৩৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভায় পার্টি চেয়ারম্যানের বক্তব্য

অন্যান্য

প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সকলকে নতুন বৎসরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

১লা জানুয়ারী, ২০২২ জাতীয় পার্টির ৩৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ১লা জানুয়ারী, ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে দিন প্রথম প্রতিষ্ঠার দিন। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। জাতীয় পার্টির সকল স্থরের নেতা-কর্মী ভাই ও বোনদের জানাই অভিনন্দন শুভেচ্ছা। অসংখ্যা ভক্ত ও সমর্থকের জন্য রইল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

আমরা স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তী পালন করছি। অর্থাৎ আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বৎসর পার হল। স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান জানাচ্ছি। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আমার সশ্রদ্ধ সালাম। স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

জাতীয় পার্টি তার জন্ম থেকে অদ্যাবধি ৩৫ বৎসর সময়ের মধ্যে প্রায় ৪ বৎসর জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় ছিল। পরবর্তী ৩১ বৎসর দলটি ক্ষমতার বাইরে। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৯০ সালে দলটি তিনজোটের রুপরেখা মোতাবেক নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন হবে এবং এতে সকল রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিত্ব সমান অবস্থানে থেকে নির্বাচন করবে ও জয়ীদল সরকার গঠন করবে এ শর্তে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায়, সাংবিধানিক পন্থায় নিয়মতান্ত্রিক ভাবে। তিনজোট তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির জন্য জেলজুলুম, নির্যাতন ও নানারকম প্রতিকুলতা সৃষ্টি করে। তথাপি জাতীয় পার্টি ১৯৯১ সালের নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনে জয়ী হয়। খুব অল্পভোটের ব্যবধানে প্রচুর আসনে দ্বিতীয় অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়। পরবর্তী ৩১ বৎসর ক্ষমতায় আসতে না পারলেও ক্ষমতা নিয়ামক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখে চলছে। এর কারন কি হতে পারে?

আত্মপ্রকাশ করার পর ক্ষমতা হস্তান্তর করা পর্যন্ত যে ৪ বৎসর জাতীয় পার্টি সরকার পরিচালনা করেছে, সে চার বৎসর সময়ে বাংলাদেশ গণতন্ত্র চর্চ্চার মাপকাঠিতে ও জনকল্যাণমুলক কর্মকান্ড সম্পাদনে তুলনামূলকভাবে ভালো ছিল, বলা যায়।
গণতন্ত্র অর্থ জনগনের শাসন। জনগনের প্রতিনিধির মাধ্যমে জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হবে, সেটাই গণতন্ত্রের চর্চ্চা। শতভাগ গণতন্ত্র কোন দিনই সম্ভব নয়। যেহেতু দেশের সকল মানুষ একসাথে দেশ পরিচালনা করতে পারবে না। আবার সবার প্রত্যাশা এক হবে না। ফলে তা বাস্তবায়নও অসম্ভব। তবে কত বেশি সংখ্যক মানুষ অনুভব করে তাদের প্রতিনিধিরা তাদের ইচ্ছা/অনিচ্ছার প্রতিফলন রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ডে করছে, ততটুকু ভাল গণতন্ত্রের চর্চ্চা হচ্ছে বলা যায়। সে হিসাবে দেশের সিংহভাগ মানুষের যদি ঐ ধরনের উপলব্দি হয় যে জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী জনপ্রতিনিধি শাসন করছেন তা হলেই শুধু গ্রহনযোগ্য ভাবে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালু আছে বলা যায়। এর জন্য অবশ্যই জনগনের কাছে সরকারের সার্বক্ষনিক জবাবদিহিতা থাকা প্রয়োজন।

