বাজারে পেঁয়াজ-রসুনসহ সবজির দাম কমলো

অর্থনীতি

এম শাহীন আলম :
ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় এবং দেশে রসুনের সরবরাহ বাড়ায় এ দুটি নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে বাজারে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা এবং রসুনের দাম ৭০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

গত সোমবার রাজধানীর যাএাবাড়ী,কাওরান বাজার, ফকিরাপুল, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে তুলনায় ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের দাম কমে ৮০-৯০ টাকা হয়েছে। আর আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০-১২০ টাকা।

আমদানি করা চীনা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০-২১০ টাকা কেজি। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে। আর দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০-১৬০ টাকা। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি রসুনের দাম কেজিতে কমেছে ৭০ টাকা।

পেঁয়াজ-রসুনের এই দাম কমার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সালাম বলেন, ভারত রফতানি বন্ধ করায় আমাদের এখানে হু হু করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এখন ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের আদেশ তুলে নিয়েছে। এ কারণে দাম কমেছে সব ধরনের পেঁয়াজের। আর দেশি রসুনের সরবরাহ বাড়ায় এর দাম কমেছে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে চীনা রসুনের দাম ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকা হয়ে গিয়েছিল। সে সময় দেশি রসুনের সরবরাহ কম ছিল। এখন বাজারে প্রচুর নতুন দেশি রসুন আসছে। এ কারণে সব ধরনের রসুনের দাম কমেছে।

মালিবাগের ব্যবসায়ী মোতালেব বলেন, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের আদেশ তুলে নেয়ায় ঘোষণা দেয়ার পরপরই শ্যামবাজারে পেঁয়াজের দাম কমে যায়। ভারত থেকে রফতানি শুরু হলে পেঁয়াজের দাম আরও কমে যাবে। আর বাজারে দেশি রসুনও আসতে শুরু করায় দাম কমা শুরু হয়েছে। আমাদের ধারণা, সামনে দাম আরও কমবে।

এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাউ, করলা, টমেটো, শশা, শিম, শালগম, মুলা, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে।

গত সপ্তাহে ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-১০০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা।

গত এক সপ্তাহে ৩০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম কমে ২০-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে গত সপ্তাহের মতো ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৬০ টাকা।

ভালো মানের শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। ফুলকপি পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫-৪০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। গাজর বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা। শালগম বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজি।

দাম কমার এ তালিকায় রয়েছে বেগুন, মুলা, কাঁচা মরিচও। গত সপ্তাহে ৩০-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুলার দাম কমে ২০-২৫ টাকা হয়েছে। ৬০-৭০ টাকার বেগুন দাম কমে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০-৩০ টাকা।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী রিপন বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। গত সপ্তাহে যে লাউ ১০০ টাকা বিক্রি করেছি, আজ তা ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। ৬০ টাকার পাকা টমেটো ৪০ টাকা হয়েছে। সবজির দাম এখন যে দামে আছে এর থেকে কমার সম্ভাবনা খুব কম।

রামপুরার বাসিন্দা সজিব বলেন, এবার শীতের ভরা মৌসুমে সবজির দাম বেশি ছিল। তবে হঠাৎ করে এখন লাউয়ের দাম কমেছে। করলা, কচুর লতিতে দাম এখনও অনেক বেশি। পেঁয়াজ ও রসুনের দাম কিছুটা কমেছে, তবে দাম আরও কমা উচিত। পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকার নিচে হওয়া উচিত।

এদিকে মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, শিং মাছ ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা, নলা ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা কেজি। পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৫৫০-৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০-৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাছ ও মাংসের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.