আশুলিয়া প্রতিনিধি :
সাভারে এক কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগে সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার রাতে সাভার মডেল থানায় সোহেল রানাকে প্রধান আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
পুলিশ জানায়, সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুর মহল্লায় চৌদ্দ বছরের এক কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে আসছিলেন সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা। পরে ওই কিশোরী সোহেল রানাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বিয়ে করার অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে সাভার মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে ওই কিশোরীর বাদী হয়ে সোহেল রানাকে প্রধান আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে পলাতক রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা। অবিলম্বে সোহেলকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরের প্রতিবেশীরা।
ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কবির।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক বলেন, তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এখন প্রক্রিয়াধীন।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম জানান, ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, এই ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন সময় যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে। গত দু’বছর আগে আরেক কিশোরীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতে তখন কিছুদিনের জন্য আত্মগোপনে চলে যান সোহেল।
এছাড়া সাভারের বিভিন্ন সড়কে পরিবহন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছে সোহেল রানার নেতৃত্বে একটি চাঁদাবাজ চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটি সূত্র জানায়, ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানার নেতৃত্বে বিভিন্ন পয়েন্টে চাঁদা উত্তোলনের ঘটনায় তাদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা জানান, সোহেল রানা সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হলেও তার অফিস সাভার পৌর এলাকায়। চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সাভার মজিদপুর এলাকায় অফিস ভাড়া নিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় সে। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ইসরাফিল, ফিরোজসহ এলাকার বখাটে ছেলেদের নিয়ে সন্ত্রাসী গ্যাং গঠন করে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে এই সোহেল।