আজ স্বাধীনতা অর্জনের ৫০বৎসর বা সূবর্ণজয়ন্তীতে এসে বলা যায়, সার্বিকভাবে বিবেচনায় স্বাধীনতার পর থেকে অধ্যাবদি বাংলাদেশে কোন সময় গণতন্ত্রের চর্চ্চা গ্রহনযোগ্য পর্যায়ে ছিল না। এক কথায় বাংলাদেশে কোন সময়ই তেমন কোন গণতন্ত্রের চর্চ্চা হয়নি। এর প্রধান কারন আমাদের সংবিধান। সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে এবং বিভিন্নভাবে গণতন্ত্রের চর্চ্চার বিষয়ে জোড় দিয়ে বলা হয়েছে। কিন্তু সার্বিক ভাবে সংবিধানের বিভিন্ন বিধানাবলীতে গণতন্ত্রের চর্চ্চার চেয়ে একনায়কতন্ত্রবাদকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে অনেক ধরনের পরিবর্তন আনা হলেও গণতন্ত্র চর্চ্চার সুযোগ সৃষ্টির জন্য কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে ক্ষমতায় আসীন হয়ে সরকার গণতন্ত্রের চর্চ্চার সুযোগ সংকুচিত করেছে। গণতন্ত্র চর্চ্চার সহায়ক প্রতিষ্ঠান সমূহকে পর্যায়ক্রমে দূর্বল থেকে দূর্বলতর করে প্রায় ধ্বংস করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির দেশ পরিচালনার সময়কালে কিছুটা হলেও গণতন্ত্রের সাধ পেয়েছে দেশের মানুষ। জনগনের অধিকার অপেক্ষাকৃত ভাবে নিশ্চিত ছিল। অনেক বেশী সুশাসন উপভোগ করেছে মানুষ। আইনের শাসন ছিল। সবাই আইনের চোখে সমান ছিল ও আইনের আওতায় ছিল। সমাজে সার্বিকভাবে বৈষম্য ছিল কম, ন্যায় বিচার ছিল।

জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমুল পরিবর্তন করা হয়েছে অনেক চিরাচরিত নিয়মনীতি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন নতুন আঙ্গিকে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করেছে বিশে^র দরবারে। সে কারনে অনেকেই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে “আধুনিক বাংলার রুপকার” হিসেবে স্বীকৃতি দেন। তাছাড়া যুগান্তকারী সংস্কারমূলক এবং উন্নয়নমূলক অনেক কাজ তিনি করেছেন বা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। অবশ্য পল্লীবন্ধু এরশাদের পূর্ববর্তী ৮২ থেকে ৮৬ সালের শাসনকালের সময় থেকেই উপরোক্ত বিষয় গুলোর অনেক গুলোর সূচনা হয়েছিল।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা উপজেলা পদ্ধতির প্রবর্তন করেছিলেন। তৃনমুল পর্যায় থেকে জনগনের কাছে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। ঔপনিবেশ কালীন জনগনকে শোষনের উদ্দেশ্যে যে প্রশাসনিক কাঠামো ও নিয়ম কানুনের আমুল পরিবর্তন করেছিলেন।

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা উপজেলাকে গ্রোথ সেন্টার করেন। গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উপজেলা থেকে জেলা শহর, বিভাগীয় ও রাজধানী পর্যন্ত উন্নত মানের যোগাযোগ অবকাঠামো সৃষ্টি করে ছিলেন। দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত মানুষের যাতায়াত ও পন্য সরবরাহ নিশ্চিত করেছিলেন।

এ ধরনের অনেক সংস্কার, উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে জনগনের প্রত্যাশা, তিনি উপলব্ধি করেছিলেন ও বাস্তবায়ন করে জনগনের অন্তরে স্থান করে নিয়েছিলেন।
জাতীয় পার্টি ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর উপজেলা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। কিন্তু যেহেতু, উপজেলা পদ্ধতি সাধারন মানুষের প্রত্যাশার ফসল, এটাকে বাতিল করা জনগন গ্রহন করেনি। জনগনের দাবীর মুখে এ পদ্ধতির পূঃন প্রবর্তন করা হয়।

তবে, প্রশাসনের আমলাদের খুশী রাখতে নতুন ভাবে প্রবর্তিত উপজেলায় তৃনমূল পর্যায়ে জনগনের কাছে আমলাদের জবাব দিহিতামূলক পদ্ধতির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়। ঔপনিবেশিক আমলের ন্যায় আমলাদের শাসন জনগনের উপর চাপিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সাক্ষী গোপালের ন্যায় বসিয়ে রাখা হয়। উপজেলা আদালতকে জেলা শহরে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা পর্যায়ে আইনজীবিদের সুবিধার্থে। সাধারন মানুষের ভোগান্তিকে কোন বিবেচনায় আনা হয়নি। আমরা উপজেলা ব্যবস্থার পুর্নাঙ্গ বাস্তবায়ন চাই। তার জন্য সংগ্রাম করে যাবো।

