কুমিল্লার লাকসামে মুসলিম ব্যাক্তির লাশ দাফন না করে পোড়ানো হলো শ্মশানে! ক্ষুব্ধ স্ত্রী ও স্থানীয়রা

অপরাধ

কামরুল হাসান রবি :
কুমিল্লার লাকসামে মুসলিম ব্যাক্তির মৃতদেহ দাফন না করে পোড়ানো হলো চিতায়! সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে লাশ পোড়াতে সহযোগীতা করেন স্থানী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছে । ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে শুধু মাত্র সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতেই একজন মুসলিমানের লাশকে দাহ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মৃত ব্যাক্তির স্ত্রী।

ঘটনাটি ঘটেছে জেলার লাকসাম উপজেলা ৩ নং মুদাফরগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের শ্রীয়াং গ্রামে। গত ১৩ই জুন হার্টএটাক্ট করে মৃত্যু বরণ করার পর তার লাশ নিয়ে আশা হয় লাকসামের শ্রীয়াংয়ে তরা নিজ গ্রামে ।
পূর্বের নাম (হারু বাবু), দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর আগে শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহন করে মুসলমান হয়ে নতুন নাম রাখা হয় মোঃ হারুনুর রশিদ। ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার কারনে তার পরিবারের চাপে প্রায় ২৫ বছর আগেই রাজধানী ঢাকায় জীবিকার তাগিয়ে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করা শুরু করে ইসলামের বিধান মেনে। সেখানেই শিরিন আক্তার শিলা নামে এক নারীকে বিয়ে করে ২ সন্তানের জনক হয়ে কাটছিলো তাদের সংসার জীবন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মৃত হারুনুর রশিদের লাশটি দাহ্য করার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ৪ জন গণমাধ্যম কর্মী ছুটে যায়। তবে মাত্র ৪ হাজার টাকা উৎকোচ পেয়ে সংবাদের সত্যতা পেলেও তা প্রকাশ করেন নি। মৃত হারুনুর রশিদের ভাই শিপন ও বর্তমান মেম্বার চৌধুরীর যোগসাজেশে সম্পত্তি থেকে তার পরিবারকে বঞ্চিত করার জন্যই তার লাশটি দাহ্য করে ফেলে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে সাংবাদিকদের নিরবতায় হাতাশা প্রকাশ করে স্থানীয়রা।
মৃত হারুন রশিদের স্ত্রী শিরীন আক্তার জানান, গত ১৬/০৩/১৯৯৯ সালে আমরা দুইজনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। সংসার জীবনে আমাদের দুইটি কন্যা সন্তান আছে। বড় কন্যার বয়স ৮ আর ছোট কন্যার বয়স ২ বছর।
রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী ধোলাইপাড় এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা শিরীন আক্তার জানান, আমার স্বামী একজন মুসলিম। বিয়ের পর থেকেই নামাজ রোজা সহ সকল ধর্ম কর্ম পালন করতে দেখে এসেছি। তার লাশ কেনো আগুন দিয়ে জ্বালানো হলো? আমি এর বিচার কোথায়ও না পেয়ে লাকসাম থানায় হাজির হই। সেখানে অভিযোগ করলে ডিউটি অফিসার এএসআই আবদুর রব জানান, আমাদের ওসি স্যার এখন অফিসে নাই, আপনি আপনার নাম্বার দিয়ে যান আমি স্যারের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো।
মৃত হারুনুর রশিদ কে স্বামী দাবী করা স্ত্রী দুই সন্তানের জননী ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড় থেকে আগত শিরীন আক্তারের সাথে রোটারী ক্লাবের এফিডেভিটে পেপারে মৃত হারুনের নাম সাগর লেখা দেখিয়ে স্ত্রী শিরীন শীলা আরো জানান, সাগর নামেই আমাদের এলাকায় সে পরিচিত ছিলো এবং ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক আমরা দুইজনেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।
রহস্যজনক কারনে থানায় মামলা বা অভিযোগ না নেওয়ার বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসিকে ইঙ্গিত করে বিভিন্ন মন্তব্য করেন নও-মুসলিম হারুনের স্ত্রী শীরিন শীলা।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সে যে মুসলিম হয়েছে তা আমার জানা ছিলোনা। তবে আমার মনে হচ্ছে তার পরিবারের লোকজন ঠিকই জানতো। আর আমি গনমাধ্যম কর্মীদের কে দেখি স্থানীয় সর্দার মজিবুরের সাথে কথা বলছে এবং সেও তাদের সাথে কথা বলছে। এই জন্য আমি নিজেও গ্রামের লোকদের সাথে শরিক হয়ে কোন রকম বুঝ দিয়ে তাদের কে পাঠিয়ে দেই। তবে মৃত হারুন রশিদ একাধিক বিয়ে করেছে, এই পর্যন্ত ৪ টা স্ত্রী আসছে এখন শিরীন নামের মহিলাও আসছে, আমরা দেখছি এটার সুরাহা কি ভাবে করা যায়।

লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, মৃত ব্যক্তির স্ত্রী আমাদের কাছে এসেছে। যেখানে তিনি মারা গিয়েছে সেখানে মামলা বা অভিযোগ করতে বলেছি। অভিযোগ লাকসাম থানায় রেফার্ড করলে অবশ্যই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো বলে তাকে আশ্বস্ত করেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.