ঝরে-পড়াদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষাখাতে বাজেটের ২০% বরাদ্দ করতে হবে

স্বাস্থ্য

নিউজ ডেস্ক :
করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষায় বাংলাদেশের অর্জন ধরে রাখা এবং স্কুল বন্ধ থাকায় আয়মূলক কাজে যুক্ত হওয়া ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। এ প্রেক্ষাপটে শতভাগ ভর্তি অব্যাহত রাখা ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদান বড় চ্যালেঞ্জ হবে। টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে সরকার স্কুলের পাঠদান চালু রাখলেও এই প্রক্রিয়ায় শতভাগ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্ত হতে পারেনি। বিশেষ করে গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এসব কার্যক্রমের বাইরে থেকে গেছে। এ চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে সরকারকে ঝরে -পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ সহায়তা তহবিল গ্রহণসহ শিক্ষাখাতে বাজেটের ২০% বরাদ্দসহ এর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

১১ মে ‘‘ করোনা বিপর্যস্ত শিক্ষা: বাজেট ২০২১-২২’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষ সরকারের কাছে এ আহ্বান জানান। ‘গ্লোবাল উইক অব এ্যাকশন অন এডুকেশন’ উপলক্ষে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযান ও দর্পণ এর যৌথ উদ্যোগে এ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।

 

ওয়েবিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ পরিচালক কে এম এনামুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষায় মানসম্মত বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগ কেবল অবকাঠামো উন্নয়নে নয়, মানসম্মত ও যুগোপযোগি শিক্ষা ও প্রান্তিক মানুষের জন্য কিভাব ন্যায়সঙ্গত বরাদ্দ নিশ্চিত করা যায় সেটা দেখতে হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য উপবৃত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি স্কুল মিল সব স্কুলে চালু করতে হবে। বিশেষকরে আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, চর ও হাওর এলাকা ও শহরের বস্তিবাসী শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডুকেশন ও আইসিটি ) জনাব নাজমা আশরাফি বলেন, সরকার শতভাগ শিক্ষার্থীকে ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে । যদিও সব শিক্ষার্থী অনলাইন বেজড এডুকেশনের আওতায় আসেনি। তবু সরকার রেডিও টেলিভিশনের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষায় ধরে রাখার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের ও ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

ওয়েবিনারে বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষায় শতভাগ অন্তর্ভূক্তি নিশ্চিত করতে হলে সহায়তা তহবিল ছাড়াও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। শিক্ষকদের প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য পৃথক ক্যাডার ঘোষণা করতে হবে। শিক্ষকদের কেবল বেতন বাড়ানোই নয় যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ি প্রনোদনা দিতে হবে।

 

ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা জেলা শিক্ষা কমকর্তা মোঃ আব্দুল মজিদ ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান। সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল হাসনাত বাবুল সঞ্চালনায় ছিলেন দর্পণ এর কর্মসূচি পরিচালক বাসন্তি সাহা।ওয়েবিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দর্পণ এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ।

 

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি জহিরুল হক দুলাল, সোনারবাংলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ, কুমিল্লা জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার, বরুড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুদ্দিন আহমেদ তালুকদার, সুবরাতি শাহজাদী মেমোরিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ নূরে আলম সিদ্দিকী এবং শিক্ষাথী স্মরণ মজুমদার।

 

ওয়েবিনার আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন দর্পণ এর সহকারী প্রকল্প পরিচালক নাজনীন আক্তার তপা এবং অর্থ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার চম্পা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.