ছুটির দিনে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভিড়

অন্যান্য

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ,কুয়াকাটা থেকে :
চলনা ঘুরে আসি এমন ছন্দ কুয়াকাটা ঘুরতে আসা পর্যটকদের, দীর্ঘদিন লকডাউন থাকার পর দেশের বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার কুয়াকাটায় সমুদ্র সৈকতের
স্পটগুলোতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে। শুক্রবার (আজ) ও শনিবার পর্যটক আরও বাড়বে। কুয়াকাটার বেশিরভাগ হোটেল ও মোটেলের ৩০ থেকে ৫০ ভাগ কক্ষ শনিবার পর্যন্ত ২ দিনের জন্য বুকিং হয়ে গেছে। তবে প্রথমদিন দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকের উপস্থিতি তেমন একটা ছিল না। তবে আজ (শুক্রবার) পর্যটকের আনন্দ আনন্দিত হয়েছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা, সামনের দিনগুলোতে পর্যটক বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘ প্রায় ১৪০ দিন পর বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ায় এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পর্যটকরাও খুশি। কারণ বদ্ধ ও একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তারা।

১৯আগস্ট পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার খুলে দেওয়ার প্রথমদিনই কুয়াকাটার পর্যটকদের আগমন শুরু হয়। হোটেল কর্তৃপক্ষও পর্যটকদের বরণ করে নেন। বিকালে সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আনন্দ হৈ-হুল্লোড় করতে দেখা গেছে। সমুদ্রস্নান, দৌড়ঝাঁপ, সূর্যাস্ত দেখাসহ আনন্দমুখর সময় পার করছেন তারা। কুয়াকাটা রাখাইন মার্কেট ও ফ্রাই পট্টিতে মানুষের ভ্রমণকথা ফুটে উঠছে ৷

সমুদ্র সৈকতের চারিপাশ এখন পর্যটকে ভরপুর, কুয়াকাটার দর্শনীয় স্থানগুলো নতুন মানুষদের নতুন নতুন রূপে রূপবতী হচ্ছে ৷

কুয়াকাটা বুদ্ধ মন্দির আবারো আগের মত পর্যটকদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে রাখাই প্রজাতির লোক, লেবুর বনে ফিরে পেয়েছে রূপ ও লাবণ্য, লাল কাঁকড়া দ্বীপ জানো মেহমানদের বরনে লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন , গঙ্গামতি কাউয়ার চর সবুজ লতাপাতার মুগ্ধ করছে পর্যটকদের , ঝাউবনের বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ মুক্ত করছে পর্যটকদের, তিন নদীর মোহনা ও ঝিনুক চরের সাদা রূপে মুগ্ধ করেছে পর্যটকদের, সমুদ্রপথে আনন্দ ভ্রমণ ফাতরার বন লেক অপেক্ষায় রয়েছে সুন্দর বিলিয়ে দিতে। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক থাকলে, এভাবেই যদি চলতে থাকে পর্যটকে আনন্দ আরো বাড়বে কুয়াকাটায় ৷
ইলিশ পার্ক পর্যটকের আনন্দ মুহুর্ত কাটানোর বড় স্থান, ইতিমধ্যেই দেখা গিয়েছে আনাগোনা, বড় ইলিশের পেটে বসে আলাপ-আলোচনা সুস্বাদু খাবার খাওয়া সব মিলে সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে কুয়াকাটায় ৷

একাধিক পর্যটক জানান, করোনা একেবারে আর শেষ হবে না। এর সঙ্গে লড়াইয়ে অভ্যস্ত হতে হবে। মন ভালো রাখতে গেলে বিনোদন প্রয়োজন। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসেছেন।
ঢাকা থেকে আগত সেলিনা বেগম বলেন, অনেকদিন যাবত ঘরের মধ্যে বন্দি ছিলাম আমার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, অনেকদিন পরে যখন খোলা হল সাথে সাথে কুয়াকাটায় চলে এসেছি ,কারণ আমার কাছে কুয়াকাটা অপরূপ সৌন্দর্যের স্থান, মুক্ত বাতাসে খোলা মনে সমুদ্রের সাথে কথা বলি।

এদিকে পর্যটন স্পট খুলে দেওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা খুশি। তবে আবার লকডাউনের আশঙ্কাও কাজ করছে তাদের মধ্যে।

হোটেল সি ভিউ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এর ম্যানেজার সুলাইমান বলেন, ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ আসনের মধ্যে ৩০ শতাংশ কক্ষ ২. দিনের জন্য বুকিং হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরও ভয় একটাই-আবার যদি লকডাউনের ঘোষণা আসে।

কুয়াকাটা হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। দীর্ঘদিন পর হোটেল খোলায় হোটেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পর্যটকদের বরণ করে নেওয়া হচ্ছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের (এসপি) আব্দুল খালেক বলেন, আমরা সব সময় পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করছি এছাড়াও আরও বলেন, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কুয়াকাটায় পর্যটক আসতে শুরু করেছেন। পুলিশ সদস্যরা পর্যটন এলাকার সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক সজাগ রয়েছেন। মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলছেন।

বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র সাগরকন্যা কুয়াকাটা, এখন সৌন্দর্যের স্থান, আপনার জন্য অপেক্ষা করছে অপরূপ সৌন্দর্য, সবশেষে আপনার ভ্রমণ হোক কুয়াকাটায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.