মোহাম্মদ আলী সীমান্ত :
গাজীপুরের কোনাবাড়ী কলেজ রোড এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভুল অপারেশনে আরাফাত হোসেন (৬) নামের এক শিশুর মৃত্যুও অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের পরিবার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, জানা যায়, আরাফাতের বাবা শেখ শাহা আলম, চাচা মাহবুবসহ ৩-৪জন অভিভাবক সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাজমহল হসপিটালে নিয়ে যান আরাফাতকে। সেখানে শিশুকে অনাহারে রেখে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। শিশুকে অজ্ঞান করে অপারেশন করেন ডা. আবুল হোসেন। আধা ঘন্টা অপারেশন করতে সময় লাগার কথা থাকলেও সাড়ে তিনটাও আপরেশন থিয়েটার থেকে কেউ বের না হলে শিশু আরাফাতের অভিভাবকের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি হসপিটালের কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলেও তারা কিছু জানাতে রাজি হয়নি। রাত সাড়ে আটটার দিকে আরাফাতের জ্ঞান ফিরে না আসার কথা অভিভাবকরা জানতে পারেন। তখন ডা. আবুল হোসেন ও হসপিটাল কর্তৃপক্ষ নানা ছলচাতুরি করে শিশুটির লাশ হসপিটাল থেকে বের করার চেষ্টা করে। পরে অভিভাবকদের কাছে গিয়ে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় যে, শিশু আরাফাতকে দ্রুত ঢাকার একটি হসপিটালের আইসিওতে ভর্তি করতে হবে। সেই সময় অভিভাবকরা টের পান তাদের আরাফাত আর পৃথিবীতে বেচে নাই। তবু আরাফাতকে নিয়ে রাতেই ধানমন্ডির ১৭ নম্বর এলাকার পিং কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আরাফাত কে আইসিওতে নিয়ে একজন চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। পরে আরাফাতের চাচা মাহবুবকে ডেকে জানান, এই শিশু সন্ধ্যার দিকেই মারা গেছেন। ওই সময় শিশুর অভিভাবকরা রাত তিনটার দিকে বিকল্প একটি এ্যাম্বুলেন্স দিয়ে আরাফাতের লাশ নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর মেট্রো থানার সারদাগঞ্জ গ্রামে নিয়ে আসেন। বুধবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে আরাফাতের নামাজে জানাযা শেষে দাফন করা হয় বলে অভিভাবকরা জানান।
নিহত আরাফাতের চাচা মাহবুব জানান,শহীদ সোহরার্দি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসোসিয়েট প্রফেসর ডা. আবুল হোসেন আমাদের ফুসলিয়ে তাজমহল হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে অপারেশন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকলেও আরাফাতকে ভুল ইনজেকসন পুস করে অজ্ঞান করে। পরে অপারেশন করার পর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি। এসময় তাজমহল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ ও ওই চিকিৎসক নিজেরা বাচার জন্য রাতেই ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠিয়ে হয়রানি করেন। আমি এ হত্যাকারীদের বিচার চাই।
তাজমহল হসপিটালের ম্যানেজার মেহেদি জানান, ডা. আবুল হোসেন ওই শিশু আরাফাতকে নিয়ে অপারেশন করতে এখানে নিয়ে আসেন। পরে বিকেলের দিকে শিশুকে অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর শিশুর অবস্থা খারাপ হতে থাকলে ওই চিকিৎসক নিজেই ঢাকার কোন হাসাপাতালে নিয়ে যান। পরের ঘটনাটি জানি না।
এ বিষয়ে শহীদ সোহরার্দি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এসোসিয়েট প্রফেসর ডা.আবুল হোসেনের সাথে তার মুঠো ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।