মোঃ শরিফুল ইসলাম সুমন :
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে স্বামীর পরকীয়ার জেরে বিষপানে দুই সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোববার উপজেলার মাধবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যকারী নারী খায়রুন নাহার ঝুনু (৪০)। ঘটনার পর থেকে তার স্বামী মো. শাহ আলম পলাতক রয়েছেন।
সূত্র জানায়, উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মো. শাহ আলম নিমসার বাজারে বীজের ব্যবসা করেন। দোকান কর্মচারীর বোন লাকী আক্তার পাখির পারিবারিক ঝামেলা মেটানোর সূত্রে তার (লাকি) সঙ্গে শাহ আলমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এই সম্পর্ক থেকে পরকীয়া।
খায়রুন নাহারের বড় মেয়ে সামিয়া জানান, তিন বছর আগে তার বাবা শাহ আলম প্রতিবেশী লাকি আক্তার পাখির সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে প্রায়ই তার বাবা-মার মধ্যে ঝগড়া হতো।
সামিয়া বলেন, গত ১৪ জুন কুমিল্লা নগরীর মুন্সেফ কোয়ার্টার এলাকায় একটি বাসায় ওই মহিলা (লাকি) ও আমার বাবা একসঙ্গে থাকছেন খবরে আমার মা সেখানে যায়। ওইদিন লাকি আক্তার পাখির স্বজনরা আমার মাকে বেদম প্রহার করে। ঘটনার ৩ দিন পর আমার মা কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন সেলে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
খায়রুন নাহার ও শাহ আলম দম্পতির বড় মেয়ে সামিয়া আরও জানান, শনিবার রাতে মা খায়রুন নাহার তার বাবাকে বলেন, হয় আমার সঙ্গে না হয় ওই মহিলার সঙ্গে থাকো। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে তার মা গোপনে বিষপান করেন।
সামিয়া বলেন, আমি ঘটনা টের পাই। তখন আমার মা বলে, তোমরা আমাকে মাফ করে দিও। পরে আমার আব্বু, আম্মুকে অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথমে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে আম্মা মারা যান।
স্থানীয় রফিকুল ইসলাম রফিক নামের একজন বলেন, খায়রুন নাহারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কয়েকবার শালিসে বসেছি। শাহ আলম গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও কখনো তা স্বীকার করেনি। এটা তার প্রতারণা ছিল। তার প্রথম স্ত্রী বেশ কয়েকবার দ্বিতীয় স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হন।
দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরসহ অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।