ডেস্ক রিপোর্ট :
ঢাকার দুই সিটিতে (উত্তর ও দক্ষিণ) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে এ ভোটগ্রহণ চলছে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ব্যবহার হচ্ছে ২৮ হাজার ৮৭৮টি ইভিএম।
উত্তরে মেয়রপদে ৬ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৭৭ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর দক্ষিণে মেয়রপদে ৭ জন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৮২ জন এবং সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ৩২৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর আগে ভোটকক্ষের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ইভিএম মেশিন সেটআপ করেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রের সকল ভোটকক্ষের ব্যবহৃত ভোটিং মেশিন চালু করার জন্য নিরাপত্তা পিন কোড ও পাসওয়ার্ড গোপনীয়ভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর থেকে গ্রহণ, সংরক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সরবরাহ করেন। এরপর অডিট কার্ড প্রবেশ করিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা/সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা পাসওয়ার্ড/পিন প্রদান করে মেশিনের জিজ্ঞাসা অনুযায়ী আঙুলের ছাপ প্রদান করে ভোটগ্রহণের জন্য ইভিএম মেশিন প্রস্তুত করেন। আর ভোটগ্রহণের আগে মেশিনের অপর কার্ড স্লটে পোলিং কার্ড প্রবেশ করান। ভোটগ্রহণের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হলে অডিট কার্ডটি বের করে নেন।
বিকেল ৪টার পর ভোটগ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মেশিনে পুনরায় অডিট কার্ড প্রবেশ করিয়ে এন্ড পোল করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম শেষ করবেন।
দুই সিটিতে মোট ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার রয়েছেন। মোট সাধারণ ওয়ার্ড ১৩৩টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৪৩টি, ভোটকেন্দ্র ২ হাজার ৪৬৮টি, ভোটকক্ষ ১৪ হাজার ৪৩৪টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ ১ হাজার ৬৩০টি থাকছে দুই সিটিতে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ জন এবং নারী ভোটার ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। উত্তর সিটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ৩১৮টি মোট সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৪টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ১৮টি। এ ছাড়াও অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা রয়েছে ৭৫৪টি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ জন এবং নারী ভোটার ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন। দক্ষিণ সিটিতে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ১৫০টি এবং ভোটকক্ষের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৮৮টি। মোট সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৫টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ২৫টি। এ ছাড়াও অস্থায়ী ভোটকক্ষের সংখ্যা রয়েছে ৮৭৬টি।
যেভাবে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা
নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রের ভোটাররা ভোট দেয়ার জন্য আঙুলের ছাপ/ভোটার নম্বর/ জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর/স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিজেকে ভোটার হিসেবে শনাক্ত করছেন। বৈধ ভোটার হিসেবে শনাক্ত ভোটারকে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে গোপন কক্ষে রক্ষিত ইলেকট্রনিক ব্যালট ইউনিটে (৩টি পদের) ব্যালট ইস্যু করছেন। ব্যালট ইউনিটে ব্যালট ইস্যু করার পর ভোটার গোপন কক্ষে প্রবেশ করে তার পছন্দের প্রার্থী ও প্রতীক দেখে তার ডান দিকের বোতামে চাপ দিয়ে সিলেক্ট করছেন এবং ওই ব্যালট ইউনিটের সবুজ রঙয়ের কনফার্ম বোতাম চেপে ভোট সম্পন্ন করছেন।
যেভাবে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উত্তর সিটিতে কাজ করছেন ২৭ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে ৩৭ জন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তর সিটিতে ৫৪ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে ৭৫ জন কাজ করছেন।
পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল ফোর্স (প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি) উত্তর সিটিতে ৫৪টি ও দক্ষিণে ৭৫টি; স্ট্রাইকিং ফোর্স (প্রতি ৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি) উত্তরে ১৮টি ও দক্ষিণে ২৫টি এবং রিজার্ভ স্ট্রাইকিং (প্রতি থানায় একটি করে) উত্তরে ২৭টি ও দক্ষিণে ২৫টি কাজ করছে। প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে টিম উত্তরে ৫৪টি ও দক্ষিণে ৭৬টি র্যাবের টিম কাজ করছে।
দুই সিটিতে ৬৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছেন। তাদের মধ্যে উত্তরে থাকবে ২৭ প্লাটুন এবং দক্ষিণে থাকবে ৩৮ প্লাটুন বিজিবি। প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডে ১ প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৬ জন অস্ত্রসহ পুলিশ (একজন এসআই ও ৫ জন এএসআই, কনস্টেবল), দুইজন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার এবং ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য (৪ জন ও ৬ জন পুরুষ) মোতায়েন রয়েছে। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ চারজন পুলিশ (এসআই/এএসআই একজন ও তিনজন কনস্টেবল), দুইজন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার, ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য (৪ জন নারী ও ৬ জন পুরুষ) মোতায়েন রয়েছে।
যেভাবে ফল দেয়া হবে
বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষে ইভিএমে প্রাপ্ত ফল প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তা সংশ্লিষ্ট পদের ভোট গণনার বিবরণীতে (ফরম-ঞ, ঞ-১, ঞ-২) লিপিবদ্ধ করার পর সেটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক কপি প্রিন্ট করে প্রার্থী, নির্বাচনী এজেন্ট, পোলিং এজেন্ট ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের প্রদান করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যানবাহনে করে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফলাফল প্রেরণ নিশ্চিত করবেন।
দ্রুত ফলাফল প্রেরণের জন্য ক্ষেত্র বিশেষে (নেটওয়ার্কে সমস্যা থাকলে) একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার/পোলিং অফিসার ভোটকেন্দ্রে বিধি মোতাবেক ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যানবাহনে করে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ফলাফল প্রেরণ নিশ্চিত করবেন।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা/সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাছে রিটার্নিং কর্মকর্তা/সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে তা দ্রুত প্রকাশ করবেন।
ইভিএম সংশ্লিষ্ট সকল ভোটকেন্দ্রের সার্বিক ফলাফল সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে।