বিশেষ প্রতিনিধি :
স্ট্রোক জনিত কারণে তিন বছর আগে বাবা হাকিম হালদার মারা যান। রেখে গেছেন তিনটি পুত্র সন্তান- বড় সন্তান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাসুদ আলম হালদার (৪০), মেজ পুত্র মোঃ মামুন হালদার (৩০) বেকার এবং ছোট পুত্র মোঃ মাহাবুব আলম হালদার (২৫) প্রবাসী। পিতার মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব পড়ে বড় সন্তান শিক্ষকের মোঃ মাসুদ আলম হালদারের ওপর। বাবা না থাকায় বড় ভাই ও ভাবী মোছাঃ রেহানা খাতুন (৩৩) তার নিজ দুটি সন্তান তানিদ ফাতেমা (১৩)ও মোঃ আলিফ ইসলাম (০৫)এর মতো পরম আদরে সন্তানের মতো লালন পালন করেন মা হালিমা বেগম (৬০) ও ছোট ভাইদের। কিন্তু পরম মমতায় গড়া এই অতিরিক্ত আদর আজ তাদের জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেজ ভাই মোঃ মামুন হালদার তার বড় ভাইয়ের সম্পত্তির উপর কুনজর পড়ে। শিক্ষক বড় ভাইয়ের পুরো সম্পত্তি নিজেই ভোগ করার স্বপ্ন দেখেন। আর তারই ফলশ্রুতিতে বড় ভাবী মোছাঃ রেহানা খাতুন কে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করার চেষ্টা করলে সামান্যর জন্য বেঁচে যায়। কিন্তু বড় ভাবী মারাত্মক ভাবে জখম হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনাটি ঘটেছে, খুলনা রুপসা উপজেলার শ্রীফলতলা ইউনিয়নের চন্দনশ্রী এলাকায়। ভুক্তভোগী রেহানা খাতুন জানান, ইতিপূর্বে আমার শ্বাশুড়ির প্ররোচনায় আমার স্বামীর সম্পত্তি নিজেই ভোগ করতে কয়েকবার আমাকে মারতে আসে আমার দেবর মোঃ মামুন হালদার। কিন্তু স্বামী বড় ভাই ও শিক্ষক হওয়ার সুবাদে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। সর্বশেষ গত ১২/১০/২২ ইং তারিখ রোজ বুধবার সকাল আনুমানিক ০৯:৩০ ঘটিকার সময় আমি আমার স্বামীর ক্রয়কৃত সম্পত্তি মদনের ভিটায় গেলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আমার সাথে কথা কাটাকাটি করে আমার দেবর মোঃ মামুন হালদার (৩০) একপর্যায়ে তার হাতে থাকা ধারালো হাসুয়া ও বাঁশ দিয়ে আমাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়েছে ও আমার সারা দেহে বাঁশ দিয়ে সজোরে আঘাত করেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বড় ভাইয়ের সম্পত্তি দেখাশোনা করে মেজ ভাই মোঃ মামুন হালদার। গাছ গাছালি তথা ফলমূল বিক্রির অর্থ দিয়ে পকেট খরচ চালায় মামুন হালদার। বড় ভাই মেজ ভাইয়ের বেকারত্ব জীবন যাপনে কোন কথা বলে না। ঘটনার দিন ঐ স্থানে বড় ভাবী ও দেবরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দেবর মোঃ মামুন হালদার ভাবী রেহানা খাতুন কে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে লোকজনের আত্বচিৎকারে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয় লোকজন চিকিৎসার জন্য প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গেলে সেখান থেকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন কতৃব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সদর হাসপাতাল থেকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। এটা পরিকল্পনা করে হত্যা করার জন্য এমন কান্ড ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এলাকার সুধীসমাজ। অবশেষে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলেন ভুক্তভোগী রেহানা খাতুন। বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলেন, মোছাঃ রেহানা খাতুনের মাথা, কপাল, ঘাঢ়,হাত-পা শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ইতিমধ্যে দুই ব্যাগ রক্ত দিলেও তার শারীরিক অবস্থার তেমন কোন উন্নতি হয়নি। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে বলা সম্ভব হবে বলে মনে করছি। ভুক্তভোগীর স্বামী মোঃ মাসুদ আলম হালদার বলেন, পরিবারের অভিভাবক না থাকায় আমাকে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা মেনে নিতে পারছি না।অতি অল্প সময়ের মধ্যে ছোট ভাইয়ের এহেন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক ও প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে রুপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কথা বললে , উক্ত গুরুতর আহত বিষয়ে অভিযোগ পলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।