মাহফুজ বাবু :
কুমিল্লায় বেকার তরুণ ও যুবকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বরুড়ার তরুণ উদ্দোক্তা সৌদি আরব প্রবাসী হানিফ। দীর্ঘদিন প্রবাসী জীবন শেষে অনেকেই দেশে এসে যখন চিন্তিত হয়ে পরেন কি করবেন, তখন সুদুর সৌদি আরবে বসেই ওয়েভ ক্যামেরার মাধ্যমে পরিচালনা করছেন ষাঁড় গরুর বিশাল ফার্ম। এবছর কুরবানীতে বিক্রির জন্য শতাধিক গরু প্রস্তুত করা হয়েছে তার ফার্মে। প্রবাসী ব্যবসায়ী হানিফের সাথে কথা বলে জানা যায়, নিজস্ব অর্থায়ন ও যমুনা ব্যাংকের বরুড়া শাখা থেকে প্রাথমিক ভাবে কিছু লোন নিয়ে বরুড়া গত বছর আগানগর ইউপির বড়হাতুয়া গ্রামে নিজস্ব ২৪শতক জায়গার ওপর বাছাইকরা শতাধিক ষাঁড় গরু নিয়ে গড়ে তোলেন হানিফ এগ্রো ফার্ম নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ছোটভাই জয়নাল আবেদীনের পরিচালনায় ফার্মটিতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৮জনের। সর্বনিম্ন ২৫০ কেজি থেকে ৫-৬শ কেজি ওজের গরু রয়েছে তার এই ফার্মে। ইউটিউব চ্যানেল দেখে, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে তরুণ উদ্দোক্তা হানিফ এখন একজন সফল খামারি। এবার কুরবানির ঈদের আগেই খামারের সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি। আগামী ১০জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে বর্তমান বাজারে ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি ওজনের ছোট গরু লাইভ ওয়েটে ৪২৫ টাকা কেজি দরে মাঝারি ৩ থেকে ৪শ কেজি ওজনের গরু ৪৫০ টাকা এবং বড় গরু ৪৮০টাকা কেজি দরে ডিজিটাল স্কেলে মেপে সরাসরি ফার্ম থেকেই বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কুরবানির গরু কিনতে ফার্মে আসছেন ক্রেতারা। কুমিল্লা ভেতরে ফ্রী পরিবহন সুবিধায় হোম ডেলিভারি সার্ভিস দেয়ায় ক্রেতারাও বাজারের ঝামেলা এড়াতে স্বপরিবারে ফার্মে এসেই কিনছেন গরু। ইতিমধ্যে বিক্রিও করেছেন বেশকিছু গরু। লাল কালো ও সাদা রংয়ের বিভিন্ন সাইজের গরু ওজনে কিংবা ঠিকা দরে কেনার সুবিধা রয়েছে তার ফার্মে। ঘাস খৈল ভুষি সহ সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবারে লালন পালন করায় তার ফার্মের দেশী গরুর চাহিদাও রয়েছে ভালো। বাজার ভালো থাকলে সব খরচ পুষিয়ে মোটামুটি ভালো লাভের আশা করছেন হানিফ।
শুধু গরুর ফার্মেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না সফল খামারী প্রবাসী হানিফ। বিশেষ ব্যবস্থাপনায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা ব্যায়ে গরুর বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে নবনির্মিত আরেকটি ফার্ম সহ দুটো ফার্মের বায়োগ্যাস প্লান্ট থেকে আগামী বছর স্থানীয় প্রায় দেরশতাধিক পরিবারের মাঝে জ্বালানি সংযোগ দিবেন বলে আশা করছেন হানিফ। জ্বালানী গ্যাস ও জৈব সারের ব্যপক চাহিদা থাকায় এ থেকেও মাসিক প্রায় ২লক্ষাধিক টাকা আয় হবে ধারনা করছেন হানিফ। ঈদের ছুটিতে দেশে এসেছেন তিনি, এখন বিদেশে বসে ফার্মে লাগানো ওয়েভ ক্যামেরায় ফার্মের শ্রমিকদের নির্দেশনা দেন তিনি। দুগ্ধ গরু ও মোটাতাজা করন ফার্ম দুটোর পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হলে বিদেশে ব্যবসা গুটিয়ে দেশে এসে সরাসরি মনোযোগ দেবেন খামারে।
লাভজনক হওয়ায় তার এই ফার্ম দেখতে প্রবাস ফেরত বন্ধুবান্ধব ও যুবক সহ স্থানীয় বেকার স্বল্প শিক্ষিত, শিক্ষিত তরুণরা আসছেন প্রতিদিন। ব্যবসা ও খামার সম্পর্কে নানা পরামর্শ নিয়ে নিজেরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন খামার ব্যবসায়। প্রবাসী উদ্দোক্তা হানিফ জানান, নিজস্ব জায়গা থাকলে প্রশিক্ষণ ও লোন নিয়ে খুব সহজেই এ ব্যবসা শুরু করা যায়। এতে করে একদিকে যেমন দেশে আমিষের চাহিদা পুরন সহ অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখা সম্ভব। সেই সাথে চাকরি প্রত্যাশী বা বিদেশে গমনেচ্ছুদের জন্য দেশেই নিজ কর্মস্থান সহ অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। তিনি জানান আগামী সিজনে আরো বড় পরিসরে কয়েক শতাধিক গরু তুলবেন খামের। পাশাপাশি দুগ্ধ গরুর খামার গড়ে তোলার ইচ্ছে বাস্তবায়নে কাজ করছেন। সঠিক পরিচর্যা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বল্প বিনিয়োগে বছরে কয়েক লক্ষ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বরুড়া বড়হাতুয়া গ্রামের প্রবাসী হানিফ।
বড় মাঝারি বা ছোট লাইভ ওয়েটে কিংবা ঠিকা দরে কুরবানির জন্য সুস্থ সবল দেশী ষাঁড় গরু কিনতে বরুড়া বড়হাতুয়ায় হানিফ এগ্রো ফার্মে ঘুরে আসার অনুরোধ হানিফের। ঘরে বসে অনলাইনে কেনার সুবিধা সহ এখন কেনার পর ঈদের আগের দিন কুমিল্লার ভেতরে ফ্রী হোম ডেলিভারি সার্ভিস সহ আরো বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৮২৮-৩৮ ৮১ ৮২ নাম্বারে।