কুমিল্লায় যানজট নিরসনের নামে ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মুজাহিদের বিরুদ্ধে

অন্যান্য অপরাধ জেলার খবর

বিশেষ প্রতিবেদক :
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যানজট নিরসনের দোহাই দিয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা মালিক-শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রায় ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়িক সমিতির সেক্রেটারি মুজাহিদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, গত ১০ এপ্রিল ২০২৪ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যানজট নিরসন কমিটির বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা মতিনের সভাপতিত্বে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিতদের সামনে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য অটোরিকশা চালকদের পোশাক, বাঁশি এবং চেকপোস্ট তৈরি করার নামে অর্থ সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়।

ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদ চৌধুরী, সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ শাখার ইঞ্জিনিয়ার ইউসুফ এবং অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতিসহ তাদের সহযোগী আরও পাঁচজন গত ১১ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতিজন ৪০০ টাকা করে সংগ্রহ করেন।

অভিযোগকারীদের দাবি, এইভাবে ধাপে ধাপে মোট ৩২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পোশাক বা বাঁশি দেওয়া হয়নি, বরং টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। উল্টো যারা টাকা ফেরতের দাবি তুলেছেন, তাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে এবং অটোরিকশা আটক করে অতিরিক্ত ১০ লাখ টাকারও বেশি আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও মালিকরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম, এখন তারা উল্টো আমাদের গাড়ি আটক করে হয়রানি করছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। এ বিষয়ে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত বা প্রতিশ্রুত পোশাক ও বাঁশি প্রদান করার দাবি জানানো হয়েছে।

অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন এরশাদ, জাহাঙ্গীর, বাবুল, জাহিদ, আ. বারেক ও আলামীনসহ একাধিক অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক।

টাকা উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করে মুজাহিদ চৌধুরী বলেন, সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ট্রাফিক বক্স গুলো করে দেয়া হয়েছে। আর বাঁশি বা পোশাক তা যার যার সমিতির মাধ্যমে নিজস্ব অর্থায়নে করার কথা ছিল। আমার কাছে কেউ টাকা দেয়নি আমিও কারো কাছ থেকে টাকা চাইনি।

অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, মুজাহিদসহ যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের ডিসি অফিসে ডাকা হয়েছে। তাদের বক্তব্য শোনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহ আলম বলেন, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.