বিশেষ প্রতিবেদক :
নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার সেলিম বাজার আশ্রণ প্রকল্পে মাদক ও পতিতাবৃত্তির সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে আশ্রয়নে বসবাসরত প্রায় ২ শতাধিক নারী পুরুষ। ৭ নভেম্বর (সোমবার) বিকালে সুবর্ণচর উপজেলার ২ নং চরবাটা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আশ্রয়ন প্রকল্পের সামনে বটতলী তারা মার্কেটে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয় আশ্রয়ন প্রকল্পের বসবাসকারী তরুন, যুবক, বৃদ্ধ, নারী পুরুষ ছাত্রছাত্রীসহ প্রায় ২ শতাধিক এলাকাবাসী। মানববন্ধনে ১ নং দিঘীর সভাপতি হোসেন বলেন, সেলিম বাজার আশ্রয়নে চলছে পতিতাবৃত্তি, মাদক ব্যাবসা সহ নানা অনৈতিক কাজ। হাতিয়া উপজেলার চানন্দী ইউনিয়নের নলেরচর গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের পুত্র বেলাল হোসেন (৪৫) আশ্রয়ণে দীর্ঘদিন ধরে অজ্ঞাত নারীদের এনে অনৈতিক কাজ করাচ্ছেন সেই সাথে ইয়াবা, গাজাসহ নানান ধরনের মাদক এনে এখানে বিক্রি করেন। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে গুমখুন ও হামলা মামলার ভয় দেখান। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ইয়াসমিন নামের এক নারীকে ২ বছর আগে বিয়ে করে, গত ৭ মাস আগে ইয়াসমিনকে তালাক দেয় বেলাল। তালাক দেয়ার পরেও ইয়াসমিনের ঘরে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে বেলাল হোসেন, গতকাল ৬ নভেম্বর বেলাল অপরিচিত দুজন নারীকে নিয়ে ইয়াসমিনের ঘরে তোলে বিষয়টি টের পেয়ে লোকজন নিয়ে হোসেন ইয়াসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ইয়াসমিন ক্ষিপ্ত হয়ে হোসেনকে রড দিয়ে মারধর করেন। মানববন্ধনে বেলালের সাবেক স্ত্রী নুর জাহান বলেন, বেলাল ২ বছর আগে আমাকে ছেড়ে চলে আসে এবং আশ্রয়নের ইয়াসমিনকে বিয়ে করে গত ৭ মাস আগে ইয়াসমিন বেলালকে তালাক দিয়েছে মর্মে একটি তালাক নামা দেখিয়ে ইয়াসমিনকে বিদায় করে দিতে হোসেনের মাধ্যমে বেলালকে ৮০ হাজার টাকা দেন। সে টাকা পেয়ে বেলাল ইয়াসমিনকে নিয়ে চট্রগ্রাম চলে যায়, গত ৩ দিন আগে বেলাল ইয়াসমিনকে নিয়ে আশ্রয়ণে আসলে নুর জাহান জানতে পেরে পাওনা টাকা নিতে আসেন, গতকাল হোসেন কে নিয়ে পাওনা টাকা চাইতে গেলে ইয়াসমিন হোসেনকে মারধর করে। বেলালের এমন অসামাজিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে আশ্রয়ণের বাসীন্দাগণ রাস্তায় প্রতিবাদ করে। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, বেলাল হোসেনের সাথে বড় একটি চক্র জড়িত রয়েছে সে চট্রগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নারী ও মাদক এনে আশ্রয়ন প্রকল্পে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এসব কার্যক্রমের সাথে যারাই জড়িত সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান আশ্রয়নের বাসিন্দাগণ। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, আশ্রয়নের বাসিন্দা মোঃ হোসেন, হাশেমের পুত্র সুমন, একই এলাকার বাসাীন্দা তাজুল ইসলাম, অভিযুক্ত বেলালের সাবেক স্ত্রী নুর জাহান(৩৮), মেয়ে জান্নাত (১৮)। অভিযুক্ত বেলাল বলেন, আমি ইয়াসমিনকে তালাক দেয়নি, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা, গতকাল হোসেন ষড়যন্ত্র করে আমাকে মারধর করে এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করেছি। অভিযুক্ত ইয়াসমিন বলেন, আমার স্বামী বেলালকে তালাক দিয়েছিলাম সত্য পরে আমরা কোর্টের মাধ্যমে পূনরায় মিলমিশ হয়ে গেছে, আমি চট্রগ্রাম গার্মেন্টসে কাজ করি মাঝে মাঝে আশ্রয়ণে এসে থাকি। গতকাল হোসেন আমাদেরকে মারধর করে পরে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। তারা যা বলেছে সব মিথ্যা। চরজব্বর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদিন বলেন, বেলাল এবং ইয়াসমিন চট্রগ্রাম থাকে কয়েকদিন আগে তারা আশ্রয়নে আসে, গতকাল হোসেনসহ কয়েকজন লোক ইয়াসমিনের ঘরে হামলা ও ভাংচুর করে, ইয়াসমিন বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।