এম শাহীন আলম :
দেশের সুনাম ধন্য ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ কাওসার আমীর আলীর চাকুরীর চুক্তি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মরিয়া হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে দুর্নীতির তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে। দুর্নীতিবাজ এই প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানীতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে গত ২৯ মার্চ-২০২০ তারিখে যোগদান করে (জন্ম তারিখ ১২ মার্চ – ১৯৬১) এর চুক্তিভিত্তিক চাকুরীর মেয়াদ পূর্বের চুক্তির ধারাবাহিকতায় আগামী ১১ মার্চ ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় চাকুরীর মেয়াদ রয়েছে।
ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ কাওসার আমীর আলীকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ডেসকো’র টেন্ডার, অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও বিভিন্ন প্রকল্পে লুটপাটের অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ডেসকো’র ওরাকল লাইসেন্স ক্রয়,নবায়ন, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)’র প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মান প্রকল্পের, একটি লটে ২ লক্ষ মিটার ক্রয়ের মাস্টার ইনফর্মেশন সেন্টার (এএমআইসি) প্রকল্পের অনুমোদিত প্রাক্কলন (estimate), বাজেট বরাদ্দ, টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, টেন্ডার খোলা, আর্থিক ও কারিগরি কমিটির মূল্যায়ন প্রতিবেদন, NOA, চুক্তি, কাজ বুঝিয়ে দেওয়া ও নেওয়া সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র, বিল, টেভার খোলা, আর্থিক-কারিগরি কমিটির সদস্যদের নাম-ঠিকানা, পত্র যোগাযোগ, নোটসিটসহ সংশ্লিষ্ট নথির ফটোকপি। এই সংশ্লিষ্ট নথিপত্র তথ্য সাত কার্যদিবষের মধ্যে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর নথি নং ০০,০১,০০০০,৫০৫,০১,০০৯,২২,৪৪১৭৮ তারিখ: ০২-১২-২০২২ইং
ডেসকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর দেওয়া পত্রের কোন গুরুত্ব না দিয়ে কাওসার আমীর আলী’র তার নিজ জেলা বগুড়ার বিএনপি-জামায়াত পন্থি অফিসারদের নিয়ে গড়ে তুলেছে একটি বড় সিন্ডকেট।
এই সিন্ডকেটে রয়েছে ডেসকো প্রধান প্রকৌশলী (পিএন্ডডি) জুলফিকার তাহমিদ, প্রধান প্রকৌশলী (আইসিটি) শামীম আহসান চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (ডেভোলপমেন্ড) মোঃ শরিফুল ইসলাম বগুড়া জেলার বিএনপি-জামায়াত পন্থি অফিসারদের এই বিশাল সিন্ডকেট নিয়ে সমানে চালিয়ে যাচ্ছে দুর্নীতি।
ডেসকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলীর ১১ মার্চ ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত চাকুরির মেয়াদ থাকায় বিএনপি-জামায়াত পন্থি এই সিন্ডকেট মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা ডেসকোতে টেন্ডারের প্রক্রিয়া শুরু হতেই তাদের নির্ধারিত ঠিকাদারকে একক ভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য সকল ধরনের তদবির করতে থাকে এবং হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। ডেসকোর সকল কাজ এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করছে বিশস্হ সূত্রে জানা যায়।
কাওসার আমীর আলী এবং তার সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও লুটপাটে ভয়াবহতার কারনে ডেসকোর মতো অর্থনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী এই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ধ্বংশের পথে। ডেসকো প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ডেসকোর লস প্রায় ৫৭০ কোটি টাকা এবং প্রতি মাসে এখন ডেসকোর লস হচ্ছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
