মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়ার গাবতলীতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। গত ১২ই আগস্ট ২১ইং বৃহস্পতিবার গাবতলী সদর ৭ নং দাড়াইল ইউনিয়নের চকসদু (মধ্যপাড়া) গ্রামের মজনু আকন্দের ছোট ছেলে মিল্টন আকন্দ এর উপর দূর্বৃত্তরা এ হামলা চালায়। এ হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মিজু আলম ১৩ই আগষ্ট শুক্রবার বিকেলে গাবতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার দিন আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। এজাহারে উল্লেখিত এক নম্বর আসামি মোঃ ফারুক আহমেদ (৩৫), পিতা মৃত দুলাল প্রামানিক, গ্রামঃ চকসদু, ২।মোঃ সাদ্দাম হোসেন (২৮), পিতা মোঃ আমজাদ হোসেন কসাই, গ্রামঃ তরফসরতাজ,৩।মোঃ পাপুল হাসান(২৫), পিতাঃ মৃত দুলাল প্রামানিক, গ্রামঃ চকসদু (পশ্চিমপাড়া), ৪।মোঃ মাসুম(২৮), পিতা মোঃ ফজলুর রহমান, গ্রামঃ চকসদু (মধ্যপাড়া), ৫।মোঃ মাসুম(২২), পিতাঃ মোঃ পিন্টু গ্রামঃ চকসদু (মধ্যপাড়া), ৬।মোঃ রাজু প্রামানিক(৩৫), পিতা মোঃ জিল্লা ফকির গ্রামঃ চকসদু (মধ্যপাড়া) সহ ১০-১২জন দুর্বৃত্তকারীরা রামদা,চাকু,লোহার রড সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মজনু আকন্দের বাড়িতে এ হামলা চালায়। সে সময় দুর্বৃত্তরা বাড়িঘর, আসবাবপত্র ভাংচুর করে, ভাংচুরে বাধা দিতে গেলে মজনু আকন্দের ছোট ছেলে মিল্টন হোসেন(২২) দুর্বৃত্ত ফারুক ও পাপুলের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়।ছেলে মিল্টনকে বাঁচাতে গেলে এসময় দুর্বৃত্তরা তার বাবা মজনু আকন্দকে বেধড়ক মারপিট করে। এক সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকারে প্রতিবেশী ও গ্রামবাসী এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা দ্রুত মজনুর বাড়ি ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। এসময় দুর্বৃত্তরা মজনুর ঘরে থাকা ট্রাঙ্ক থেকে গরু বিক্রির ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা এসে গুরুতর আহত মিল্টন ও তার বাবাকে গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিয়ে মজনু বাড়ী ফিরলেও, তার ছেলে মিল্টন গুরতর জখম নিয়ে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হামলাকারীদের মূল হোতা পাপুল হাসান গাবতলি সদর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, তার বিরুদ্ধে গাবতলি থানায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি সহ একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। গণমাধ্যমকে ভুক্তভোগীগন ও এলাকাবাসীরা জানান, পাপুল, ফারুকদের অত্যাচারে এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এলাকাবাসী আরো জানান, নতুন বাড়ী নির্মাণ করতে গেলে তাদেরকে চাঁদা দিতে হয়, চাঁদা না দিলে বাড়ীর কাজ বন্ধ করে দেয় তারা, এছাড়াও শুনতে হয় প্রাণনাশের হুমকি। ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যা মকবুল হোসেন জানান, গুটি কয়েক সন্ত্রাসীদের কাছে আমরা এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে আছি। প্রতিবাদ করলেই শুনতে হয় হত্যা হুমকি, ছাড়তে হয় ঘরবাড়ি। সরকার দলীয় নাম ভাঙ্গিয়ে এরা এসব তাণ্ডব চালায়, প্রাণের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। এলাকার আরেকজন ভুক্তভোগী মোঃ বাচ্চুর ছেলে ফারুক (৪২) জানান প্রতিবাদ করায় গত ১৪ই আগষ্ট রাতে দুর্বৃত্তরা আমার খড়ের পালায় আগুন লাগিয়ে দেয় এবং বলে এরপর বড় ক্ষতির জন্য অপেক্ষা কর। সরকার দলীয় বিভিন্ন নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এরা চালাচ্ছে এসব অপকর্ম। ভুক্তভোগীর পরিবার প্রান সঙ্কায় থাকতে পারছে না নিজ বাড়ীতে, বিপরিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আসামীরা দিব্যি দিনে রাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকাতেই। ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসীর দাবি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে কঠিনতম শাস্তি দেয়া হোক। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাবতলি থানার (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওসি মোঃ জিয়া লতিফুল ইসলাম ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ বাবলু হোসেন জানান, মামলা হয়েছে এবং আসামীদের গ্রেফতার করার সকল প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। আসামীদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।