মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়ার শাজাহানপুরে আলোচিত দু’টি ছিনতাই ঘটনার ক্লু উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই ছিনতাইকারীকে। উদ্ধার হয়েছে লুন্ঠিত ৩১ হাজার টাকা, দুইটি চাকু, জব্দ করা হয়েছে মোটরসাইকেল। ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল মালিককে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে। এখনো ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে ছিনতাই চক্রের মূল হোতা।
জানা গেছে, গত ১৬ মে শনিবার দিন-দুপুরে উপজেলার শাকপালা দীঘির পাড় এলাকায় গ্রামীণফোন কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি চকলোকমান এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় থানায় মামলা হয়। অপরদিকে, গত ৫ মে উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের জোড়া কৃষি কলেজ এলাকায় সোনালী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখার ম্যানেজার ও সিনিয়র অফিসারকে ছুরিকাঘাত করে ব্যাংকের ভল্টের চাবি, নগদ প্রায় ১০ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয় । উক্ত দু’টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ক্লু উদঘাটনে মরিয়া হয়ে উঠে থানা পুলিশ।
গত শনিবার ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার সন্দেহে থানা পুলিশের অভিযানে আটক হয়, উপজেলার সাজাপুর উত্তর পাড়া গ্রামের আফছার আলীর পুত্র আব্দুল মজিদ(৩২), চোপীনগর মন্ডলপাড়ার মৃত সমছ উদ্দিনের পুত্র সেলিম মন্ডল(২৮), খলিশাকান্দি গ্রামের মৃত শাহীনুর রহমানের পুত্র সোহেল(২৮) ও সাজাপুর পাইকার পাড়ার মোখলেছুর রহমান মন্টুর পুত্র নাজমুল হুদা নাহিদ(২২)।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, পৃথক দু’টি ছিনতাই কাজে নাজমুল হুদা নাহিদের ইয়ামাহা কোম্পানির ফিজার মোটরসাইকেল (যার রেজি:নং-বগুড়া ল -১১-৫৫৪১) ব্যবহৃত হয়েছে। ছিনতাইয়ে সরাসরি অংশ নেয় আব্দুল মজিদ ও সেলিম মন্ডল। সোহেল ছিনতাইয়ে জড়িত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ছিনতাইকারী দলের মূল হোতা মোটরসাইকেল মালিক নাহিদের সম্পর্কে প্রতিবেশী চাচা হয়। সেই চাচা নাহিদের কাছ থেকে দু’টি ছিনতাইয়ের দিনেই জরুরী কাজের কথা বলে মোটরসাইকেল নিয়ে ছিনতাই করে। গ্রেফতারের স্বার্থে পুলিশ তার নাম গোপন রাখে।
শাকপালা এলাকার ছিনতাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) ডেভিড হিমাদ্রী বর্মা বলেন, ছিনতাইয়ে মোটরসাইকেল যোগে দু’জন অংশ নেয়। আব্দুল মজিদ নামের এক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছিনতাই হওয়া এক লক্ষ বিশ হাজার টাকার মধ্যে তাঁর কাছ থেকে ৩১ হাজার টাকা, একটি বার্মিজ চাকু ও একটি সাধারণ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। অপরজনকে গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। মোটরসাইকেল মালিক নাহিদের কোন সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাঁকে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে। সোমবার আদালত নাহিদের জবাববন্দি রেকর্ড করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছিনতাইয়ের অপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) ওবায়দুল্লাহ আল মামুন জানান, তাঁর ছিনতাই মামলায় আব্দুল মজিদ ও সেলিম মন্ডল নামের দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে । একটি বার্মিজ চাকু ও একটি সাধারণ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে থানার অফিসার ইনচার্জ আজিম উদ্দিন মোটরসাইকেল মালিক নাজমুল হুদা নাহিদকে ছিনতাই মামলার সাক্ষী বানানোর কথা অস্বীকার করে বলেন, সোহেলকে অন্য ঘটনায় আটক করা হয়েছিল । সে ঘটনায় জড়িত না থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দু’টি ছিনতাই ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল মালিক নাজমুল হুদা নাহিদকে কেন আইনের আওতায় আনা হল না জানতে চাইলে ওসি বলেন, দু’টি ছিনতাইয়ে নাহিদের এখনো কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলছে । তদন্তে নাহিদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে অব্যশই আইনের আওতায় আনা হবে ।