অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলার যুব টাইগাররা

খেলা

ক্রীড়া ডেস্ক :
ক্রীড়া প্রতিবেদক: প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশ পচেফস্ট্রুমে উড়িয়েছে বিজয়ের পতাকা।

বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২১১ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৩৫ বল আগে ৬ উইকেটের বিশাল জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশের যুবারা। রোববার ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। 

স্কোর: বাংলাদেশ ২১৫/৪ (৪৪.১ ওভার) 
নিউজিল্যান্ড ২১১/৮ (৫০ ওভার)

জয়ের সেঞ্চুরি

বাঁহাতি স্পিনার টাসকফের বল সুইপ করে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে পাঠালেন মাহমুদুল হাসান জয়। ৯৬ থেকে বাংলাদেশের রান একলাফে ১০০। সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি জয়ের। তার সেঞ্চুরিতে জয়ের পথে বাংলাদেশ। তবে নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। শতরানে ফেরেন ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। ১২৭ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে শতরানের ইনিংসটি সাজান জয়। সপ্তম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে যুব বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পেলেন জয়। 

৯০ বলে দরকার ৫৪ রান

ফাইনালের টিকিট পেতে আরও ৫৪ রান করতে হবে বাংলাদেশ। হাতে আছে ৯০ বল ও ৭ উইকেট। ২১২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৫৮ রান ।

আরেকটি পঞ্চাশ রানের জুটি

চতুর্থ উইকেটে দলকে জয়ের পথ দেখাচ্ছেন মাহমুদুল হাসান জয় ও শাহাদাত হোসেন। এরই মধ্যে অর্ধশত রানের জুটি গড়েছেন দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। নিয়মিত বাউন্ডারির পাশাপাশি সিঙ্গেলস ও ডাবলসে স্কোরবোর্ড সচল রেখেছেন তারা।

বড় মঞ্চে জয়ের ফিফটি

বিপর্যয়ে পড়া দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তুলে দারুণ ফিফটি পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। শেষ ম্যাচে তার ব্যাট হাসেনি। কিন্তু সেমিফাইনালে খেললেন দুর্দান্ত ইনিংস। ৭৭ বলে ফিফটি পেয়েছেন জয়। ফিফটির পরও হাসছে তার ব্যাট।

হৃদয়-জয়ে চালকের আসনে বাংলাদেশ

দারুণ প্রতিরোধে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন দুই যুবা তৌহিদ হৃদয় ও মাহমুদুল হাসান জয়। এরই মধ্যে তাদের জুটিতে এসেছে ৫৫ রান। নিয়মিত বিরতিতে বাউন্ডারি আসার পাশাপাশি সিঙ্গেলস ও ডাবলসে স্কোরবোর্ড সচল রেখেছেন তারা। 

শুরুতেই হোঁচট

শুরুতেই সাজঘরে তানজিদ

লক্ষ্য আহামরি বড় নয়। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেল বাংলাদেশ। ২১২ রান তাড়া করতে নেমে ৩২ রান তুলতে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তানজিদ ফেরার পরপরই পারভেজ হোসেন ইমন আউট হন। পেসার ডেভিড হ্যানককের দুর্দান্ত ডেলিভারীর কোনো উত্তর জানা ছিল না ইমনের। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ১৪ রানে। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৩২।

কোয়ার্টার ফাইনালে দারুণ ব্যার্টিং করলেও সেমিতে হাসল না তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাট। মাত্র ৩ রানে সাজঘরে ফিরেছেন এ বাঁহাতি। ক্লিস্টিয়ান ক্লার্কের বলে থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দেন। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ২৩। 

শেষটায় বিবর্ণ বাংলাদেশ, রঙিণ নিউজিল্যান্ড

শেষ ৩ ওভারে ৩৭ রান তুলে লড়াকু পুঁজি পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ৪৭ ওভারে তাদের রান ছিল ১৭৪।  ৪৮তম ওভারে শরীফুল ব্যয় করেন ১৩ রান। পরের ওভারে তানজিদ দেন ৫। শেষ ওভারে শরীফুল ছিল আরও বিবর্ণ।  ইনিংসের সবথেকে বেশি ১৯ রান দিয়ে নিউজিল্যান্ডকে হাসিয়েছেন বাঁহাতি পেসার। তাতে নিউজিল্যান্ড পেয়েছে ভালো পুঁজি।  ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন বেকহ্যাম। ৮৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৭৫ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।  তার সঙ্গে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন অশোক।

শরীফুলের আরেকটি

শেষ দিকে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে উইকেট হারাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। এবার শরীফুলের শিকার জো ফিল্ড। ডিপ কভারে ক্যাচ তোলেন ফিল্ড। বাঁহাতি পেসারের এটি তৃতীয় উইকেট। ফিল্ডের আউটের সময় নিউজিল্যান্ডের রান ৮ উইকেটে ১৮৪।

এবার বোল্ড করলেন শরীফুল

দলের প্রয়োজন মিটিয়ে শেষ দিকে বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন পেসার শরীফুল। প্রথম উইকেটের পর ক্ষুধা বেড়েছে তার। তাইতো তুলে নিলেন ক্রিস্টিয়ান ক্লার্কের উইকেট।  ৯ বলে ৭ রান করে শরীফুলের স্লোয়ার মিস করে বোল্ড হন ক্লার্ক। তার ফেরার সময় নিউজিল্যান্ডের রান ৭ উইকেটে ১৬৮।

হাসানের আরেকটি

জুটি ভাঙলেন শরীফুল

অনেকটা প্রথম উইকেটের রিপ্লেই বলা যায়। সোজা বল মিস করে বোল্ড ব্যাটসম্যান। নতুন ব্যাটসম্যান  কুইন সানডেকে শুরুতেই লেন্থ বলে পরাস্ত করলেন বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। ম্যাচে এটি তার দ্বিতীয় উইকেট। এর আগে টাস্কফকেও বোল্ড করেন এ স্পিনার।  সানডে ফেরার সময় নিউজিল্যান্ডে রান ৬ উইকেটে ১৪২।

দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে ফিরেই উইকেট পেলেন পেসার শরীফুল। বাঁহাতি দ্রুতগতির বোলার এলবিডব্লিউ করেন নিকোলাস লিডস্টনকে। তাকে ফেরানোর মধ্য দিয়ে শরীফুল ভাঙেন নিউজিল্যান্ডের প্রতিরোধ। পঞ্চম উইকেটে নিকোলাস ও বেকহ্যাম উইলার ৬৭ রানের জুটি গড়েন। নিকোলাস ৭৪ বলে করেন ৪৪ রান।

প্রতিরোধ কিউইদের

মন্থর গতিতে রান তুললেও পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েছে নিউজিল্যান্ড। নিকোলাস লিডস্টোন ও বেকহ্যাম উইলার এরই মধ্যে গড়েছেন ৬৬ রানের জুটি।

শতরান পেরিয়ে নিউজিল্যান্ড

৩২তম ওভারে দলীয় শতরানের স্বাদ পেল নিউজিল্যান্ড। তৌহিদ হৃদয়ের বলে এক রান নিয়ে দলকে তিন অঙ্কের স্বাদ দেন নিক লিডস্টোন। মন্থর গতিতে রান তোলার পাশাপাশি নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। শতরানের আগেই তাদের চার ব্যাটসম্যান ফিরেছেন সাজঘরে।

হাসান বোল্ড টাস্কফ

হাসান মুরাদের বল পড়েই স্কিড করল। টাস্কফের ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে আঘাত করল স্ট্যাম্পে। ধীর গতির বল মিড উইকেট দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় করে ডানহাতি ব্যাটসম্যান বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে। টাস্কফের আউটের সময় নিউজিল্যান্ডের রান ৪ উইকেটে ৭৪।

জয়ের চোখ ধাঁধানো ক্যাচ

অফস্পিনার শামীম পেলেন দ্বিতীয় সাফল্য। তবে এ সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব দেওয়া উচিত ফিল্ডার মাহমুদুল হাসান জয়কে। শামীমের শর্ট বল স্লগ করেছিলেন ফার্গুস লেলমান। মিড উইকেটে ফিল্ডিং করা জয় ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বল তালুবন্দি করেন। বাড়তি গতি দৃষ্টি এড়াতে পারেনি জয়ের। লেলমানের আউটের সময় নিউজিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ৫৯।

অসাধারণ রকিবুলে দ্বিতীয় সাফল্য

শুরুর ২ ওভারে রকিবুল কোনো রানই দেননি। তৃতীয় ওভারে এসে পেলেন উইকেট। বাঁহাতি স্পিনার তুলে নেন ওয়াইটের উইকেট।  হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ওয়াইট। ৪৩ বলে ১৮ রান করে ফেরেন ওয়াইট। তার আউটের সময় নিউজিল্যান্ডে রান ২ উইকেটে ৩১।  এখন পর্যন্ত রকিবুলের বোলিং ফিগার এরকম, ৩-৩-০-১। 

পাওয়ার প্লে-তে নড়বড়ে নিউজিল্যান্ড

শুরুর পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। অবশ্য শুরুতে উইকেট হারানোর পর ভালোভাবেই প্রতিরোধ গড়েছে কিউইরা। ১০ ওভারে তারা তুলেছে ২৬ রান। প্রথম ৫ ওভারে ছিল না কোনো বাউন্ডারি। ষষ্ঠ থেকে দশম ওভার পর্যন্ত এসেছে ৪টি বাউন্ডারি। 

প্রথম সাফল্য শামীমের

ধীর গতির উইকেটে টস জিতে বোলিং নেওয়ার কারণ প্রতিপক্ষকে চেপে ধরা। অধিনায়কের কথা মতোই যেন কাজ করলেন শামীম হোসেন। বল হাতে দ্বিতীয় ওভারে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন স্পিনার শামীম। ডানহাতি অফস্পিনারের বলে স্লিপে ক্যাচ দেন রাইস মারিও। তানজিদ হাসানের ক্যাচ ধরে দলকে উল্লাসে ভাসান। মারিও আউটের সময় নিউজিল্যান্ডে রান ১ উইকেটে ৫।

বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, মাহমুদুল হাসান জয়, তৌহিদ হৃদয়, শাহাদাত হোসেন, আকবর আলী (অধিনায়ক), শামীম হোসেন, তানজিদ হাসান সাকিব, রাকিবুল হাসান, হাসান মুরাদ, শরীফুল ইসলাম।

ফাইনালে উঠার হাতছানি

যুব বিশ্বকাপের কোনো আসরে ফাইনালে খেলা হয়নি বাংলাদেশের। ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে বাংলাদেশ শেষবার উঠেছিল সেমিফাইনালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরে শিরোপার স্বপ্ন ভাঙে স্বাগতিকদের। যুব বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য তৃতীয় স্থান। ওই আসরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ।

এবার শেষ চারের লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্রেফ উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। পচেফস্ট্রুমে ব্যাট-বলের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ১০৪ রানের বিশাল জয় পায় বাংলাদেশ।  

Leave a Reply

Your email address will not be published.