ভুমিদস্যু মাটি খেঁকুদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্হা নিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ।
এম শাহীন আলম :
বাস্তবে দেখতে সুফি মনে হলেও, রাজনৈতিক বলয়ে প্রভাব খাঁটিয়ে করেন এলাকার সালিশি বিচার, টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক নেতা নামধারী হোমড়া ছোমড়াদের অদৃশ্য সেল্টারে এলাকার উঠতি বয়সের কিশোর যুবকদের দিয়ে চালান অপরাধ মুলক কর্মকান্ড সহ মানুষকে হুমকি দমকি। প্রকাশ্যে মানুষের কাছে সমাজকর্মীর লেবাসে পরিচিত থাকলেও বাস্তবে মাহাবুব হলেন কুমিল্লা লালমাই এলাকার মানুষের জন্য এক আতংক এবং দূরদর্শ ভুমিদস্যু মাটি খেঁকুদের অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
সরজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহাবুব বহু বছর ধরে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নিজেকে আওয়ামীলীগের সক্রিয় পরীক্ষিত কর্মী পরিচয়ে এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল এমপি’র ছোট ভাই গোলাম সরওয়ার ও তার ভাতিজা কামরুল হাসান শাহীন এর সেন্টারে তার এলাকায় দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোর পূর্বক মানুষকে নামমাত্র দাম দিয়ে মানুষের ফসলি জমিনের মাটি কেটে গোলাম সারওয়ার এর ইটভাটা ও জায়গা ভরাটের কাজে সহ বিভিন্ন ইটভাটায় গত বেশ কয়েক বছর যাবৎ বিক্রি করছেন বলে স্হানীয় সিধুসী,চেঙ্গাহাটা,বাঁশপুর এলাকাবাসী জানান। মাটি খেঁকু মাহাবুবের এসব অবৈধ ভাবে মাটি কাটার ফলে গ্রামের সরু রাস্তায় অবৈধ ড্রাম ট্রাক ও টলি ট্রাক্টর চলাচলের কারণে অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তাঘাট গুলা নস্ট হয়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচলে অনুপযোগী সহ বিস্তর অভিযোগ করেন লালমাই উপজেলার সিধুসীর আশপাশ এলাকার ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।
সরজমিনে আরো জানা যায়, এই মাহাবুব গত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নিজেকে স্হানীয় আওয়ামীলীগ নেতা দাবি করে অবৈধ ভাবে ফসলি জমির মাটির ব্যবসা চালালেও গত ৫ ই আগস্ট -২০২৪ তারিখে আওয়ামী সরকারের পতনের পর তিনি কিছুদিন গা ডাকা দিয়ে থাকেন। একমাস পর রাজনৈতিক বোল পাল্টিয়ে ভুমিদস্যু,মাটি খেঁকু মাহাবুব নিজেকে বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বিএনপির সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী বিশ্বস্হ আস্হাভাজন কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে লালমাই এর সিধুসী সহ আশপাশ এলাকায় গত একমাস ধরে মাহাবুব তার নিজের নের্তৃত্বে একটি মাটি খেঁকু সিন্ডিকেট চক্র তৈরি করে এলাকায় বর্তমানে দিন রাত ২৪ ঘন্টা ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্হানীয় এলাকাবাসী জানান।
মাটি খেঁকু মাহাবুবের জন্ম স্হান স্হানীয় সিধুসী এলাকার লোকজন জানান,গত মাসে এই ভুমিদস্যু, মাটি খেঁকু মাহাবুব এর অবৈধ মাটিকাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে একেই এলাকার সোহেল নামের এক যুবককে মাটি খেঁকু মাহাবুব এর ছত্র-ছায়ার লোকেরা বেধরক পিটিয়ে জখম করলে সোহেল এর স্বজনরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান বলেও জানান।
উপরোক্ত অভিযোগ সমূহের বিষয়ে জানতে মাটি খেঁকু মাহাবুবকে তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে জানান, আমি কখনোই কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলাম না। এক পর্যায়ে কথার প্রসঙ্গের টানে মাটি খেঁকু মাহাবুব জানান, গত জাতীয় নির্বাচনের আগে আমাকে সরওয়ার ভাই অনুরোধ করে জোর করে আওয়ামীলীগে যোগ দিতে বাধ্য করিয়েছেন, আমি সব সময় বিএনপি করতাম এখনো বিএনপিতেই আছি। আপনি সাংবাদিক মানুষ সম্মানী ব্যক্তি আপনাকে আমি আর কি বলবো, বিএনপির নেতা মনিরুল হক চৌধুরী তিনি নিজেই আমাকে দেখে পচন্দ করে বিয়েটা পর্যন্ত করিয়েছেন বলে দাবি করেন। মাটি খেঁকু মাহাবুব শিকার করেন আমি বহু বছর যাবৎ মাটির ব্যবসা করি। টাকা দিয়ে মাটি কিনে মাটি নিয়ে অন্য জায়গায় বিক্রি করি এটা সত্য। আমি কারো ক্ষতি করি না। কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে বাড়িয়ে কিছু বলে থাকে তাহলে তারা আমার এলাকার শক্রু,তাই আমার বিরুদ্ধে তারা আপনার কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। আপনারা সাংবাদিকরা আমি মাটির ব্যবসা করি সেটা নিয়ে নিউজ করার জন্য খোঁজ খবর নিতে ব্যস্ত কিন্তু আমার এলাকায় মাদকে ভরে গেছে সেটা নিয়ে তো কোন সাংবাদিক নিউজ করতে এই পর্যন্ত দেখলাম না। মাহাবুব কে সমাজপতি হিসেবে মাদকের বিরুদ্ধে তার ভুমিকার কথা জানতে চাইলে তিনি কথা ঘুরিয়ে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে বলতে থাকেন। মাটি খেঁকু মাহাবুব জানান,আমি সোহেলের উপর হামলা চালাইনি। সঠিক ভাবে খবর নিয়ে দেখুন সোহেলের উপর হামলা চালিয়েছে তার নিজের দলের লোকেরা। মাটি কাটার বিষয়ে মাটি খেঁকু মাহাবুব বলেন, আমি শুধু একাই তো মাটি কাটি না সারা এলাকাতে আরো অনেকেই মাটি কাটে কই কেউ তো এই পর্যন্ত তাদের বাঁধা দিতে দেখি না বলে জানান।
উপরোক্ত বিষয়ে লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার এহসান মুরাদ’কে অবগত করলে তিনি বলেন, আমার কাছে কেউ অভিযোগ করলে আমি আইনি ব্যবস্হা গ্রহণ করবো বলে জানান।