এ রকম অসংখ্য জনকল্যানমূলক কাজ জাতীয় পার্টির নেতা এরশাদ করেছিলেন জনগনের প্রয়োজনে, তাদের প্রত্যাশা পুরনে, যেমন ঔষধনীতি- ঔষধ শিল্পকে বিকাশ করেছে আর স্বল্পদামে প্রয়োজনীয় ঔষধের বিক্রির ব্যবস্থা করেছে, অপ্রয়োজনীয় ঔষধ উৎপাদন বন্ধ করেছে।

গার্মেন্টস শিল্প বিকাশে ব্যাক টু ব্যাক এলসি ও বন্ডেড গোডাউন সুবিধা দিয়েছেন। সেনাবহিনীকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিদেশে নিয়োজিত করা হয়েছিল। তিনি যুগোপযোগী শিক্ষানীতি, স্বাস্থ্যনীতি তৈরী করেছিলেন, যা কিছু সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর কারনে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে যারা সে সময় বাধা দিয়েছিলেন তারা এর গুন-গান গায় এখন। অর্থাৎ সাধারন জনগনের প্রত্যাশা অনুযায়ী উনি/জাতীয় পার্টি অনেক কাজ করেছিল।

জনগনের ইচ্ছা/অনিচ্ছার প্রতিফলন সরকারী কর্মকান্ডে থাকাই গণতন্ত্রের চর্চ্চা। সে হিসেবে এরশাদ ও জাতীয় পার্টি তাদের শাসন আমলে গণতন্ত্রের চর্চা করে গেছেন। এখন প্রশ্ন আসে এরশাদ ও জাতীয় পার্টি জনগনের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন কিনা?

পল্লীবন্ধু এরশাদকে যখন দেশের দায়িত্বভার অর্পন করা হয়, তখন দেশবাসী এটাতে কোন বাধার সৃষ্টি করে নাই; বরং উল্লসিত হয়েছে। প্রকাশ্যভাবে সমর্থন দিয়েছে বেশির ভাগ মানুষ, বেশির ভাগ মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রায় সকলেই এর পক্ষে বক্তব্য দিয়েছিলেন।

পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে। পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে ও পরবর্তীতে এমনকি কারা অভ্যন্তরে থেকেও বারং বার বিভিন্ন স্থান থেকে একসাথে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। তার জীবদ্দশায় কোন নির্বাচনে পরাজিত হননি। মৃত্যুর সময় উনি সংসদে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। এমন কোন যুক্তি/প্রমান কেউ দেখাতে পারবেনা যে উনি ও জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত ব্যক্তিবর্গ জনগনের প্রতিনিধি নন।

এরশাদ ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল জাতীয় পার্টি জনগনের প্রতিনিধিত্ব করেছে। জনগনের ইচ্ছা/অনিচ্ছার প্রতিফলন সর্বদাই সেই রাজনীতিতে ছিল/কর্মকান্ডে ছিল। উনি সারা জীবন গনতন্ত্রের চর্চ্চা করে গেছেন। গনতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। জাতীয় পার্টির প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগ ও বিএনপি-র, এরশাদের ও জাতীয় পার্টির রাজনীতি নিয়ে অপ্রচার যে কত বড় জঘন্য মিথ্যাচার সেটা আমি তুলে ধরলাম।

মিথ্যাচারে বাস্তবে কোন ফল হয়নি। আমৃত্যু উনি জনপ্রতিনিধি ছিলেন, জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। মুত্যুর ঠিক পূর্ব দিনগুলো ও মৃত্যুর পর সারা দেশে অগণিত মানুষ তার জন্য যে উৎকন্ঠা, উদ্বেগ, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তার নজির পাওয়া দুস্কর।

১৯৯০ সালে জাতীয় পার্টি ক্ষমতা থেকে সরে দাড়ানোর পর আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় স্বাধীনতার চেতনা ও গনতন্ত্রের অবক্ষয়।

