মতিন খন্দকার টিটু :
বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজের ৫ জন ছাত্রীকে মেস মালিকের বন্দীদশা থেকে উদ্ধার করলো পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়ার সরকারী আজিজুল হক কলেজের ছাত্রছাত্রীরা হলে সিট না পেয়ে কলেজের পাশেই কামারগাড়ী জহুরুল নগর, পুরান বগুড়া, জামিলনগরে প্রায় ৫শ’টি ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাসে থেকে ১০ হাজারের অধিক পড়া লেখা করে। অধিক ভাড়া হলেও হলে সিট না পেয়ে এবং কলেজ কাছে হওয়ায় বাধ্য হয়েই সেখানে থাকছে।এসব ছাত্র-ছাত্রীরা বেশীর ভাগই অন্য জেলা থেকে এসে পড়ালেখা করে। করোনার সময় প্রায়ই ছাত্র এবং ছাত্রীনিবাসের মালিকরা আগাম দুই মাসের ভাড়া ছাড়া বই কাপড়-চোপড় বের করতে না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
রবিবার দুপুরে কামারগাড়ী এলাকায় শিউলী ছাত্রীনিবাসে ছাত্রীরা বাড়ী যাওয়ার জন্য বই কাপড়-চোপড় বের করতে নেয়। এসময় ছাত্রীনিবাসের মালিকের কেয়ারটেকার রেনু বেগমসহ আশে পাশের ছাত্রীনিবাসের ছাত্রীদের আগাম দুই মাসের ভাড়া ছাড়া বের হতে নিষেধ করে। এক সময় ছাত্রীদের সাথে তর্কে জড়িয়ে যায় ছাত্রীনিবাসের মালিক। এক পর্যায়ে ছাত্রীনিবাসের মালিক ছাত্রীদের ভেতরে রেখে মুল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। খবরটি পুলিশ অবগত হওয়ার পর পুলিশসহ গনমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত হয়। এসময় প্রায় শতাধিক ব্যাক্তি ও ছাত্রীনিবাসের মালিক এক হয়ে বলে এটা আমাদের নিয়ম। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে ৫ ছাত্রীকে বই কাপড়-চোপড়সহ বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়।
বগুড়া ষ্টেডিয়াম ফাড়ীর এস আই জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ ছাত্রীকে তালাবদ্ধ রাখা অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ওই ছাত্রীনিবাসটিতে প্রায় ৫০ জন ছাত্রী থাকতো।
কেয়ারটেকার রেনু বেগম জানান, বাড়ীর মালিক হাজী রমজান আলীর সাথে কথা বলেই অন্যান্য মালিকদের সাথে নিয়ে তালা ঝুলিয়েছিলাম। অপর মালিক মোঃ মাছুম জানান, আমরা ছাত্রীনিবাসের মালিকরা এক হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগাম দুই মাসের ভাড়া ছাড়া কাউকে বই কাপড়-চোপড় নিয়ে বাড়ী যেতে দেওয়া হবে না। তাই সবাই মিলে ভাড়া না দেওয়ায় তালাবদ্ধ করা হয়।
ওই ছাত্রীনিবাসের ছাত্রী বিথী জানান, মে মাস পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে। আগাম আরো দুই মাসের ভাড়া চায়। করোনার সময় বিভিন্ন ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের মালিকরা জোট হয়ে এভাবে নির্যাতন করছে। ভাড়াও তারা বেশী নেয়। জহুরুলনগরের অপর ছাত্রীনিবাসের মালিক আসলাম আলী জানান, এটা অমানবিক। আজিজুল হক কলেজের আশেপাশে প্রায় ৫শ’টি ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের ১০ হাজারের মত শিক্ষার্থী থাকে। করোনার সময় বেশীর ভাগ মালিকরা এরকম করছে।