বিশেষ প্রতিবেদক :
দীর্ঘ ৬৩ দিনের সমুদ্র অবরোধ শেষ হতে বাকী আর মাত্র ১ দিন। রুপালি ইলিশের বাড়ি বরগুনা জেলার জেলেরা দিবে সাগর পাড়ি। গভীর সাগরে আবার ছুটবে শত সহস্র ফিশিং বোট। ব্যস্ত হবে আবার জেলার সবচেয়ে বড় মৎস আহরন কেন্দ্র পাথরঘাটা বিএফডিসি মার্কেট। কাকডাকা ভোর থেকে ঝুড়ির পর ঝুড়ি শ্রমিকের মাথায় বয়ে আনা ইলিশের স্তুপে ভরে উঠবে মার্কেটের ভিতর থেকে রাস্তা পর্যন্ত। পাইকারের গুঞ্জন আর আড়ৎদারের দাম হাকানো ডাকে কোলাহলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে দুই মাস ধরে বন্ধ থাকা ঘুমিয়ে থাকা বিএফডিসি। লাইনের পর লাইন ট্রাক পিকআপ দাড়িয়ে থাকবে মাছ নিয়ে ঢাকা, খুলনা, যশোর ফরিদপুর কুষ্টিয়া রাজশাহী রংপুর সিলেট নেয়ার জন্য।
ইতিমধ্যে অবরোধ দিনক্ষণ যতই কমে আসছে মৎস্য ব্যবসায় জড়িত কয়েক শত শ্রমিক জেলে আড়ৎদার আর ফিসিং বোট মালিকদের পদচারনায় মুখরিত পাথরঘাটা বিএফডিসি মার্কেট, তালতলী ফকিরহাট মৎসবাজার।
পাথরঘাটা মৎস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্যতম বৃহত্তম ফিশিং বোট কোম্পানি সাইফ কোম্পানির পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, শূণ্যভাগী জেলেদের রয়েছে ভিষণ সংকট। গত দুই বছর ধরে অনেকে লোকসানের মুখে পড়ায় এই পেশা অনেকেই ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিয়েছে। এজন্য মাঝি মাল্লা ও জেলেদের যোগাতে দাদন টাকা বাড়িয়ে দিয়ে আনতে হচ্ছে। অনেক ট্রলার মালিক বিগত দিনে লোকসানের কারণে এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হতে পারেনি। এটাই একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ মৎস ব্যবসায় জড়িত ফিশিং বোট মালিকদের। মূলত মৎস ব্যবসার লাভ লোকসান ফিশিং বোট মালিকদেরই সিংহভাগ।
মোস্তফা গোলাম কবির তিনি আরো বলেন, এবারে বাজার ঊর্ধুমুখী থাকায় ট্রলার প্রতি তিন লক্ষ টাকা ব্যায় করে সাগরে পাঠাতে হচ্ছে। এতটাকা ব্যয়ের পর লাভের আশা একমাত্র আল্লাহর উপর নির্ভরশীল থাকতে হবে। তবে তিনি নদীতে যে পরিমাণ এখন ইলিশ ধরা পড়ছে আল্লাহ্ চাইলে গত দুই বছরের লোকশান হয়তো এই ইলিশের মৌসুমে কাটিয়ে ওঠা সম্বভ হবে।
গত ৬৩ দিন অবরোধ নিয়ে জেলা মৎস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব কেটিভি প্রতিদিন কে বলেন, সমুদ্রে ২০০ নটিক্যাল পযর্ন্ত সব ধরনের মাছ আহরণ করা নিষেধ ছিল। তবে এবছর নদীতে মাছ ধরতে বিধি নিষেধ ছিলনা। বরগুনা জেলার সাতাশ হাজার দুই শত সাতাত্তর জনকে এই অবরোধ চলাকালীন সময় ৫৬ কেজি করে মোট পনের হাজার দুই শত একান্ন মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এদেরকে আরো ৩০ কেজি করে মোট ৮৭১ মেঃ টন চাল আগামী মাসের ১৫ আগষ্টের আগেই দেয়া হবে। তিনি বলেন অবরোধ চলাকালীন সময় মোবাইল কোর্ট ও ২৩৪টি অভিযানে তারা ৩.৮৬ মেঃ টন ইলিশ আটক করেছে। যার বাজারমূল্য ছিল ৩৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। নিলামে মাছ বিক্রি হয়েছে ২লক্ষ ৫২ হাজার ৪শত টাকা। জেলেদের জরিমানা করেছে ২লক্ষ ৭৬ হাজার ৪শত টাকা। এসময় অবৈধভাবে মাছ ধরার দায়ে ১.১০৩ লক্ষ মিটার জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।