আমরা বন পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হবো।
এ বিষয়ে সখিপুর পৌরসভার মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ বলেন, ময়লা ফেলার জন্য ভিন্ন একটি জায়গা খোঁজা হচ্ছে। আশাবাদী দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।