১৯৯১ সালে সংবিধান সংশোধন করে যে শাসন পদ্ধতি সৃষ্টি করা হয়েছে তাকে নামে সংসদীয় গনতন্ত্র বললেও এটা প্রকৃত অর্থে কোন গনতন্ত্র নয়। এখানে এক ব্যক্তির হাতে নির্বাহী বিভাগের সর্বময় ক্ষমতা, তার হাতেই সরকারের জবাবদিহী করার প্রতিষ্ঠান আইনসভা বা সংসদের সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রণ, বিচার বিভাগ ও সামান্য অংশ বাদে তার ক্ষমতার আওতার অধীন। নির্বাচন কমিশন সৃষ্টি ও নির্বাচন পরিচালনা চাবিকাঠি সেই একই ব্যক্তির হাতে দেয়া হয়েছে। প্রথম কয়েক বছর নির্বাচনকালীন একটি তত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে শুধু জাতীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় কিছু গুনগত মান উন্নয়েনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, যেটা পরবর্তীতে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় ও সে ব্যবস্থাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। ফলে, বর্তমানে দেশে সাংবিধানিক ভাবে সার্বিক একনায়কতন্ত্র চালু আছে।

আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল মুক্তির উদ্দেশ্যে। বৈষম্য, বঞ্চনা, শোষনের থেকে মুক্তি। কারন এর মাধ্যমে অবিচার, অত্যাচার, নির্যাতন, ক্ষুধা, দারিদ্য থেকে মুক্তি চেয়েছিল এ দেশের জনগন।

যখন তারা দেখলো পশ্চিম পাকিস্থান বাংলাদেশের মানুষকে ছোট করে দেখে, বৈষম্য করে। চাকুরী, ব্যবসা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা এমনকি উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থান থেকে সম্পদ আহরন করে পশ্চিম পাকিস্থানে বিনিয়োগ করে। তখন প্রথম এ অঞ্চলের মানুষ স্বায়ত্বশাসনের কথা চিন্তা করে দাবী তোলে। তারপর শুরু হয় অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন। একপর্যায়ে পশ্চিম পাকিস্থানী সেনাবাহিনী বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু করে। সে প্রেক্ষিতে, দেশ স্বাধীন করে আলাদা হওয়া ছাড়া বাঙ্গালীদের কাছে কোন বিকল্প থাকে না।

নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়। কিন্ত পরিতাপের বিষয় হলো যে, বৈষম্য, বঞ্চনা ও শোষন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্বাধীনতার সংগ্রাম হলো তা বাস্তবে লাভ করা গেল না। মুক্তি পাওয়া গেল না বৈষম্য থেকে, বঞ্চনা থেকে, শোষন থেকে।

১৯৯১ সালের পর থেকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি দলীয়করনের মাধ্যমে সরকারে গিয়ে বৈষম্যের আনুষ্ঠানিক সূচনা করলো। নিজেদের দলীয় মানুষদের চাকুরী, ব্যবসা অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিজেরা ভাগ করে নেয়া শুরু করলো। দেশের সাধারন মানুষ ন্যায় বিচার পেল না কোন ক্ষেত্রেই, মেধার মূল্যায়ন হলো না, দক্ষতা, আন্তরিকতা, সততার মূল্যায়ন হলো না। ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দিন দিন বাড়তেই থাকলো। দেশের সম্পদ দুর্নীতির মাধ্যমে লুন্ঠন করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাচার করা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত থাকলো।

মুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধানে মূলনীতি যে চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়ার কথা গনতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা, তারমধ্যে বাস্তবে শুধু ধর্ম নিরপেক্ষতা ছাড়া বাকী গুলি বর্তমানে রাষ্ট্রীয় নীতিমালা থেকে অবলুপ্ত বা অবলুপ্তের পথে।

এখন আসি দেশের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে।
এককথায় ভালো নেই দেশের মানুষ –
বেকার সমস্যা ——-
দেশে কোটি কোটি বেকার, কর্মসংস্থান নেই। অভাব অনটনে যুব সমাজ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। জড়িয়ে পড়ছে অনৈতিক কর্মকান্ডে।

