ঘুষ দিলেই অবৈধ গাছ পাচারের বৈধতা দেন চট্রগ্রামের ফৌজদারহাট স্টেশন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল

অন্যান্য

অবৈধ গাছের গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা দুই সপ্তাহ পার হলেও যথাযথ ব্যবস্হা নিতে ব্যর্থ ডিএফও কায়চার

সাইফুল ইসলাম পলাশ :
গাছ পাচার বন্ধে ফৌজদারহাট ফরেস্ট চেক ষ্টেশন থাকলেও বন উজাড় করে কাঠ পাচার বন্ধ হচ্ছে না। বনের গাছ কাটা, জোত বিক্রি ও পারমিট সরকারিভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও ঘুষের বিনিময়ে পাচারে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে খোদ ফরেস্ট চেক স্টেশনের কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বিরুদ্ধে। এছাড়া এই স্টেশনটিতে কাগজপত্র চেকের নামে বিরতিহীন ভাবে নেওয়া হচ্ছে প্রতি গাড়ি থেকে ২৮০০ টাকা করে। বিগত দিনে চট্রগ্রাম (উত্তর) বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও উপ বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের কে একাধিকবার জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেননি। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, চট্রগ্রাম (উত্তর) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও)কায়চার এর যোগসাজশেই চেক স্টেশন গুলোতেই চলছে কাগজপত্র চেকের নামে বেপরোয়া বিরতিহীন চাঁদাবাজি। যা দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বন বিভাগের কুমিরা রেঞ্জের ফৌজদারহাট ফরেষ্ট চেক স্টেশন কর্মকর্তার সাথে রফা করে প্রায় দিন বৈধ গাছের গাড়ির সাথে অবাধে পাচার হচ্ছে মাসে কোটি কোটি টাকার কাঠ। এসব গাছ ফৌজদারহাট ফরেস্ট চেক স্টেশনের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যোগসাজোশে দিনরাত পাচার হয় এসব কাঠ। গাড়ী প্রতি নেওয়া হয় ২ হাজার ৮শত টাকা করে দৈনিক অবৈধ লেনদেন গড়ে অধ্য লাখ টাকারও বেশি। এভাবে প্রতিমাসে অন্তত ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ফৌজদারহাট চেক স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।

