কুমিল্লার তিতাসের সুমন হত্যাকাণ্ডের নিম্ন আদালতের রায়ের উপর হাইকোর্টের রুল

অন্যান্য

হালিম সৈকত :
কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন সাতানি ইউনিয়নের বারকাউনিয়া গ্রামের চাঞ্চল্যকর ও লোমহর্ষক সুমন হত্যাকাণ্ডের নিম্ন আদালতের রায় কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে মহামান্য হাইকোর্ট রুল জারি করেন। আসামিদেরকে ২৮ দিনের মধ্যে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন এবং সকল নথি তলব করেন।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ১৮ জুন দিবাগত রাত 9 টায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বার কাউনিয়া গ্রামের জালু মিয়ার ছেলে প্রবাসী সুমনকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং তার ছোট ভাই সাইদুলকে এলো পাথারি কুপিয়ে আহত করে সন্ত্রাসী রিপন, লিটন আলাউদ্দিন গংরা।

নিহত সুমনের মা কান্না করতে করতে এই প্রতিবেদককে জানান আমার চোখের সামনে আমার বড় ছেলে সুমন গলাকাটা মুরগির মত ছটফট করতে করতে মারা যায়, এই দৃশ্য আমি মা হয়ে কিভাবে ভুলব। আমার ছোট ছেলেকেও সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারি কুপিয়ে জখম করে। আল্লাহর অশেষ কৃপায় সে বেঁচে যায়।

২০১৭ সালের ২০ জুন নিহতের পিতা তিতাস থানায় ১. মোঃ লিটন মিয়া ২. মোঃ রিপন মিয়া ওরফে রিপন বেপারী ৩. মোঃ আলাউদ্দিন সর্ব পিতা মৃত আব্দুল জলিল, ,৪. মমতাজ বেগম, স্বামী- মৃত আব্দুল জলিল,৷ সর্বগ্রাম-বারকাউনিয়া,পোঃ সাতানি, থানা-তিতাস সহ আরো ৬ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দিন রাতেই গ্রামবাসী অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে ৬ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং বার কাউনিয়া বাজার মাঠে ৪-৫টি গ্রামবাসীর সমন্বয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায় গ্রেফতারের পর আসামিরা জামিনে এসে একজন সৌদি আরবে পালিয়ে যায়। বাকিরা স্থানীয় কিছু নেতার ছত্রছায়ায় বাড়িতে এসে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ভিকটিমের পরিবারকে মামলা উঠিয়ে নিতে এবং বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিমের পরিবার বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গ্রামবাসী বলেন তাদের এখন অনেক টাকা টাকার জোরে আশেপাশে প্রতিবেশীদের বাড়ি দখলসহ সরকারি খাস জমি দখল করে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করতে থাকে। এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করে না। তাদের অত্যাচারে এবং ভয়ে গ্রামবাসী তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।

সুমনের পরিবার এবং এলাকাবাসীর একটাই দাবি খুনিদের যেন সর্বোচ্চ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় যাতে করে ভবিষ্যতে খুনিরা আর কোন মায়ের বুক খালি করতে না পারে, সুমনের সন্তানের মত আর যেন কোন সন্তান পৃথিবীর আলো দেখার আগেই বাবাকে না হারায়, রাষ্ট্রের কাজে তাদের এই আকুতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.