কাজের তথ্য চাওয়ায় আর্মি দিয়ে সাংবাদিককে হয়রানীর অভিযোগ কক্সবাজার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে

অপরাধ

বিশেষ প্রতিবেদক :
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সহচর ও অনিয়মের গোডাউন খ্যাত এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান কক্সবাজারে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে যোগদানের পর থেকে একের এক অনিয়ম করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান এর অনিয়ম অনুসন্ধানের সূত্র ধরে গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের সম্পাদিত এবং চলমান সকল কাজের তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে তথ্য না দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান এর পক্ষ নিয়ে মোবাইলে এবং সরাসরি সেনাবাহিনীর একটি টিম অপরাধ বিচিত্রা অফিসে গিয়ে বিশেষ প্রতিবেদক এম শাহীন আলমকে খোঁজা সেনাবাহিনীর গুলিস্তান ক্যাম্পের কর্ণেল আফজালুর রহমান পরিচয়ে বার বার হয়রানির করছেন বলে অভিযোগ করেন খোদ অপরাধ বিচিত্রার সম্পাদক ও প্রকাশক এস এম মোরশেদ। তিনি জানান, গত দুই সপ্তাহ যাবৎ কক্সবাজারে এলজিইডি অফিসে তথ্য চাওয়াকে কেন্দ্র করে গুলিস্তান আর্মি ক্যাম্পের অফিসার পরিচয়ে আমার পত্রিকার বিশেষ প্রতিবেদক এম শাহীন আলমকে তাদের ক্যাম্পে গিয়ে অফিসারের সাথে দেখা করার জন্য মোবাইলে বার বার বলা হচ্ছে এবং সরাসরি আমার অপরাধ বিচিত্রা অফিসে এসে আর্মির একটি টিম আমার পত্রিকার সাংবাদিককে খোঁজা এক প্রকার হয়রানির শামিল। এস এম মোরশেদ জানান, যদি আমার প্রতিবেদক কিংবা অপরাধ বিচিত্রার নামে কোন প্রকার কেউ অভিযোগ থাকে তাহলে আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযোগের জবাব চাওয়ার জন্য আর্মি অফিসারকে পরামর্শ দেওয়ার পরও তারা বার বার এম শাহীন আলমকে তাদের ক্যাম্পে গিয়ে দেখা করার তাগিদ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান এস এম মোরশেদ। ধারণা করা হচ্ছে কক্সবাজার জেলা এলজিইডি অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান তার নিজের অনিয়ম আর অপকর্ম আড়াল করতেই সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে সাংবাদিককে নিউজ না করতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করার বার বার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সরজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান যোগদানের পর থেকে একের পর এক অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি যোগদান করার পর থেকে কক্সবাজার জেলার এলজিইডির কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রযেছে। তার মধ্যে চকরিয়া এবং টেকনাফের সেন্টমার্টিনে রাস্তা সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম,উখিয়া উপজেলা ও কুতুবদিয়াতে রাস্তা এবং আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণেও অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়,কক্সবাজার টেকনাফ এর সেন্টমার্টিনে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকায় বঙ্গবন্ধু সড়কটি ইউনি ব্লকের কনকর্ড এর মতো কোম্পানির মাল দিয়ে করার কথা থাকলেও ওখানে ইটের কনা ও সাগরের বালু দিয়ে কিছু ব্লক বানিয়ে সড়কটিতে বসিয়েছে যাহা একেবারে নিন্মমানের এবং হাস্যকর। অনেকটা ঠিকাদারের সাথে নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান এর যোগসাজশের মাধ্যমে নিন্মমানের কাজ করে অর্থ লুটপাট করা হয়েছে। স্থানীয় বিশেষ সুত্রে জানা যায়,সেন্টমার্টিনে সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম থাকলেও যে পরিমাণ কাজ হয়েছে কাজের তুলনায় এই কাজের সিংহভাগ অর্থই উত্তোলন করে তার হিসেব মিলাতে নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান একের পর এক অজুহাত খোঁজে নিজেকে সেইভ করতে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে অনিয়ম থেকে রেহায় পাওয়ার জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,উখিয়ায় রাস্তা এবং ছোট ছোট পুল-কালভাট নির্মাণে উপজেলা প্রকৌশলী এবং নির্বাহী প্রকৌশলীর যোগসাজশে ঠিকাদাররা কাজ অসম্পূর্ণ রেখে এবং রাস্তার কাজে তিনটি লেয়ারে কাজ করার কথা থাকলেও নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলীর যোগসাজশে একটি লেয়ার কাজ না করেও ঠিকাদাররা প্রকৌশলীদের বিশেষ সুবিধায় দিয়ে সহজে বিল পেয়ে যায়।

অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান তার উপরের অফিসারদের অনুমতি না নিয়েই প্রতি সপ্তাহে কক্সবাজার থেকে ঢাকা সহ বিভিন্ন জাযগায় যাচ্ছেন যা সরকারী নিয়ম ভঙ্গ করার শামিল। অভিযোগ উঠেছে নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খানের মাসিক বেতন ভাতা কত? তিনি কি করে সপ্তাহে দুই তিনবার কক্সবাজার থেকে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিমানে যাতায়াত করে। যা কক্সবাজার বিমান বন্দরে সিসিটিভি ফুটেজের তার সকল তথ্য প্রমাণ রয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে মামুন খান তার ব্যক্তিগত আত্মীয় স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের কক্সবাজার ট্যুরে তার নির্দেশক্রমে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে সরকারি টাকায় তেল পোড়াচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে যা গাড়ির ড্রাইভারদেরকে জিগাঙ্গাবাদ সহ তেলের হিসাব চাইলেই সব তথ্য সহজে বের হয়ে আসবে।

কক্সবাজারের স্থানীয় অভিযোগ রয়েছে এই নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান কক্সবাজারে ঠিকাদারদের চেয়ে বেশি বাহিরের ঠিকাদারদের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে বরিশাল,ভোলা,পটুয়াখালী এবং ঢাকার ঠিকাদারদের বেশি কাজ পাইয়ে দেন। ঠিকাদারদের কাছ থেকে তার স্ত্রী ঢাকায় টাকা লেনদেন করেন বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়। যা ঢাকা এলজিইডি হেড অফিসের অফিসাররাও অবগত আছেন।

বিশেষ সূত্রমতে জানা যায়, কক্সবাজার এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা মামুন খান এর স্ত্রীর ভয়ে থাকে। কারণ তার স্ত্রী বিগত দিনে অফিসে এসে কয়েক জন প্রকৌশলীর সাথে টাকার জন্য অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামুন খান তার স্ত্রীর কোন বিষয়ে বিচার না করে একজন প্রকৌশলীকে আওয়ামী দলীয় দাপটে অফিস করতে দেননি। মামুন খান গত ৫ আগষ্ট এর পর থেকে তিনি অফিস করছেন উল্টো তার স্ত্রীর নিকট মাফ চেয়ে এবং এলজিইডির সদর দপ্তরের প্রকৌশলীদের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে। গত শবেবরাতের দিন কক্সবাজার এলজিইডিতে তাকে তার স্ত্রী মেরে রক্তাক্ত করে কয়েক জন কর্মচারী সামনে। পরবর্তীতে কর্মচারীদের সহায়তায় তাকে মেডিক্যাল নিয়ে চিকিৎসা করানো হয় এসব বিষয়ে হাসাহাসি করে যা এলজিইডির জন্য অবমাননাকর।
অনুসন্ধান করে জানা যায় তার স্ত্রীর কর্মচারীদের সাথে বিভিন্ন খারাপ আচরণ এর বিষয় গুলি সাবেক মন্ত্রী তাজুল এর কানে গেলে উনি গালি দিয়ে বলেন ব‌উ কন্ট্রোল করতে না পারলে জেলা কিভাবে চলবে তবে মন্ত্রীর লোককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তখন বেঁচে যান নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান।

গোপন সূত্রে জানা যায়,মামুন খান আইয়ুব নামের এক ঠিকাদার এর একাউন্ট হতে আরটিজিএস এর মাধ্যমে সকল টাকা লেনদেন করেন। নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান সর্বশেষ লালমাটিয়া কেনা ফ্ল্যাট এর টাকাও আইয়ুব এর মাধ্যমে পরিশোধ করেন।

এই অনিয়মের বিষয়ে কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খানকে তার সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিয়ে মোবাইল সংযোগটি পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে আরো বিস্তারিত পরের সংখ্যায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.