জি.এম জাহিদ হোসেন টিপু :
বাংলাদেশের রাজনীতিতে পিছনের দরজার কুশীলবরা আবার সক্রিয়। এটা নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে দেশী-বিদেশী কায়েমি স্বার্থবাদীরা এদেশে ডালপালা বিস্তৃত করে রেখেছে। স্বাধীনতার ঊষালগ্ন থেকে বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের যে অভিযোগ ছিল স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও একই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও । বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সংস্কার করে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনায় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তখন বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী অফিসার। তাদের সাথে আওয়ামী বিরোধী গ্রুপ যোগ দিয়ে ক্যান্টনমেন্ট সেনা ছাউনিতে প্রচার করতে থাকে শেখ মুজিব ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে, শেখ মুজিব ইসলাম ধর্মকে মুছে ফেল চায়, তাই শেখ মুজিব ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ইসলাম বিলীন হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধু পরবর্তী জিয়াউর রহমানের ৪ বছর ৭ মাস ক্ষমতাথাকা কালে জিয়াউর রহমান সরকারকে উৎখাতের জন্য সেনা অভ্যন্তরে ছোট বড় ১৮ ক্যু করা হয় তখনও সেনাছাউনিতে জিয়া বিরোধী প্রচার প্রোপাগান্ডা করে জাওয়ানদের উত্তপ্ত করে জিয়াকে হত্যা করা হয়। এরশাদের ৯ বছর ক্ষমতাকালেও সেনা ছাউনি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারকে উৎখাতে ১৯ বার ক্যু করা হয়। তবে এরশাদের ক্ষমতা হস্তান্তর হয় গণআন্দোলনের মাধ্যমে। প্রতিটা পরিকল্পনার কুশীলব সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা জড়িত থাকলেও সব সময় জেল-জুলুম ফাঁসি হয়েছে সাধারণ সৈনিকদের। সেনাবাহিনীর চেইন অফ কমান্ড এর সুযোগে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বলির পাঠা বানিয়েছেন সাধারণ সৈনিকদের । দীর্ঘ ক্যুতে সেনা অভ্যন্তরে অনেক সৈনিকের বুকের তাজা রক্ত ঝরলেও তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন করেনি কোন সেনা শাসক। সৈনিকদের কপালে ১বেলা ভাত আর ১বেলা রুটি ছাড়া তাদের কপালে কিছুই জোটেনি। খালেদা জিয়ার ডালভাত কর্মসূচির ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে। পিলখানা দেয়ালে কান পাতলে এখনো জওয়ানদের পরিবারের আহাজারি কানে বাজে। একমাত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই সেনাসদস্যদের তিন বেলা পেট ভরে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বেতন বহুগুণ বৃদ্ধি করেছেন একমাত্র শেখ হাসিনার সরকার। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে আধুনিকায়ন করেছেন, সমরাস্ত্রে সমৃদ্ধ করেছেন । তথাপিও সাম্প্রতিককালে বিদেশে বসে কিছুসংখ্যক চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা ইউটিউব ও অনলাইন টিভি চ্যানেল খুলে সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে কাল্পনিক মনগড়া বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করে শেখ হাসিনা সরকারকে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাতের আহ্বান জানাচ্ছে । এরা হলো সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর দেলোয়ার ও বহিষ্কৃত লেফটেন্যান্ট জেনারেল শফিক সহ কিছু সংখ্যক বিপথগামী চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা । এরা প্রবাসে পালিয়ে থেকে তারেক জিয়া এবং দেশের অভ্যন্তরে ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতায় এবং জামাত বিএনপি সমর্থিত সাংবাদিক কনক সরওয়ার ও সাংবাদিক ইলিয়াস সহ একটি চক্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাদের জন্য সেনাবাহিনীকে উস্কানী দিচ্ছে । এসব বহিস্কৃত সেনা সদস্যদের বিভ্রান্তি মূলক অপপ্রচারের এই তৎপরতা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। যে সমস্ত ফেসবুক আইডি থেকে দেশে বসে যারা এদের সমর্থন করে কমেন্টস করে তাদূর ও আইনের আওতায় আনা উচিত ৷ এই সমস্ত রাষ্ট্রদ্রোহীদের অবিলম্বে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার করে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলানো হোক। আমরা বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব তা সম্ভব ।