রণিকা বসু মাধুরী, বাগেরহাট থেকে :
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ আর আমাদের এই নদীমাতৃক দেশে বর্ষাকালে নদীগুলো ভয়ংকর হয়ে ওঠে,আর এই নদীগুলো স্রোতে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে। উপকূলীয় অঞ্চল গুলোতে দেখা দেয় নদী ভাঙ্গন। এই নদী ভাঙ্গনের কারণে অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। ফসলের জমি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর ও অনেক ছোট-বড় নদী থাকার কারণে, বর্ষাকালে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ অনেক কষ্টে দিন যাপন করেন।এমনই একটি জেলা বাগেরহাট উপজেলা শরণখোলা।।
বাগেরহাট জেলার শরণখোলায় অতিরিক্ত বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জোয়ারে সাউথখালী অংশের বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হতেই ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে দু’ গ্রামের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
২০০৭ সালে প্রলঙ্করী ঘূর্নিঝড় সিডরে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শরণখোলা ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলার মানুষের সব থেকে জানমালের ক্ষতি হয়। এর পর থেকে ঝড় ও জলচ্ছাস থেকে বাঁচতে দুই উপজেলাবাসীর একটাই দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
গত শুক্রবার সাউথখালি ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর পাড়ের গাবতলা-বগী গ্রাম সংলগ্ন বাঁধের ৪০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান উপকূলীয় বাঁধ নির্মান প্রকল্পের (সিইআইপি) কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং ভেঙে যাওয়া স্থানে জরুরি ভিত্তিতে একটি রিং বেড়িবাঁধ দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
গতকাল রোববার সকালে শরণখোলার ভাঙ্গন কবলিত স্থানে পরিদর্শনে যান বাগেরহাট-৪, আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন। এ সময় তার সাথে ছিলেন মোড়েলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএমদাদুল হক, শরণখোলা আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম খোকন, আজমল হোসেন মুক্তা, আ. হক হায়দার, চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন ও মোড়েলগঞ্জ যুবলীগ নেতা এ্যাড. তাজিনুর রহমান পলাশ প্রমুখ।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০১৫ সালে উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি) নামে প্রকল্প হাতে নেয়। জমি অধিগ্রহণের পর ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি বেড়িবাঁধ ও ¯সুইচগেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের প্রায় ৬০ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছে, ওই স্থানে দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হলে শরণখোলার গাবতলা ও বগী দুই গ্রামের অনেক অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন, বাব-দাদার জমি সব বলেশ্বর নদীর ভাঙনে চলে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়ে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদুজ্জামান খান বলেন, ৩৫/১ পোল্ডারের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বগী ও গাবতলা এলাকার দুই কিলোমিটার অংশে নদী শাসন ও জমি অধিগ্রহণ জনিত কিছু সমস্যা রয়েছে। যার ফলে ওই স্থানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না। ভাঙন কবলিত স্থানে শনিবার থেকে রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হলে, এই অঞ্চলের মানুষ অনেক উপকৃত হবে।