এম শাহীন আলম :
দিনে ২৪ ঘন্টা,সপ্তাহে ৭ দিন,মাসে আল্লাহর ৩০ দিন,বছরে ৩৬৫ দিন চট্রগ্রাম (উওর) বন বিভাগের কুমিরা রেঞ্জের ফৌজদারহাট চেক স্টেশনে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি,বান্দরবান,কক্সবাজার পাহাড়ি ও উপকূলীয় এলাকা থেকে আসা বনজ গাছ,কাঠ,বাঁশ, ফুলের ঝাড়ু,মৌশুমী ফল সহ সকল বনজ দ্রব্য ভর্তি গাড়ী গুলো থেকে বন বিভাগের শুল্ক কর কাগজপএ ( টিপি) চেকের নামে প্রকাশ্যে গাড়ির প্রকার ভেদে বিভিন্ন অংকের টাকা চাঁদাবাজী করছে স্টেশন গুলোতে এসিএফ এর যোগসাজশে রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশে স্টেশন কর্মকর্তা সহ স্টেশনে কর্তব্যরতরা।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়,দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিরতিহীন ভাবে চলছে চট্রগ্রাম উত্তর বন বিভাগের চেক স্টেশনের নামে এই প্রতিষ্ঠানটিতে শুল্ক কর আদায়ের কাগজপত্র ও গাড়ী চেকের নামে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজী,এরেই মধ্যে চট্রগ্রাম (উওর)বন বিভাগের বিভাগীয় অফিসে এই অনিয়মের বিষয়ে একাধিক বার আলোচনা করেও এই চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্হা কিংবা প্রতীকার পাওয়া যায়নি, আলোচনা করলেই তারা বারবার চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বলে গণ-মাধ্যমকে আশ্বাস দিচ্ছে,কিন্তু সরেজমিনে কাজের কাজ তারা কিছুই করছে না বলে জানা প্রতীয়মান,
এই প্রতিবেদনটির স্বার্থে সরেজমিনে কুমিরা রেঞ্জ ফৌজদারহাট এলাকার স্হানীয় লোকজন ও কাঠ ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন গণ-মাধ্যমকে জানান,এই ফৌজদারহাট চেক স্টেশনে সারা বছরই গাড়ীতে আসার মালের কাগজপত্র চেকের নামে চেক স্টেশনে কর্তব্যরতদের বিভিন্ন অংকের টাকা দিতে হয়,না হয় তারা গাড়ী ছাড়ে না,কাঠ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ আমরা ব্যবসা করি সরকার কে ভ্যাট টেক্স দিয়ে,তারপরও চেক স্টেশন গুলোতে টিপি চেকের নামে টাকা দিতে হয়,আর টাকা না দিলে কাঠ/মালের গাড়ি গুলো আটক রেখে বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করে ফৌজদারহাট স্টেশনে কর্তব্যরতরা, কাঠ ভর্তি বেশ কয়েকটি গাড়ীর ড্রাইভার এবং চালানদারদের সাথে কথা বললে তারা গণ-মাধ্যমকে জানান,ফৌজদারহাট চ চেক স্টেশনে গাড়ী প্রতি সর্বনিম্ন ২৮৫০ টাকা থেকে শুরু করে গাড়ির প্রকার এবং মালের ধরণ বুঝে টিপি চেকের নামে মোটা অংকের প্রকাশ্যে চাঁদা দিতে হয় স্টেশন গুলোতে কর্তব্যরতদের আর টাকা না দিলে তারা বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের মামলার ভয় দেখায় এবং গাড়ী আটক রেখে হয়রানি করে,
স্হানীয় প্রত্যেক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,এই ফৌজদারহাট স্টেশনে গাড়ি চেকের কথা থাকলেও দেখা যায় গাড়ির আশপাশেও স্টেশনে কর্তব্যরত কোন কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীরা কেউ আসে না,দেখা যায় মালের কাগজপত্র টিপি নিয়ে চালানদার কোন কোন গাড়ির ড্রাইভার হেলপার স্টেশনে গিয়ে টাকা দিয়ে আবার কাগজে সীল সই নিয়ে আসে,স্হানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান,প্রায় সময় দেখি ঘন্টার ঘন্টা গাছের গাড়ি আটক রেখে রফা করে ছেড়ে দেওয়া হয়,আবার মাঝে মধ্যে দেখি রফায় না মিললে গাছের গাড়ির বিরুদ্ধে মামলাও দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে চেক স্টেশন অফিসার মঞ্জুর এর সাথে সরেজমিনে দেখা করতে গেলে তাকে তার স্টেশন অফিসে পাওয়া যায়নি। এবং স্টেশনের কেউ গণ মাধ্যমের সাথে সরাসরি দেখা করে কিংবা মোবাইল ফোনে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। পরক্ষনে অনেক চেষ্টার পর স্টেশন অফিসার মঞ্জুর এর মোবাইল ফোন নাম্বারটি সংগ্রহ করে তাকে তার মোবাইল ফোনে কল করে ফৌজদারহাট চেক স্টেশনটিতে টিপি চেকের নামে কিসের টাকা নেওয়া হয় বলে জানতে চাইলে,মঞ্জুর বলেন, আমার জানা মতো এখানে কোন প্রকার টাকা নেওয়া হয় না,আমাকে কল করার কি দরকার আপনার কাছে কোন তথ্য প্রমাণ থাকলে আপনি নিউজ করে দিন।
চেক স্টেশনের কাজগপত্র চেকের নামে চাঁদাবাজির বিষয়ে বন বিভাগ চট্রগ্রাম উত্তর এর এসিএফ জয়নাল আবেদীনকে এই বিষয়ে অবগত করা হলে তিনি জানান,বিষয়টি আমার জানা নেই তবে এখন যেহেতু জেনেছি খোঁজ নিয়ে আমি দ্রুত ব্যবস্হা নিবো। এসিএফ জয়নাল আবেদীন এর কথায় কিছুটা সন্দেহ হলে আবার পুনরায় তিন দিন পর তাকে মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি জানান,আমি চেক স্টেশনের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি কিন্তু আপনার কথার সাথে কোন মিল পেলাম না।জয়নাল আবেদীন জানান, চেক স্টেশন গুলোতে কোন প্রকার চাঁদাবাজি কিংবা কোন প্রকার টাকা পয়সা নেওয়া হয় না বলে জানান। এই বিষয়ে চট্রগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ডিএফও কায়চার এর মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে এই অনিয়ম বন্ধ হওয়া না পর্যন্ত ধারাবাহিক নিউজ চলবে।