নারায়ণগঞ্জে চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে নীলা-ফুলা জখম

অপরাধ

সুচিত্রা রায় :
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাথী বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত (৪ সেপ্টেম্ব) সন্ধ্যা সতটায় আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পুরিন্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

সাথী বেগম বলেন পাশের বাড়ির একটা মেয়ে নাম ইয়া(১৫) আমার বাড়িতে আসে।এসে আমার মেয়ে সুমাইয়া(৪) কে ডেকে বলে চলো আমার বাড়ি। তখন আমার মেয়ে বলে আম্মু আমি যাবো।আমি বলি না এখন অনেক রোদ বাইরে যেতে হবে না।ইয়া আমার মেয়েকে হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে ইয়া।তখন আমি বলি গিয়েই চলে আসলি য়ে তখন ইয়া বলে।আপনার মেয়ে আমার বাড়িতে থাকতে চাইলো না তাই ওকে দিতে আসছি।
সেই দিন আমার ভাসুর বেড়াতে গিয়েছে খালা শাশুড়ীর বাড়িতে। ওখান থেকে এসে দেখে ঘরের দরজা খোলা তালা ভাঙা।ঘরের সবকিছু এলোমেলো নতুন ঘর করেছে আমার ভাসুর।আমার ভাসুর আমার বাড়িতে এসে আমার শাশুড়ীকে বলে।মা তোমরা কি আমার বাড়িতে গেয়েছিলা।তখন আমি আর আমার শাশুড়ী বলি কই না-তো কেন কি হয়েছে।আমার ভাসুর বলে আমি এসে দেখি ঘরের দরজা খোলা ঘরের সব এলোমেলো। তখন আমার শাশুড়ী বলে চলতো দেখি,সাথে সাথে আমার মেয়ে বলে বড় আব্বু ইয়া তালা ভেঙে তোমার বাড়িতে গিয়েছিল আর সব কিছু ওই করেছে।তখন আমরা সবাই মিলে ভাসুরের বাড়ি দৌড়ে যাই।গিয়ে দেখি,শোকেচ খোলা,তোষক উল্টানো, ফ্রিজ খোলা,শাশুড়ী বলে দেখ সব কিছু ঠিক আছে কি না।সব দেখে ভাসুর বলে মা সত্তর হাজার টাকা ছিলো,চেইন,কানের দুল,আংটি কিছুই নেই।তখনি আমার ভাসুর শাশুড়ী দুই ননদ আমরা মিলে ইয়াদের বাড়িতে যাই।আমার শাশুড়ী ইয়ার মাকে ডেকে বেলে তোমার মেয়ে আমার বড় ছেলের বাড়িতে ঘরের তালা ভেঙে এগুলো করেছে।তখনি ইয়ার মা বলে কে দেখেছে তখন আমি বলি আমার মেয়ে দেখেছে।বলার সাথে অকথ্য ভাসায় গালিগালাজ শুরু করে। আর বলে এগুলো সব মিথ্যে কথা নিজেরা করে আমার মেয়ের উপরে দোষ চাপাচ্ছো।তখন আমি বলি আমার মেয়ে ছোট মানুষ ও কেন মিথ্যা কথা বলবে,আগে তো কখনো এরকম বলেনি।এ কথা বলায় ওরা ২/৩ জন মিলে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারা শরু করে।সাথে সাথে আমি জ্ঞান হারাই।পরে আমার ভাসুর আর শাশুডী ও ননদ মিলে। আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসে।কিছুক্ষণের মধ্যে সামাদ,দুলাল,ইমন,আশিক ওরা চার ভাই মিলে।লাঠিসোঠা দা, শাবল ছুরি ইত্যাদি নিয়ে,এসে আবার আমারে মারা শুরু করে।আমার ভাসুর ঠেকাতে গেলে,হত্যার উদ্দেশ্যে সজোরে মাথায় কাঠের টুকরা দিয়ে বাড়ি মারে।আমার ভাসুরের মাথা ফেটে যায়।ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।আমাদের ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন আগাইয়া আসলে উক্ত বিবাদীগণ আমাদেরকে প্রকাশ্যে খুন করার হুমকি দিয়ে বলে যে, আমাদেরকে সময় সুযোগমত পাইলে খুন করিয়া লাশ গুম করে ফেলবে।একই কথা বলেন সাথীর ভাসুর মোঃ ফারুক মিয়া।

