আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উদযাপন

জাতীয়

মোঃ খাইরুজ্জামান সজিব :
“সবার মাঝে ঐক্য গড়ি, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ করি”- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও সুরভি কর্তৃক বাস্তবায়িত চাইল্ড ব্রাইড টু বুকওর্য়াম প্রকল্প। প্রকল্প অফিস ধলপুর ঢাকায় সকাল ১০টায় মোমবাতি প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচী শুরু করা হয়, যেখানে অংশ নেন প্রকল্প এলাকার ৭টি ইয়ুথ গ্রুপের প্রতিনিধিরা ও প্রকল্পের কর্মকর্তাগণ। কর্মসূচীতে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা করা হয় এবং অংশগ্রহণকারীরা প্রতিশ্রুতি বোর্ডে নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে তাদের নিজের প্রতিশ্রুতি লিখে স্বাক্ষর করেন।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর পক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন চাইল্ড ব্রাইড টু বুকওর্য়াম প্রকল্পের ম্যানেজার ফারজানা বারী এবং সুরভি’র পক্ষে বক্তব্য রাখেন সিবিবি প্রকল্পের ম্যানেজার মোঃ জায়েদ হোসেন। আলোচকগণ নারীর প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন দিক; সহিংসতা বন্ধে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর বিভিন্ন উদ্যোগ এবং পক্ষকালব্যাপী ক্যাম্পেইনের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেন।

জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে ১৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি বার্ষিক আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযান যা ২৫ নভেম্বর, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা নির্মূলের দিবসে শুরু হয় এবং ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত চলে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষকে কেন্দ্র করে এ বছর দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের এবছরের থিম- “সহিংসতার ভয় আর নয়”।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদশে এর চাইল্ড ব্রাইড টু বুকওর্য়াম প্রকল্পরে ব্যবস্থাপক ফারজানা বারী বলনে, “মেয়েদের পিছনে ফেলে রাখে এমন সামাজিক বাধাগুলো অতিক্রম করতে হবে এবং প্রতিটি শিশুকে মানসম্মত শিক্ষা, জীবন দক্ষতাগুলো শিখানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।”

ইয়থ গ্রুপের সদস্য ফারজানা আক্তার রিমু বলেন, “আমি নিজে সহিংসতা হতে অন্যকে রক্ষা করবো। আমার দ্বারা কেউ যেন সহিংসতার শিকার না হয় তা খেয়াল রাখবো। বন্ধু, পরিবার ও অত্মীয়-স্বজনকে সচেতন করবো।”

সমাজে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ বিদ্যমান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর সম্প্রতি করা এক জরিপে উঠে এসেছে, দেশের প্রায় ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ নারী জীবনে অন্তত একবার পাবলিক প্লেসে বিরূপ মন্তব্য এবং অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শের মতো নানা হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন, ৮০.১% নারী পারিবারিক সহিংসতার ভয়ে নিজেদের পছন্দসই কাজকর্ম এড়িয়ে চলেন।

এছাড়াও কর্মক্ষেত্রে নারীর পথচলা নানামুখী চাপে বাধাগ্রস্থ হয়, যখন সেখানে থাকে সহিংসতার ভয়। আর এই ভয় পিছিয়ে দিচ্ছে নারীদের এগিয়ে চলাকে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান ধরণের সহিংসতার শিকার হচ্ছেন নারীরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: তাদেরকে নানা ধরনের হুমকি প্রদান, আপত্তিকর বার্তা পাঠানো এবং তাদের ছবি ব্যবহার করে ফেইক প্রোফাইল তৈরি করা।
সহিংসতার ভয়ে আর চুপ থাকা নয়, যে কোন ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে, সহিংসতার ভয়কে জয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.