দ্রব্যমূল্য————
প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিলে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের বিল বাড়ছে, কিন্তু মানুষের আয় বাড়ছে না।
পরিবার নিয়ে জীবন যাপনে হাপিত্যেশ উঠেছে সাধারণ মানুষের।

বিশ^বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেলে তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়, কিন্তু বিশ^বাজারে তেলের দাম কমলে দেশে তেলের দাম কমানো হয় না।
কৃষক যে ফসল ৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করে, সেই ফসল রাজধানীতে হাত ঘুরে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
চাঁদাবাজী Ñ গণপরিবহন
বেপরোয়া চাঁদাবাজীর কারনে গণপরিবহনের নৈরাজ্য থামছে না। গণপরিবহন কে নিয়ন্ত্রণ করছে বিষয়টি পরিস্কার নয়। সরকার গণপরিবহন চালাচ্ছে এটা বিশ^াস করেনা দেশের মানুষ। বরং অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় গণপরিবহণ যারা নিয়ন্ত্রণ করে, তারাই সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে তাদের নিজেদের স্বার্থে।
চাঁদাবাজী———-
সাধারণ ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে চাঁদাবাজদের হাতে। চাঁদা না দিয়ে কেউ নিজের জমিতে বাড়িও করতে পারে না। কৃষিপণ্য সরবরাহে ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজী ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম। ফুটপাতে বেপরোয়া চাঁদাবাজীতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অসহায়, দেখার যেনো কেউ নেই। এ গুলির মূল কারণ সরকারের জবাবদিহিতার অভাব, সার্বিকভাবে আইনের শাসনের অনুপস্থিতি।
কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি————–
দেশে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে হবে।
জি,ডি,পি প্রবৃদ্ধি———
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় জিডিপি বেড়েছে, জিডিপি বাড়লে মানুষের পেট ভরে না। দেখা যাচ্ছে জিডিপি বাড়লে সাধারণ মানুষের উপকার হয় না, তাই জিডিপি নিয়ে সাধারণ মানুষের কোন আগ্রহ নেই। জিডিপি বৃদ্ধির বা উচ্চ মাত্রার প্রধান সুফল চাকরী ও ব্যবসার সুযোগ সেটি তেমন হারে বাড়ছে না। বেকার সমস্যার সমাধানে প্রবৃদ্ধির কোন ভূমিকা লক্ষ্যনীয় নয়।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছেÑ—-
নির্বাচনে ভিন্নমতাবলম্বীদের মাঠে দাঁড়াতে দেয় না ক্ষমতাসীনরা। ক্ষমতার জোরে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হতে চায় তারা। কোথাও কোথাও ক্ষমতাসীনরা প্রশাসনের সহায়তায় কলুষিত করছে নির্বাচনী ব্যবস্থা। প্রশাসন ও আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনে ভোট ডাকাতি ও অব্যবস্থাপনার সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে এটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।

নির্বাচন কমিশন মানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এক সময় নির্বাচন ছিলো উৎসব মূখর, এখন নির্বাচনে হচ্ছে ভয় আর আতংকের নাম।

দেশের মানুষ রক্তাক্ত নির্বাচন চায় না। দেশের মানুষ খুনোখুনির নির্বাচন পছন্দ করে না। ক্ষমতা ও কালোটাকার খেলায় দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা কলুষিত হয়েছে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও নির্বাচন কমিশন গঠন আইন না হওয়াও লজ্জাজনক।

স্বাস্থ্য সেবার অবস্থা ও অব্যবস্থা————-
করোনাকালে প্রমাণ হয়েছে আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবা কতটা নাজুক-

আমাদের দাবী Ñ———-
উপজেলা পর্যায়ের প্রতিটি হাসপাতালে সকল ধরনের পরিক্ষা-নিরিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপজেলা সহ সকল সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ এর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
ইউনিয়ন পর্যায়ে এমবিবিএস পাশ চিকিৎসক দ্বারা স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিষ্ট নিয়োগ দিতে হবে।
দেশের মানুষ জানতে পেরেছে স্বাক্ষ্যখাতে মারাত্মক লুটপাটের খবর। স্বাস্থ্যখাতে দীর্ঘ দিনের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা আমরা জানতে চাই।