গত ১ লা নভেম্বর (শুক্রবার) জাতীয় সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার বিশেষ প্রতিনিধি এম শাহীন আলম তার নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন বান্দরবন বন বিভাগ থেকে সেগুন গোল কাঠের (টিপিতে লেখা) ৫১৯ পিস এর একটি ট্রাক অতিরিক্ত আরো ১৫০ পিস গোল সেগুন কাঠ বেশি নিয়ে সড়ক পথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। এম শাহীন আলম এই বিষয় ফৌজদারহাট চেক স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীকে অবহিত করে গাছের গাড়িটি নাম্বার এবং ছবি দেন। চতুর স্টেশন কর্মকর্তা এই সংবাদ পেয়ে সাথে সাথে গাড়িটির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ঐ কাঠ ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ করে গাড়ী চেক স্টেশনে আসার আগেই ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী ও কাঠ ব্যবসায়ীর মধ্যে সমঝোতা হয়ে যায়। গাড়ী চেক ফৌজদারহাট চেক পোস্টে আসে রাত আনুমানিক ১০.৩০ টায়। চেক স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী অফিসিয়াল ফর্মালেটি ম্যান্টেস করে রাত আনুমানিক ১১ টায় গাড়ী ছেড়ে দেবে এই মুহুর্তে গনমাধ্যম কর্মীর টের পেয়ে শুরু করলেন বিভিন্ন টালবাহনা। এক পর্যায় চেক স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী জানান এই বিষয় উক্ত কাঠ ব্যবসায়ীর সাথে উনি কথা বলেছেন এখানে টিপির অতিক্তির কোন কাঠ নেই বলে তর্ক – বিতর্ক করতে থাকেন। ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী এই বিষয় কাঠ ব্যবসায়ীর সখ্যতা নিয়ে সাংবাদিক এম শাহীন আলমের সাথে তর্ক করতে থাকেন। এক পর্যায় ফৌজদারহাট চেক স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরীকে জাতীয় সাপ্তাহিক অপরাধ বিচিত্রার বিশেষ প্রতিনিধি এম আলম শাহীন চ্যালেঞ্জ করে বসলেন উক্ত ট্রাকে অতিরিক্ত একশোর বেশি গাছ আছে। সাংবাদিক এম শাহীন আলমকে ম্যানেজ করতে ফরেস্টার মঞ্জরুল ইসলাম বান্দরবান কাঠ মালিক সমিতির সেক্রেটারি জামালকে ফোন করে ঘটনার স্হলে আনেন। ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম কোন উপায় অন্তর না পেয়ে শ্রমিক নিয়ে আসেন এবং রাত প্রায় দেড়টার দিকে ট্রাক আনলোড করেন এবং গণনা করার পর প্রায় ১৫০ পিস কাঠ অতিরিক্ত পাওয়া যায়। টিপিতে লেখা আছে ৫১৯ পিস গণনা করা পর সর্বমোট গোল কাঠ হয় সাড়ে ৬০০ পিসের বেশি। মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী এক পর্যায়ে এম শাহীন আলমকে ম্যানেজ করতে উনার ক্যাশ থেকে দশ হাজার টাকা বের দেন এবং বলেন আপনি অনেক দূর থেকে আসছেন এগুলো রাখনে। সাংবাদিক শাহীন আলম টাকা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী সাংবাদিক শাহীন আলমে জিগ্গেস করেন এখন তাহলে কি করবো তখন শাহীন আলম বলেন, আমি আপনাকে অবৈধ গাছের গাড়ির সংবাদ দিয়েছি,আপনার সাথে চ্যালেঞ্জ করে অবৈধ গাছ আছে প্রমাণ করে দিয়েছি এখন কি করবেন সেটা আপনার বিষয় একথা বলে তিনি বাহিরে চলে আসলে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির নেতা জামাল উদ্দিন সাংবাদিক শাহীনকে ম্যানেজ করতে ১৫ – ২০ হাজার টাকা নিয়ে জোর করে টাকা দিতে দস্তাদস্তি করলে সাংবাদিক শাহীন ঘটনারস্হল ত্যাগ করেন এবং ৪ মিনিট পর স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মঞ্জুরুল ইসলাম এর মোবাইল নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ দেন গাড়ি ছাড়া যাবে না লিখার পর মঞ্জুরুল সাংবাদিক শাহীনকে একাধিকবার মোবাইলে কল দেন । সাংবাদিক এম শাহীন আলম স্টেশন কর্মকর্তা মঞ্জরুল এর মোবাইল কলটি রিসিভ করেননি। জানা যায়, ফরেস্টার চট্রগ্রামে স্হানীয় বাসিন্দা হওয়ায় তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করে গাছের মালিকের সাথে মোটা অংকের টাকা রফা করে অবৈধ গাছ ভর্তি গাড়ীটি ছেড়ে দেন চেক স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার মোঃ মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী।

এই বিষয়ে জানাতে চট্রগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কায়চার এর সাথে যোগাযোগ করতে তার অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বারটিতে অসংখ্যবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। পরক্ষণে সমস্ত ঘটনার ছবি, ভিডিও চিত্র প্রমাণাদিসহ উপ-বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (এসিএফ) জয়নাল আবেদীন অবগত করা হয়। কিন্তু এই ঘটনার দুই সপ্তাহ পার হলেও ফৌজদারহাট (বন) চেক স্টেশন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম এর অনিয়মের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্হা নিতে ব্যর্থ চট্রগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

বহু চেষ্টার পর ডিএফও কায়চার মোবাইল কল রিসিভ করলেও সাংবাদিক পরিচয় জেনে তিনি কোন কথা না শুনে বলেন,কিছু বলতে হলে সরাসরি তার সাথে দেখা করতে বলে তিনি কলটি কেটে দেন এবং বার বার তাকে পুনরায় কল দিলেও তিনি কলটি কেটে দেন এবং আর কলটি রিসিভ করেননি। উপবিভাগীয় বন কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন এর সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তারা এই বিষয়ে প্রাথমিক ব্যবস্হা গ্রহণ করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। নোটিশের জবাব পেলে ব্যবস্হা নিবেন বলে জানান। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে যথাযথ ব্যবস্হা না নেওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে নিউজ চলমান থাকবে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.