মুন্সিগঞ্জে প্রবাসীর ক্রয়কৃত জমি দখল ও মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ

অপরাধ

আরিফ হোসেন হারিছ :
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে প্রবাসীর ক্রয়কৃত জমি দখল ও হামলা এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির করার অভিযোগ উঠেছে মালখানগর ইউনিয়নের উত্তর ফুরসাইল গ্রামের জীবন মন্ডলের স্ত্রী আলো রানী মন্ডলের বিরুদ্ধে ।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের উত্তর ফুরসাইল গ্রামের মৃত সিরাজুদ্দীনের ছেলে হাছান (শাহাব উদ্দিন) একই গ্রামের রাধাবল্লবে ছেলে সুনিল মন্ডলের কাছ থেকে ফুরসাইল মৌজার ক তফসিলের ১ নং দাগের ৩৩ শতাংশ পরিমাণ জমি হতে ২৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন হাছান (শাহাবুউদ্দিন)। ক্রয় করার পরে হাছান শাহাবুদ্দিন প্রবাস সিংগাপুর চলে গেলে সুনিল মন্ডলের ভাই শান্তি মন্ডলের ছেলে জীবন মন্ডল শাহাবুদ্দিন এর ক্রয়কৃত জমি ওয়ারিশ দাবী করে দখল করে। এতে ছেলে রফিকুল ইসলাম (২০) স্ত্রী সালমা বেগম দখলের বাধা দিলে স্থানীয় মেম্বার হারুন মিয়ার নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।

এবিষয়ে গত ২৭ মে সিরাজদিখান থানায়
সিঙ্গাপুর প্রবাসী হাছান (শাহাব উদ্দিন) এর স্ত্রী সালমা বেগম বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হয়রানি করার জন্য সংখ্যালঘুর উপর হামলার অভিযোগ এনে জীবন মন্ডলের স্ত্রী আলো রানী মন্ডল বাদী হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করেন।

জীবন মন্ডলের স্ত্রী আলো রানী মন্ডল জানান আমাদের জমির কোন বন্টননামা হয়নি কোন ভাগবাটোয়ারাও হয়নি। আর শাহাব উদ্দিনের ক্রয় করা জমিও ঠিক আছে আমরা কারো জমি দখল করি নাই। আমরা আমাদের জমিতেই আছি।

ভুক্তভোগী প্রবাসীর শাহাব উদ্দিনের স্ত্রী সালমা বেগম জানান আমাদের ক্রয়কৃত জমি দখল করার উদ্দেশ্যে জীবন মন্ডলের স্ত্রী আলো রানী মন্ডল ঘর নির্মান করলে আমি ও আমার ছেল বাধা দিলে হারুন মেম্বারের নির্দেশে আলো রানী মন্ডল গংরা আমাদের উপর হামলা করে আমাকে ও আমার ছেলেকে রক্তাক্ত জখম করে। এবিষয়ে গত২৭ মে ২০২১ ইং তারিখে আমি বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরে ২৮ মে মিমাংসা করার জন্য মালখানগর ইউনিয়ন পরিষদে ডাকানো হয়। বিবাদী ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে কোটে আমাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুর উপর হামলার অভিযোগে মামলা করেন।

সুনিল মন্ডলের স্ত্রী সাধনা রানী মন্ডল (৬০) জানান,আমরা জীবন মন্ডলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের পৈত্রিক বসতবাড়ি বিক্রি করে আমাদের এখন ভাড়াবাড়ীতে থাকতে হচ্ছে। এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মহিউদ্দিন আহম্মেদ এর নিকট বিচারের জন্য ২ বছর ঘুরেও বিচার পাইনাই তাই আমাদের পৈত্রিক বসতবাড়ি বিক্রি করে আসতে হয়েছে। আমাদের বসতবাড়ি বিক্রি করে চলে আসার সময় হারুন মেম্বার আমার বড় ছেলে তপন মন্ডলকে ভুল বুঝিয়ে আমার বিরুদ্ধে নিয়ে নেয়। সেই থেকে আমার ছেলে আমাদের সাথে খারাপ আচরন করে। হারুন মেম্বার ও আমার বড় ছেলে তপন মন্ডল মিলে আমাদের কাছে থেকে ৪ লক্ষ টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে আমাদের উপর অত্যাচার মাত্রা বেড়ে যায়। তাই আমরা ৩ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য হই।এই শোকে আমার স্বামী সুনিল মন্ডল গত ২৮ জুন মারা যায়।

মালখানগর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হারুন মিয়া জানান আমি এবিষয়ে কয়েক বার বসে মিটমাট করার চেষ্টা করেছি। জমির পরিমান ও ঠিক আছে। সমস্যা হলো উচু আর নিচু নিয়ে একজন চায় আমি উচুতে থাকবো নিচু জমি নিবো না। আরেক জন বলে উচু জমি আমার নিচু জমি তোমার এই হলো বিষয়। শাহাবুদ্দিন ও জীবন মন্ডল প্রবাস (সিংগাপুর) থেকে দেশে আসলে বসে মিমাংসা করার চেষ্টা করবো।

এবিষয়ে সিরাজদিখান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান,শাহাবুদ্দিন ও জীবন মন্ডল প্রবাসে (সিংগাপুর) থাকায় মিমাংসা করতে বিলম্ব হচ্ছে। শাহাবুদ্দিন ও জীবন মন্ডল দেশে আসার সাথে সাথেই বসে সমস্যাটি মিমাংসা করে দিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.