করোনা মহামারির শুরুতেই শুধু “নাই” “নাই” শুনেছে জাতি। আমরা চাই প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের পরিক্ষা-নিরিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। চিকিৎসা সেবা উন্নত করতে হবে, যাতে দেশের মানুষ চিকিৎসার জন্য আর বিদেশে না যায়।
উপসংসহার——————
এক কথায় –
দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাত থেকে মুক্তি চায়। কেননা এ দু’টি দল অপকর্ম, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, লুন্ঠনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে চলেছে। ক্ষমতার পরিবর্তনে এ অবস্থার পরিবর্তন হয় না।
দেশের মানুষ এখন জাতীয় পার্টিকেই বিকল্প শক্তি হিসেবে মনে করছে। তারা জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়।
প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির চেয়ে জাতীয় পার্টি দেশে বেশি গণতন্ত্র, সুশাসন আর উন্নয়ণ দিতে পেরেছে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ভবিষ্যতেও দিতে পারবে।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি হচ্ছে অচল পয়সার এপিঠ-ওপিঠ। দেশের মানুষ চায় চকচকে নতুন পয়সা। জাতীয় পার্টির মত রাজনৈতিক শক্তির দিকে তাকিয়ে আছে দেশের মানুষ।

আমাদের প্রস্তাবনা——

সংবিধানের সাংঘর্ষিক ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে। একনায়কতন্ত্রের পরিবর্তে সাংবিধানিকভাবে গণমানুষের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধানের চার মূলনীতি সমৃন্নত রাখতে হবে।

আমরা মনে করি, গণতন্ত্র চর্চার স্বার্থে সংবিধানে নিম্মবর্নিত সংশোধন, সংযোজন ও সহায়ক আইন প্রনয়ন আবশ্যক।
০১. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল বা নমনীয় করতে হবে (সংসদ সংক্রান্ত; সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থান নেয়ার স্বাধীনতা দিতে হবে)।
০২. সংবিধানের ১১৬ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করতে হবে (বিচার বিভাগ সংক্রান্ত; অধস্থন আদালত পরিচালনা করবে উচ্চ আদালত ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্বাহী বিভাগ নয়)।
০৩. সংবিধানের ৯৫(২) গ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন প্রনয়ণ করতে হবে (বিচার বিভাগ সংক্রান্ত; উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগের নীতিমালা ও সেখানে প্রধান বিচারপতি ও উচ্চ আদালতের প্রাধান্য থাকতে হবে)।
০৪. সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন প্রনয়ণ করতে হবে (নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত; নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের যোগ্যতার নীতিমালা ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করার উদ্দেশ্যে)।
০৫. সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন প্রনয়ণ করতে হবে (নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত; নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন বিষয়ে নির্বাহী বিভাগের উপর কর্তৃত্ব দেয়া বাস্তবায়নের জন্য)।
০৬.
জাতীয় পার্টির তরফ থেকে দুটি বড় ধরণের সংস্কার প্রস্তাব আমরা দীর্ঘদিন ধরে করে আসছি। বর্তমান অবস্থায় এগুলিকে বিবেচনায় আনা হলে বড় ধরণের কিছু সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে বলে মনে করি।

