এম শাহীন আলম :
আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকায় বিনা ওয়ারেন্টে কোন প্রকার মাদক দ্রব্য কিংবা অবৈধ কিছু না পেয়েও এক মাদক কারবারির বাসায় ঢুকে মাদক কারবারিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন(ব্ল্যাকমেইল)করে ডাকাতি স্টাইলে স্বর্ণালংকার সহ নগদ ৫২ হাজার টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক জোহাব আলীর ও তাঁর সোর্সদের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে জানা যায়, গত ১৭ ই ডিসেম্বর -২০২৩ ইং তারিখ আনুমানিক বিকাল ৪ টার দিকে আশুলিয়া থানার ভাদাইল কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় একটি প্রাইভেটকারে করে পুলিশের পোষাক পরিহিত অবস্থায় কয়েকজন সোর্স নিয়ে আরিফ নামের এক মাদক কারবারির ভাড়া বাসায় ডাকাতি স্টাইলে অভিযান চালান এস আই জোহাব আলী ও পুলিশের সোর্স নামের কয়েকজন দালাল।
এ ঘটনার সময়ে ওই মাদক কারবারির ঘরে বিনা ওয়ারেন্টে তল্লাশীর নামে বিছানার তোশকের ভিতর থেকে নগদ ৩২ হাজার টাকা ও আলমারির ড্রয়ার ভেঙ্গে ১ জোড়া নুপুর ও স্বর্ণের দুল নিয়ে যান তারা। ঘটনার স্হলে তাৎক্ষণিক মাদক কারবারি আরিফ’কে এস আই জোহাব আলীর ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আরো ২ লাখ টাকা দাবি করেন এস আই জোহাব আলী, পরে আরিফের স্ত্রী কোন উপায় না পেয়ে তাৎক্ষনিক নগদ বিশ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় আরিফ’কে।
আরো জানা যায়,এলাকায় ঘটনাটি জানা জানি হলে আবারও সেদিন গভীর রাতে একজন কনেস্টবল সহ মাদক কারবারি আরিফের বাসায় যান এস আই জোহাব আলী। বাসায় গিয়ে আরিফের স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে গাড়ির ভিতর প্রায় বিশ মিনিট বুঝান এবং যা হবার তা হয়ে গেছে এ নিয়ে যেন আর বারাবাড়ি না করেন তারা। ঔ রাতে এস আই জোহাব আলী বিভিন্ন হুমকি দমকির সুরে ভয়ভীতিতে কথাবার্তাও বলেন এমনটাই অভিযোগ করেছেন মাদক কারবারি আরিফ।
এসব বিষয়ে জানতে এস আই জোহাব আলীকে মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি সরাসরি দেখা করার কথা বলেন আমাকে পরদিন ১৮ ই ডিসেম্বর সংবাদকর্মীগণ সরাসরি দেখা করে জানতে চাইলে এস আই জোহাব সংবাদকর্মীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কি জানতে চান বলেন, আমি কোন সাংবাদিকের ধার ধারি না এবং কোন সাংবাদিককে টাকা পয়সা দেইনা। আমি ওই মাদক কারবারির কাছে থেকে বিশ হাজার টাকা নিয়েছি এটা সত্য এখন আমার বিরুদ্ধে নিউজ করলে করতে পারেন তাতে আমার কোন কিছু যায় আসবেনা, আমি উত্তরবঙ্গের ছেলে আমার বাড়ি সৈয়দপুর ঢাকা জেলার এস পি আমার নিকটতম আত্মীয়, দেখেন না এর আগেও আশুলিয়া থানায় কয়েক বছর ছিলাম, আবার কয়েকমাস না যেতেই ফিরে আবার আশুলিয়া থানায় আসছি,আমার হাত কোথায় এখন অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন বলে আমার পকেটে জোর পূর্বক দস্তাদস্তি করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায় এস আই জোহাব আলী।
এস আই জোহাব আলী জানান,আপনাকে তেল খরচ আর নাস্তা করার জন্য সৌজন্যতা বোধ দেখাচ্ছি এরকম দুই চারটা নিউজ করলে আমার কিছুই হবে না আমাকে বদলি করতে হলে এসপি’র পারমিশন লাগবে। যেখানে এসপি আমার লোক সেখানে ওসি আমার কি করবে, ওসির কি সেই ক্ষমতা আছে এসপি’র অনুমতি ছাড়া বদলি করার। তিনি পুনরায় বলেন, আপনাদের হয়তো জানা নেই আমি এর আগেও আশুলিয়া থানায় ছিলাম এবং আমাকে বদলি করা হয়েছিল কিন্তু ছয় মাস যেতে না যেতেই আমি আবার আশুলিয়া থানায় চলে আসছি, এখন আমার দুই বছর চলে কেউ সরাতে পারেনি তাহলে বুঝেন আমার ক্ষমতা কতদূর, কত উপরে আমার হাত আছে তাছাড়া আমার যা কিছু ভালো মন্দ করার এসপি স্যার করেন।
স্হানীয় এলাকার মানুষের বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, এস আই জোহাবের সাথে যে সকল সোর্স নামের দালালরা কাজ করেন তাদের অধিকাংশই মাদক মামলার আসামি। তার মধ্যে উল্লেখিত কয়েজন সোর্স হলো আরিফ,কামাল ও শিপন সহ বেশ কয়েকজন যারা নিজেরাই অনেক সময় পুলিশের ভয় দেখিয়ে মানুষকে ব্ল্যাক মেইল করেন। নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, কিছুদিন পূর্বেও আশুলিয়া থানাধীন কবিরপুর এলাকায় এক মাদক কারবারিকে ৪ কেজি গাঁজা সহ আটক করেন আশুলিয়া থানার এক এস আই সাথে ছিলেন সোর্স শিপন তাকেও মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন তারা এবং চার কেজি গাঁজার মধ্যে দুই কেজি গাঁজা কাঁইচাবাড়ি এলাকায় এক মাদক ব্যাবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন এস আই জোহাবের বিশ্বস্হ সোর্স শিপন।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বক্তবের জন্য আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এ এফ এম সায়েদ কে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। এবং সাভার সার্কেল এসপি মোঃ সহিদুল্লাহ’কে উপরোক্ত বিষয়ে অবগত করলে তিনি সাংবাদিকদের সংখ্যা বেশি হেনতেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমালোচনা শুরু করে বলেন একজন বলবে আমার কাছ থেকে টাকা নিছে এটা বললেই কি হবে। তিনি জানান, এসআই জোহাব আলীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তার (সার্কেল এসপি’র)কাছে লিখিত অভিযোগ করার সাংবাদিককে পরামর্শ দেন,লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্হা নেবেন বলে জানান। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে আরো বিস্তারিত পরের সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।