মোঃ সুরুজ মিয়া (ওরফে) সাথীর শ্বশুর বলেন আমি বাদী হয়ে থানায় একটা লিখিত অভিযোগ করেছি।ছেলে ও ছোট ছেলের বউ বর্তমানে আড়াইহাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি আছে।আমার ছেলের মাথা ফেটে গেছে মাথায় সাতটা সেলাই লেগেছে।আর ছেলের বউ অন্তঃসত্ত্বা বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।এটার সুষ্ঠ বিচার চাই আমি।

সাথীর স্বামী মোঃ সাদ্দাম মিয়া বলেন।আমি গাড়ি চালাই আমি বাড়িতে ছিলাম না।এই ঘটনাগুলো শোনার পর আমি অদুত চেয়ারম্যানের ভাইয়ের কাছে বিচার নিয়ে যাই।চেয়ারম্যানের ভাই(মোশারফ)বলে তোর কনো বিচার নেই।তুই অন্য দল করিস,তুই কোথাও গিয়ে কোন বিচার পাবি না।তখন মোঃসাদ্দাম মিয়া বলে ভাই আমি কনো দল করিনা কাজ করি ভাত খাই।না তুই আজাদ সাহেবের লোক তোর কনো বিচার নেই।ওখান থেকে বিচার না পেয়ে আমার মা কে সাতগ্রাম ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি হিমেলের কাছে পাঠাই।হিমেল বলে আমি দায়িত্ব নিয়ে এটা সামাজিক ভাবে বসে বিচার করে দিবো।পরে হিমেল ও আমাদের সাথে আর যোগাযোগ করেনি।মোঃসাদ্দাম মিয়া আরো বলেন আমার স্ত্রী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।তার অবস্থা খুব খারাপ,আজ আট দিন ধরে আমরা হাসপাতালে পড়ে আছি।আমি একদিন কামাই-রোজগার না করলে আমরা একদিন চলে না।আট দিন ধরে হাসপাতালে পড়ে আছি।আমার বউয়ের চিকিৎসার খরচ আর চালাতে পারছিনা। হয়তো চিকিৎসার অভাবে আমার স্ত্রী বাঁচাতে পারবো না।প্রশাসনও চুপচাপ বসে আছে,আজা আট দিন হয়ে গেল তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

সাতগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করলে।উনি বলেন কোন ব্যাপারে আপনি বলছেন আমি বুঝতে পারছি না।আমি একটা দরবারে আছি আপনার সাথে পরে কথা বলবো।এরপরেও একাধিক বার মুঠোফোনে কল করলে শে আর ফোন কল রিসিভ করেনি।

সাতগ্রাম ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতির সাথে মুঠোফোনে এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে হিমেল বলেন থানা পুলিশের কোন দরকার নেই। আমি নিজের দায়িত্ব নিয়ে এটা মীমাংসা করে দিব।ইমেলের কাছে আরো জানতে চাইলে বিবাদীগণের সাথে তাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করাতে পারবেন কিনা।হিমেল বলেন তাদের নাম্বার আমার কাছে নেই।তাদের সাথে যোগাযোগ করতে হলে আপনাকে এলাকায় আসতে হবে।অনেক ভেবে চেষ্টা করেও বিবাদীগনের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃসাইফুল ইসলাম বলেন একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।আমি ঘটনাস্থলে ও গিয়েছিলাম।ঘটনা সত্য এটা প্রমাণ পেয়েছি, (ওসি)স্যারের সাথে কথা বলে কঠিন অবস্থা নিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.