চীনে করোনাভাইরাস মৃতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক :
চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ড ও এর বাইরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০৩ জনে। এর মধ্যে শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশে ৭৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আঞ্চলিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রতিষেধকবিহীন এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪ হাজার ৮০০ জন। এর মধ্যে চীনের হুবেই প্রদেশে ২৭ হাজার আক্রান্ত হয়েছে। বিশ্বের ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। ২০ হাজারেরও বেশি এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি। আর তাদের মধ্যে ১১৫৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

করোনাভাইরাস মৃতের সংখ্যা ২০০২ সালে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স (সিভিয়ার অ্যাকুইটি রেসপিরেটরি সিনড্রোম) ভাইরাসকেও ছাড়িয়ে গেল। সে সময় সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের ২৪টিরও বেশি দেশে মোট ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়। আর এতে আক্রান্ত হয় ৮ হাজার ৯৮ জন।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের আক্রান্তের অনেক ঘটনায় হয়তো সামনে আসছে না। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার এক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সতর্ক করে বলেন, সরকারি তথ্য অনুযায়ী যে সংখ্যা জানানো হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ গুণ বেশি হতে পারে।

বিশ্বের অনেক দেশই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন থেকে আগতদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলো চীনগামী ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চীন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা লাগে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই জানা গেছে।

সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানা। তবে নতুন এই করোনাভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ থেকে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.