কুমিল্লায় নিখোঁজ শিশু বাপ্পীর হত্যাকারী সৎ বাপের আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্ধি

অন্যান্য

এম শাহীন আলম :
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পশ্চিম জোড় কানন ইউপি এলাকার তারাপুর থেকে নিখোঁজ হওয়ার ২ দিন পর ধনাজোর জলাশয় থেকে গত রবিবার শিশু আরাফাত হোসেন বাপ্পী (৭) এর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের সৎ পিতা মো. সেলিম প্রকাশ রুবেল (২৫) কে গত বুধবার রাতে মোহাম্মদপুর গ্রাম থেকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী প্রদান করেছেন বলে দৈনিক বাংলা খবর কে জানিয়েছেন, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী।

তিনি জানান, গত বুধবার রাতে মোহাম্মদপুর গ্রামে গোপন সংবাদে খবর পেয়ে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিল্লাল হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহীনুর ইসলাম, এএসআই মো. দেলোয়ার হোসেন সঙ্গীয়ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে শিশু আরাফাত হোসেন বাপ্পী হত্যা মামলার মূল আসামী ধনাজোর গ্রামের মোঃ জলিল হক প্রকাশ ফজলু মিয়ার পুত্র নিহতের সৎ পিতা মোঃ সেলিম প্রকাশ রুবেলকে গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, আসামী নিজের ঔরষজাত নবজাতকের মাথায় সম্প্রতি শিশু বাপ্পী আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে সৎ পিতা রুবেল বাপ্পীকে চড় মারেন। এনিয়ে শাশুড়ি অর্থাৎ বাপ্পীর নানীর সাথে রুবেলের কথা কাটাকাটি হয়। এতে আসামীর মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সে নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে পথের কাঁটা আরাফাত হোসেন বাপ্পীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। গত ১৫ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে বাপ্পীর নানার বাড়ি তারাপুর গ্রাম থেকে কৌশলে তাকে ধনাজোর এলাকায় নিয়ে গিয়ে গলায় রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ জলাশয়ের পানিতে ডুবিয়ে রাখেন। ঘটনার পর থেকে নিহত শিশুর নানা জালাল মিয়ার কান্নাকাটি দেখে সে নিজেই ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় মরদেহ নিজ হাতে জলাশয় থেকে বের করে (আসামীর শশুর) জালাল মিয়ার নিকট দিয়ে সে তাৎক্ষনিকভাবে আত্মগোপনে চলে যায়। এ ঘটনায় নিহতের মামা আল আমিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে তিনি উল্লিখিত ঘটনার বিবরণ দেন এবং আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধী দিতে ইচ্ছা প্রকাশ করায় আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় তার উল্লেখিত জবানবন্ধী বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় আর কারও জড়িত থাকার ব্যাপারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন ইন্ধন বা সহযোগীতা বা প্ররোচনা রয়েছে কি-না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। জবানবন্ধী প্রদান শেষে তাঁকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.