১.রাষ্ট্রের সকল সুবিধা গণমানুষের দোড়গোড়ায় পৌছে দিতে এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের জন্য প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
২.আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচন পদ্ধতি এখন বিশে^র বিভিন্ন দেশে প্রচলন করা হচ্ছে। আমাদের দেশেও ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এতে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিত হবে। নির্বাচন অনেকাংশে ক্ষমতা, পেশীশক্তি আর কালোটাকার প্রভাব মুক্ত হবে।
সর্বশেষে,
* সাধারন জনগনের কথা নূর হোসেনের ভাষায় বলতে চাই, “স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক”।
* জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর বিখ্যাত উক্তি, “বাঙালীকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না”।
* জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কথা প্রতিধ্বনি করে আরো বলতে চাই,
“নতুন বাংলাদেশ গড়বো মোরা, নতুন করে আজ শপথ নিলাম”
জাতীয় পার্টির নতুন ওয়েবসাইট িি.িলধঃরুড়ঢ়ধৎঃু.ড়ৎম.নফ,
এবং
জাতীয় পার্টির ডিজিটাল অটেমেশন সফটওয়্যার ও অহফৎড়রফ অঢ়ঢ়ং
এর শুভ উদ্বোধন ঘোষনা করছি।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এর সভাপতিত্বে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠানটি ধংস হয়ে গেছে। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি ব্যার্থ। আবারো ব্যার্থ হবে এমন নির্বাচন কমিশন আমরা চাই না। তিনি বলেন, দেশে ধনী ও গরিবের বৈষম্য বেড়েছে। এরশাদ সাহেব মাত্র ৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটে যে উন্নয়ন করেছে সে তুলনায় এখন ৫ লাখ কোটি টাকা বাজেটে তেমন কাজ হচ্ছে না।
জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ওপর বিরক্ত। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন করতে হবে। সময় নেই একথা বললে চলবে না। সরকার চাইলে আমরা নির্বাচন কমিশন গঠন আইন করে দেবো। প্রয়োজনে এই জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় সংসদ অধিবেশনে আমরা আইনটি তুলতে পারবো। আমরা আর কারো সাথে জোট করবো না, আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো। তবে, গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর নেতৃত্বে কেউ জোটে আসতে চাইলে দেখা যাবে। দেশের মানুষ পানির নিচ দিয়ে আর পানির ওপর দিয়ে রেল লাইন চায় না। দেশের মানুষ চায়, প্রতিটি জেলায় স্পেশালাইজড হাসপাতাল।

কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এখনো এদেশের মানুষের হৃদয়ে আছেন। ১৯৯৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সমর্থন দিয়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসিয়েছে। জাতীয় পার্টি এখন ঐক্যবদ্ধ, জাতীয় পার্টি হচ্ছে দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দল। আমরা মাঠে আছি, মাঠে থাকবো। জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় না নেয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।

কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেছেন, বর্তমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চেয়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর রাষ্ট্র পরিচালনা অনেক ভালো ছিলো। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে, বিএনপি নির্বাচনে নেই, জাতীয় পার্টি আছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা হামলা-মামলার শিকার হচ্ছে। অনেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেও হামলার শিকার হচ্ছেন । ভোটের ফলাফল দেখে মনে হচ্ছে নৌকার মাঝি খারাপ অথবা দেশের মানুষ নৌকার ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।

কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে। তবে, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কেউই রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে পারবে না। ঘুনে ধরা সমাজ বদলে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় পার্টির রাজনীতি।

কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর শাসনামল ছিলো ইতিহাসের স্বর্ণালি যুগ। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির শাসনামলে ফিরে যেতে চায়। জাতীয় পার্টি সংগঠিত হচ্ছে। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে জাতীয় পার্টি রাজনীতির মাঠে আছে।

আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সদস্যবৃন্দ।

জাতীয় পার্টির ৩৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো- চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো- চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এ্যড সালমা ইসলাম এমপি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া এবং যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজুর সঞ্চালনায় আরো বক্তৃতা করেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য-সাহিদুর রহমান টেপা, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপি, জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস-চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বেলাল হোসেন, জাতীয় শ্রমিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি ইব্রাহিম খান জুয়েল।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, নাজমা আক্তার এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, মেজর (অবঃ) রানা মোঃ সোহেল এমপি, উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান এমপি, এমএ কুদ্দুস, নুরুল ইসলাম মিলন, ডঃ নূরুল আজহার শামীম, মনিরুল ইসলাম মিলন, মেহজাবিন মোর্শেদ ইব্রাহিম, নাজনীন সুলতানা, হেনা খান পন্নী, ইসরাফিল খোকন, আমানত হোসেন আমানত, এড. লাকি বেগম, ইন্জিনিয়ার মোঃ সিরাজুল হক, ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী এমপি।

খন্দকার দেলোয়ার জালালী
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর
প্রেস সেক্রেটারি-০২।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.