চাকুরির মেয়াদ শেষে কাওসার আমীর আলী এবং তার সিন্ডিকেট বিএনপি-জামায়াত পন্থি চক্র মন্ত্রনালয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে সরকারকে বিব্রত করার জন্য দেশে ডলার সংকটের মধ্যেও অ-প্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহন করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
ইতি মধ্যে লুটপাট করে ডেসকো’র দুর্নীতিবাজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী চাকুরির ৪ (চার) বছরে প্রায় ২০০ কোটি টাকার উপরে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এই দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলীর ঢাকায় রয়েছে একাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট। ধানমন্ডির সিকদার কনকর্ড টাওয়ারে রয়েছে তার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট যেখানে দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী নিজেই বর্তমানে থাকেন। তার দুবাইতেও রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল কাঞ্চন ব্রীজের পর অবস্থিত “প্রবাসী পল্লি আবাসন প্রকল্পে” রয়েছে ৫০ কোটি টাকা মূল্যের জমি ও প্লট।
দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলীর ১১ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখে চাকরির চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও অনৈতিক ভাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় পাওয়ার ডিভিশন কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স-১ থেকে
মিটার ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফ্টওয়্যারের প্রি-শিপমেন্ট পরিদর্শনে অংশ নেওয়ার জন্য টেকসই এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (SREDA) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (DESCO) লিমিটেড। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৭ (সাত) দিন ট্রেনিং এর জন্য পূর্বানুমতি নিয়ে রেখেছে।
মেমো নং DESCO/ADMIN-A(41)/TS&W(A)-41/2023/1399 তারিখ গত ২৮ মে ২০২৩ইং ডেসকো’র এক অফিস অর্ডারে প্রকৌশলী মো: কাওসার আমীর আলী বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় একটি ট্রেনিংএ রয়েছে। তিনি ২৫ ফেব্রুয়ারী-২০২৪ইং তারিখে ট্রেনিং শেষে এই দুর্নীতিবাজ দেশে ফিরেছেন। এছাড়া আরও কয়েকটি ট্রেনিং এর প্রস্তাব মন্ত্রণালয় থেকে বাতিল করেছে।
ডেসকোর নিয়ম অনুযায়ী কারো বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত বা সরকারের কোন সংস্থা থেকে তদন্ত চলাকালে ঐ কর্মকর্তা কোন গ্রাজুইটি প্রফিডেন্ট ফান্ড পাইবে না কিন্তু প্রকৌশলী মোঃ কাওসার আমীর আলী দুদকের তদন্ত গোপন করে সার্ভিস বেনিফিট নেওয়ার জন্য ডেসকোর কর্মকর্তা’দের চাপ প্রয়োগ করে গ্রাজুইটি প্রফিডেন্ট ফান্ড নেওয়ার জন্য অবৈধ ভাবে চাপ প্রয়োগ করেই যাচ্ছে। এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কথা তার শেষ কর্ম দিবসে তার সকল সার্ভিস গ্রাজুইটি প্রফিডেন্ট ফান্ডের চেক প্রদান করতে হবে।
এবিষয় ডেসকো স্বারক নং ২৭.২৪.০০০০.০১৪.২২.০০১.১৭.১১২ তারিখ: ৩১মে ২০১৮ইং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড এর কোম্পানি সচিব এস এম জামিল হুসাইন সাক্ষরিত সার্কুলারে ৩৫৮তম বোর্ড সভায় ডেসকো’র Administrative Affairs Committee কর্তৃক সুপারিশকৃত সংযুক্তি-১ রুপে প্রদর্শিত ডেসকো’র সার্ভিস রুল ২০১৭ এর বিধি- ৯.১ অনুমোদিত করে। উক্ত সংশোধনী রুলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে গত ১৫ মে ২০১৮ইং তারিখে এই আইন কার্যকর করে।
প্রকৌশলী মো: কাওসার আমীর আলী
ডেসকোর সার্ভিস নীতিমালা ৯.১(সি) আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর নথি নং ০০,০১,০০০০,৫০৫,০১,০০৯,২২,৪৪১৭৮ তারিখ: ২ ডিসেম্বর ২০২২ইং এর অভিযোগের নিষ্পত্তির আগে।
ডেসকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাওসার আমীর আলীকে কোন গ্রাজুইটি প্রফিডেন্ট ফান্ডের টাকা বা চেক না দেওয়ার জন্য ডেসকো প্রশাসন অইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।