গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ হচ্ছে বললেন রাহুল গান্ধী

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
সংসদে বাদল অধিবেশনের হঠাৎ সমাপ্তি নিয়ে অব্যাহত দোষারোপ- পাল্টা দোষারোপের পালা। আচমকা অধিবেশন শেষ করে দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে মিছিল করেন বিরোধীরা। “দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস” সূত্রে খবর- ছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে, এনসিপির শরদ পাওয়ার, শিবসেনার সঞ্জয় রাউত-সহ প্রায় সমস্ত বিরোধী দলের নেতারা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মিছিল শেষে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, রাজ্যসভার ইতিহাসে প্রথমবার বহিরাগতদের এনে সাংসদদের মারা হল। ধাক্কা দেওয়া হল। স্পিকার সহ সবাই চুপ। তাঁরা নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।

সংসদের অধিবেশন শেষ হয়ে গিয়েছে। দেশের ৬০ শতাংশ বিষয় নিয়ে অধিবেশনে কোনও আলোচনাই হয়নি। দেশের ৬০ শতাংশ মানুষের কণ্ঠস্বর দমিয়ে দেওয়া হয়েছে। চেপে দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্রের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে । শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতও সংসদের উচ্চকক্ষে মহিলা সাংসদদের উপর হওয়া হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। শিবসেনার অভিযোগ ‘আমরা বারবার পেগাসাস নিয়ে আলোচনা চেয়েছি। মার্শাল নামিয়ে রাজ্যসভায় বিল পাস করেছে সরকার। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জাজনক। আমাদের কথা বলতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি । দেখে মনে হচ্ছে আমরা যেন পাকিস্তান বর্ডারে দাঁড়িয়ে আছি ।বুধবার, বেশ কয়েকজন মহিলা কংগ্রেস সাংসদ অভিযোগ করেছেন যে তারা পুরুষ মার্শালদের দ্বারা শারীরিকভাবে নিগৃহীত হয়েছেন , কারণ তারা রাজ্যসভার ওয়েলে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছিলেন । কংগ্রেসের ছায়া ভার্মা এবং ফুলো দেবী নেতাম অভিযোগ করেছেন যে পুরুষ নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিলো এবং উভয় পক্ষের ঝগড়ার মাঝে ফুলো দেবী নেতাম পড়েও যান । এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার বলেছেন যে তার ৫৫ বছরের সাংসদ জীবনে , রাজ্যসভায় মহিলা সাংসদদের ওপর এরকম নজিরবিহীন আক্রমণের ঘটনা কখনো দেখেননি । পাওয়ারের অভিযোগ, বাইরে থেকে লোক এনে সংসদে তাদের নিরাপত্তা কর্মী সাজিয়ে এই হামলার ছক কষা হয়েছে , যা আসলে ণতন্ত্রের উপর আক্রমণের সমান। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের চিফ হুইপ জয়রাম রমেশ জানান , জিআইসি -কে বেসরকারীকরণ করার জন্য বিমা সংশোধনী বিলটি রাজ্যসভায় পাস করানোর সময়ে সেখানে প্রচুর নিরাপত্তা রক্ষী উপস্থিত ছিলেন । বিরোধীদের অনুরোধ সত্ত্বেও সরকার এই বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে অস্বীকার করে। তিনি জানান এরপর সংসদে যা হয়েছে তা সত্যি নজিরবিহীন।জয়রাম রমেশের মতে , পার্লামেন্টে প্রিসাইডিং অফিসারদের পক্ষপাতদুষ্ট খেলোয়াড় নয়, নিরপেক্ষ আম্পায়ার হওয়ার কথা। কিন্তু সেই ভূমিকা পালনে তারা ব্যর্থ । নির্দিষ্ট সময়ের দুই দিন আগেই বুধবার সংসদ মুলতবি করা হয়। উপ-রাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা প্রত্যেকেই বুধবার এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, নাইডু সংসদে ভেঙেও পড়েন, তিনি চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি । ১৯ জুলাই, বাদল অধিবেশন শুরুর পর থেকেই পেগাসাস কেলেঙ্কারি এবং তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন নিয়ে বিরোধিতার জেরে সংসদের উভয় কক্ষের কাজ ক্রমাগত বিঘ্নিত হয়েছে । দফায় দফায় মুলতুবি হয়েছে সংসদের অধিবেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.