পটুয়াখালী প্রতিনিধি :
পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় চোরচক্র চুরির কৌশল এখন বদলে ফেলেছে। খাবারের সাথে করার ঔষধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে স্বর্নলংকারসহ মূল্যবান মালামাল ও নগদ টাকা হাতিয়ে নির্ভিগ্নে চম্পট দেয় চোরচক্র।কয়েকমাস ধরেই বিভিন্ন জায়গায় একই কৌশলে চুরি হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এপর্যন্ত চোরচক্রের কোন সদস্যকে থানা পুলিশ আটক করতে পারেনি।
একইভাবে গত রবিবার (২৭-মার্চ-২০২২ ইং) তারিখ দুমকি উপজেলার রাজাখালী ও সোমবার বাদুয়া শ্রীরামপুর গ্রামের দু’পরিবারের ৮ জনকে অচেতন করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়েছে সংবদ্ধ চোরদল। দু’পরিবারের অজ্ঞান হওয়া ৮ জনের মধ্যে ৬জনকে দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২জনকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার রাজাখালী গ্রামে রোববার রাতে শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সালাম’র মেঝভাই ছালামপুর ফাজিল মাদ্রসার শিক্ষক আবুল কালাম মৃধা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে প্রতিবেশী ও বাড়ীর লোকজন দেখতে পায় ঘরের দরজা খোলা। আবুল কালাম মৃধা, তার স্ত্রী ফরিদা ও মেয়ে ইভাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে দুমকি উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই বাসার তরকারি খেয়ে পাশের বাসার ঢাকা ফেরত দু’জন মেহমানও অচেতন হওয়ায় তাদেরকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চোরচক্র কৌশলে পরিবারের সবাইকে অচেতন করে বসত:ঘরের দরজা খুলে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে গেছে। পারিবারিক সূত্র জানায়, গরু বিক্রিসহ ঘরে রাখা নগদ ২ লক্ষাধিক টাকা এবং সুটকেস ভেঙ্গে দলিলপত্র নিয়ে গেছে। এছাড়া একই এলাকার মোস্তফা মৃধা ও তার স্ত্রী মুকুল বেগমকে অচেতন করে মালামাল ও নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই দম্পত্তিকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একই ভাবে সোমবার রাতে বাদুয়া শ্রীরামপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলী খানের বাড়ির রূপালী ব্যাংক পবিপ্রবি শাখার পিয়ন আল-আমিনের বসত:ঘরের সবাইকে অচেতন করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল নিয়ে যায়। আল-আমিন, তার মা ফরিদা বেগম ও বোন তারা ভানুকে অচেতন অবস্থায় দুমকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এর আগেও মুরাদিয়া ইউনিয়নের চাকলাদার বাড়ি ও রাজাখালীর মোজাম্মেল হাওলাদার বাড়িতে একই ভাবে অজ্ঞান করে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আংগারিয়ার পশ্চিম ঝাটরা ও রূপাশিয়া গ্রামের একাধিক পরিবারের বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক মোটর ও ফ্যান চুরি হয়েছে। একই রাতে দুমকি মাদ্রাসা ব্রীজ ও রুপাশিয়া এলাকার ৮টি দোকানে চুরি সংঘটিত হয়।
স্থানীয়রা জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্রের উৎপাতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিরাতেই চোরদল হানা দিচ্ছে। থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। এলাকাবাসীরা পুলিশি টহল জোড়দারের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুস সালাম বলেন, মৌখিক ভাবে চুরির খবর শুনেছি। তবে এ ব্যাপারে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি।অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক পদক্ষেপ নেয়া হবে।