বিশেষ প্রতিনিধি :
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের মনশাসন (পশ্চিম পাড়া) এলাকার ধানক্ষেতের পাশের ডোবা থেকে এক যুবকের কয়েক টুকরো অর্ধগলিত বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ । অর্ধগলিত লাশটির পড়নের পোশাক দেখে গত ১০ দিন ধরে নিখোঁজ একই ইউনিয়নের শরৎনগর (কাবিলা) কাজীবাড়ি এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে পিকাপ চালক সায়মন (২১)এর বলে ধারনা করছেন তার স্বজনরা।
নিখোঁজ সায়মনের লাশটি শনাক্তকারী তার মামি লিপি আক্তার ও দাদি জানান, গত ১০ দিন আগে শুক্রবার বিকেলে মায়ের সাথে কথা বলে সৈয়দপুর এলাকায় এক বন্ধুর সাথে দেখা করার জন্য বেরিয়ে যায় সায়মন। সেদিন রাত সাড়ে ৯ টায় সায়মনের সাথে আবারো ফোনে কথা হয় তার মায়ের। এসময় সে সৈয়দপুর এলাকায় আছে বাড়িতে আসতে দেরি হবে বলে জানায় তার মাকে। পরদিন শনিবার ভোর ৫টায় তার ব্যবহত মোবাইল নাম্বার থেকে সাইমনের বন্ধু পরিচয় দিয়ে একজন সায়মনের মা কে ফোনে বলেন, সায়মনকে খুঁজতে সৈয়দপুর এলাকায় যোগাযোগ করার জন্য। এবং এ বিষয়ে পুলিশ কে যেন কিছু না জানায়। এরপর থেকেই সায়মনের মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায় বলে জানায় নিহতের মামি লিপি আক্তার। এরপর দুদিন পেরিয়ে গেলেও সায়মনের কোন খোঁজ খবর না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পরে স্বজনরা। পরে কালির বাজার ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি মেম্বার গোলাম মোস্তফা সহ স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর সায়মনের খোঁজ না পেয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় নিখোঁজের বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করে পরিবার।
৮ নভেম্বর সোমবার আনুমানিক সকাল সাড়ে ৮টায় মনশাসন পশ্চিমপাড়া এলাকার জনৈক ব্যক্তি ধানের ক্ষেতের পাশের একটি ছোট ডোবায় ঘাস ধোয়ার জন্য যান। সেখানে দুর্গন্ধ পেয়ে ডোবায় থাকা একটি প্লাস্টিকের বস্তা ওপরে তুললে মাথা, পা ও হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন লাশের একটি অংশ দেখতে পায়। পরে সে স্থান থেকে আরো প্রায় ৫০০গজ দুরে নির্জন এলাকার ধান ক্ষেতের পাশের আরেকটি ডোবায় লাইলনের দরিতে পেঁচানো কোমর থেকে নিচের দুপায়ের আরেকটি অংশ পাওয়া যায়। তবে লাশের মাথা ও দু হাতের কব্জির অংশের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন সদর সার্কেল সোহান সরকার, কোতয়ালী মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম, নাজিরা বাজার ফাঁড়ি পুলিশের ইন্সপেক্টর সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।
ওসি আনোয়ারুল আজিম জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলেই মনে হচ্ছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে লাশের দুটো টুকরো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত পরে জানা যাবে।