খুলনায় মাদক ও টিকটকের জেরে রফিকের ৩য় বিয়ে সন্তানসহ বিপাকে স্ত্রী রত্না

অপরাধ

মোঃ রিয়াজ উদ্দীন,খুলনা থেকে :
মোঃ রফিকুল ইসলাম (৩১) গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার দেপাড়া গ্রামের মোঃ বায়েজিদ শেখের (৫৫) পুত্র। তিনি খুলনা টুটপাড়ার দিলখোলা রোডের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। পেশায় তিনি রং মিস্ত্রী। প্রথম দিকে নিজের কাজ দেখিয়ে সকলের মন জয় করেন রফিকুল। তার সাথে কাজ করতেন দক্ষিণ টুটপাড়া ০২নং ক্রস রোডের ভাড়াটিয়া প্রথম স্ত্রীর বাবা মোঃ সেলিম শেখ (৫০)। ছেলের কাজের প্রতি আগ্রহ ও মুগ্ধতায় নিজের মেয়ের বিয়ে দেন রফিকুল ইসলামের সাথে। কিন্তু বছর গড়াতে না গড়াতেই রফিকুল তার নিজের রুপ বদলাতে শুরু করে। অতঃপর মোছাঃ তৈয়েবা আক্তার রিয়া (০৮) ও রিয়ান শেখ ওরফে ইব্রাহিম (০৬) নামে দুটি সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান বড় হতে না হতে রফিকের টিকটক ও মাদকের সাথে সম্পৃক্ততার আগ্রহ বাড়তে থাকে। আর তারই ফলশ্রুতিতে খুলনা সদর থানা পুলিশ মাদক সহ গ্রেফতার করে রফিকুলকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। জামিনে মুক্তি পেলেও টিকটক ও মাদক থেকে মুক্তি মেলেনি রফিকের। প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তানসহ রেখে নিজেকে ভাল রাখতে নিজের কৌশল খাটিয়ে নিজের ২০১৮ সালে অত্র জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার বাইনতলা মল্লিক বাড়ীর মোঃ ইসরাত মল্লিকের পড়ুয়া মেয়েকে নিজের পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করেন। বিবাহের পর পরই মেয়ে পক্ষকে যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রফিকুলের পূর্বের সন্তান সহ বিয়ের খবর জানতে পেরে এক সপ্তাহের মধ্যেই এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে রফিকুল ইসলাম কে তালাক প্রদান করে। উক্ত ঘটনার পর ০৯ মাস ঢাকায় চলে যান রফিকুল। অতঃপর দুই সন্তানসহ ১ম স্ত্রী খাদিজা আক্তার রত্না কে অসুস্থ অবস্থায় রেখে টুটপাড়ার একই এলাকার হেমায়েত আকনের কণ্যা টিকটকার জান্নাতি আক্তার (২৯) কে দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। ১০মাস অতিবাহিত হতে না হতেই পূ্বের ন্যায় মোছাঃ জান্নাতি আক্তার কতৃক ১৯/০৫/২২ ইং তারিখে যৌতুক ও মনের অমিলের সর্ত দেখিয়ে তালাক প্রদান করে। এদিকে প্রথম স্ত্রী ও তার বাবা দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নীরবে ধৈর্য্য ধারণ করেন এই মর্মে রফিকুল প্রতিবারের ন্যায় নিজেকে শুদ্ধ করে নিবে। উল্লেখ্য রফিকুলের অত্যাচারের ফলে মানবাধিকার কমিশনের কাছেও ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দেন এই টিকটকার রফিকুল। তারপর রফিকুলের তৃতীয় স্ত্রী তালাক দিলে পুনরায় নিজের কৌশল অবলম্বন করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঘর করার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী পুনরায় ঘর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে দুই কন্যা সন্তানের জননী ও একাধিক বিবাহিত তৃতীয় স্ত্রী মোছাঃ জান্নাতি আক্তার কে নিয়ে ঘর করার স্বপ্ন দেখেন রফিকুল। বর্তমানে টিকটক ও মাদকের সাথে সম্পৃক্ততার খোঁজে তালাকপ্রাপ্ত তৃতীয় স্ত্রীকে বিয়ে করে নিজের মর্জিতেই চলছেন এমনটি মন্তব্য করেছেন ভুক্তভোগীর ১ম স্ত্রী খাদিজা আক্তার রত্না ও তার বাবা মোঃ সেলিম শেখ। তারা বলেন ইতিপূর্বে কয়েকবার আমরা তার ঘরভাড়া সহ আনুমানিক ৫৫,০০০/(পঞ্চান্ন হাজার টাকা) জরিমানা দিয়েছি। আমরা তার যৌতুকের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। আমরা সকল প্রশাসন,গনমাধ্যম কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীদের কাছে এই দুঃচরিত্র রফিকুলের বিচারের দাবি জানাচ্ছি। সূত্রে জানা গেছে, সন্তান সহ ১ম স্ত্রী খাদিজা আক্তার রত্না ও তার বাবা মোঃ সেলিম শেখ যাতে কোন আইনী সহায়তা না পেতে পারে এজন্য তিনি খুলনা সদর থানায় অগ্রিম সাধারণ ডায়েরী/জিডি ও করে রেখেছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে উক্ত ঘটনাটি সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগী সন্তান সহ ১ম স্ত্রী খাদিজা আক্তার রত্না ও তার পরিবার রফিকুলের এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.