ব্যক্তি নয় জাতির স্বার্থে কাজ করার আহবান স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর

জাতীয়

বিশেষ প্রতিবেদক :
দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে দেশের তরে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

আজ রাজধানীতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, পুরো জাতির উন্নয়ন না করে শুধু ব্যক্তির উন্নয়ন করে দেশকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে নেয়া যাবে না। সবার আগে আমরা এদেশের নাগরিক। দেশের বাহিরে ব্যক্তি নয় দেশ দিয়ে উন্নয়নের মাপকাঠি করা হয়। তিনি বলেন এমন কিছু করা যাবে না যাতে আগামী প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মো. তাজুল ইসলাম জানান, এক সময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ মুছে ফেলা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যারা জীবন বাজি রেখে সকল মায়া ত্যাগ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। তাঁদেরকে তিরস্কার করা হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক তৈরির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করেছে।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দিয়ে নানা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।

ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে গোটা জাতিকে বিভক্তি করার চেষ্টা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জয় বাংলা স্বাধীনতার স্লোগান। বাংলাদেশের জন্মের স্লোগান। এই স্লোগানকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। যারা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অস্বীকার করে, জয় বাংলা বুকে ধারণ করে না। এই গোষ্ঠী দেশের স্বাধীনতাকে কখনোই মনে প্রাণে মেনে নেবে না এটাই স্বাভাবিক। এরাই দেশে বসে স্বাধীনতার বিরোধিতা করে। দেশে অরাজকতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করবে তাদেরকে তো স্যালুট দেয়া যাবে না। তাদের সাথে কখনো বন্ধুত্ব হতে পারেনা।

মন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য জাতির পিতা সারা জীবন লড়াই-সংগ্রাম ও আন্দোলন করেছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন। তাঁর চিন্তা-চেতনায় ছিলো মানুষের কল্যাণ করা। একই ভাবে তাঁর সন্তানরাও সেই মানসিকতা নিয়ে বড় হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং কার্যক্রমে তা প্রমাণ করে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কাছে বাঙালি জাতী আজীবন কৃতজ্ঞ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধান অতিথি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো তারা এদেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন করতে পারেনি। দেশকে ভিক্ষুক আর মিসকিনের জাতিতে রুপান্তরিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশকে দারিদ্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হয়েছেন। সকল খাতে আজ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল বহু প্রতীভার অধিকারী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ। নতুন প্রজন্মের কাছে শেখ কামাল অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন বলেও জানান মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এছাড়া এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী সেখ মোহাম্মদ মহসীন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে, সকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বননী কবরাস্থানে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.