শ্যামনগর থানার ওসি রহস্যজনক নিরব
বিশেষ প্রতিবেদক :
গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ১০নং আটুলিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের পূর্ব বিড়ালাক্ষী গ্রামের দিনমজুর মোঃ ইমদাদুল সরদার এর স্ত্রী রওশনারা বেগম (৪৫) নামে এক অসহায় নারীকে প্রকাশ্যে মারধর ও শ্লীলতাহানীর ঘটনায় চিকিৎসা নিয়ে সামান্য সুস্থ হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মোঃ আবুল কালাম আজাদ ভুক্তভোগীকে প্রথমে অভিযোগ করতে বলেন। ওসির ভরসায় অভিযোগ দায়ের করলে ১ নং আসামি সহ মোট ৪ জনকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে রাখেন ওসি। ওসি ভুক্তভোগীকে থানায় ডেকে নিয়ে মামলা না নিয়ে পরে ওসির সামনে তারই নির্দেশে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সালেহ বাবু ও ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আখতারুজ্জামান লিটিলের ভাই মোঃ মনিরুজ্জামান সানাকে দিয়ে একাধিক মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ভবিষ্যতে মামলা দায়ের না করতে কৌশলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও তাদের শেখানো বুলি জোরপূর্বক মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে নিয়ে ওসি ইউপি চেয়ারম্যানকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করাতে বললে মনিরুজ্জামান সানার অনিবন্ধিত ও রেজিষ্ট্রেশন বিহীন নিজস্ব হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অপ-চিকিৎসা চালিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করলে কৌশলে পালিয়ে গিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন ভোক্তভোগী নারী। দীর্ঘদিন সু-চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে তিনি বিচারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ মহা-পরিদর্শক সহ বিভিন্ন প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করলে ঘটনা ধামাচাপা বন্ধ হয়। উক্ত অভিযোগের পর বেশ কয়েকটি অনলাইন এ প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদটি প্রকাশিত হলে ভুক্তভোগী ঐ নারী গত ১৪/০৯/২৩ ইং তারিখে পূর্বের ন্যায় এজাহার নিয়ে শ্যামনগর থানায় গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আবুল কালাম আজাদ ভুক্তভোগীর দেয়া এজাহারটি গত ১৫/১০/২৩ ইং তারিখ রাতে আমলে নিয়ে সাব ইন্সপেক্টর সরল কুমার বিশ্বাসকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। এদিকে থানায় মামলার খবর পেয়ে বিবাদীগণ প্রথমে বাদিনীর সাথে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করলে বাদিনী কোন ভাবেই আপোষে রাজি না হওয়ায় বিবাদীগণ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সালেহ বাবুর সাথে পরামর্শ করলে ইউপি চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক ওসি সাহেব ডেকেছে বলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে গিয়ে ওসি সাহেবের সাথে দেখা করেন বলে স্থানীয়রা জানান। ওদিকে বাদিনী মামলার কথা শুনতে ওসি সাহেবকে ফোন করলে বলেন আপনার মামলা হয়ে গেছে এখন ফোন রাখেন বলে বার বার ফোন কেটে দেন। পরদিন ১৬/১০/২৩ ইং তারিখে সকল বিবাদীগণ সকালে প্রাইভেট কারে সাতক্ষীরায় কোর্টে জামিনের উদ্দেশ্য যাচ্ছেন এমন কথায় কিছুতা সন্দেহ হলে বাদিনী দ্রুত থানায় গিয়ে মামলার কপি চাইলে কোন ভাবেই সন্ধ্যায় আগে দিতে পারবে না বলে এড়িয়ে গেলে সন্দেহ তখন বিশ্বাসে পরিনত হয়। ঘটনার শেষ দেখতে মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত সাতক্ষীরা কোর্ট প্রাঙ্গণে গেলে সকল আসামিদের হাসতে হাসতে জামিন পেয়ে বের হতে দেখে বুঝতে আর বাকী নেই এগুলো ঘুষ লেনদেনের কেরামতি। আদালত থেকে রাতে বাড়িতে আসতেই বিবাদীদের হুমকির মুখে তারা বলছে কিছুতেই আমাদের এখানে বসবাস করতে দিবে না। একটা মামলার পরিবর্তে তারা একাধিক মামলা দিবে। এখন কার কাছে চাইবো বিচার? কোথায় যাবো কিছুতেই ভেবে পাইনা। কোনদিন কি সমাজ এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার বিচার পাবে না? নাকি ঘুষের তলে ডুবে যাবে একাধিক সত্য! পরিবারের সদস্যরা ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে চরম আতঙ্কে রয়েছে। এসব কথা ভাবতে ভাবতে একদিন পার হলো পরদিন রাত আনুঃ ০৩:০০ ঘটিকায় হঠাৎ কে যেন ডাকছে। জেগে দেখি আগুন আর আগুন। কিন্তু আগুন জ্বালোনোর লোক দেখতে পেলাম না। সকালে বিচার পাবার আশায় জিডি লিখে আবার ও থানায় গেলেও ওসি সাহেবের সাথে আর দেখা মেলে না। তদন্তকারী কর্মকর্তা ছুটিতে যাবেন তিনি কিছুই করতে পারবেন না। ডিউটি অফিসার ইন্সপেক্টর মোমরেজ আলী বলেন, মামলার আয়োর সাথে যোগাযোগ করুন আর ওসি সাহেব নাই। উনি আসলে কথা বলে ব্যবস্থা নিব। তবুও এক কপি জিডি রেখে এসেছি। মোবাইল ফোনে কেঁদে কেঁদে ভুক্তভোগী ঐ নারী এসব কথা প্রতিবেদককে বলেন ভোক্তভোগী নারী বলেন মামলা করার পরও থানার ওসি রহস্যজনক নিরব। তবে অতি দ্রুত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আদালতের স্মরনাপন্ন হবেন বলেও জানা গেছে।