সাদ্দাম হোসেন, সাভার :
সাভারের বহুল বিতর্কিত বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম ও ঢাকা মহানগর মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও ধর্ষণের ঘটনায় ঢাকার আদালতে পিটিশন মামলা।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, ঢাকা মহানগর মুগদা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জামাল উদ্দিন, মীর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন ৮২/২ ইউনুস সুপার মার্কেটের নিউ পপুলার আবাসিক হোলেটের ভাড়াটিয়া মো. মালিক, শহীদ ফারুক রোড এলাকার মোঃ জাভেল হোসেন পাপন (৪১), রাজধানীর উত্তর মানিকনগর এলাকার মোঃ মোখলেছ (৩৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার কাবিলগঞ্জ গ্রামের মৃত-তোফাজ্জল মিয়ার ছেলে মোঃ আনিসুল বাসার রতন (৩২), বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ থানার সিন্নিরচর গ্রামের দলিল উদ্দিনের ছেলে মোঃ জসিম (৫০), রাজধানী যাত্রাবাড়ীর ৮২/এ, শহীদ ফারুক রোড এলাকার মোঃ কবির হোসেন ওরফে মিরাজ (৪৫), রাজধানীর ৪৬/বি/-১ উত্তর মানিকনগর এলাকার ভাড়াটিয়া মোঃ আলাউদ্দিন (৩০), মোসাঃ আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরী (৫০)।
এদিকে বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার ও ধর্ষণ মামলা দায়েরের
ঘটনা জানা জানির পর থেকে বনগাঁও এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চেয়ারম্যান সাইফুল আত্নগোপনে আছেন বলে দাবি করেন ঘনিষ্টরা।
মামলার সূত্রে জানা যায় , গত (১০ এপ্রিল) রবিবার মলিনা আক্তার জুঁই (২০) নামে এক যুবতী বাদী হয়ে ঢাকা মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মানবপাচার আইনে ৭/৮/১০/১১/১৪ ধারায় মানবপাচার ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ১১/২০২২ ।
ভুক্তভোগী, মলিনা আক্তার জুঁই (২০) পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার টিয়াখালী গ্রামের মো. খোকন মোল্লা মেয়ে বর্তমান তিনি ঢাকা জেলার মুগদা উত্তর মানিকনগর এলাকার ভাড়াবাড়ি বসবাস করতেন। গত ২৯ মার্চ দুপুরে সর্বশেষ তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ঐ যুবতী।
মামলা সূত্রে, আঙ্গুরি বাদী জুঁই কে গৃহপরিচারিকা পরিচয়ে বাসায় রেখে জোর পূর্বক দেহব্যবসা করিয়ে আসছিলেন। বিবাদী সাইফুলসহ অন্য সাতজন তার সঙ্গে নিয়মিত শারিরিক সম্পর্কে জড়াতেন। এ ঘটনার পর তিনি পালিয়ে মুগদা থানায় গিয়ে একাধিকবার অভিযোগ করলেও থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল উদ্দিন মীর মামলা না নিয়ে তাকে উল্টা হয়রানি করেন।
বিবাদীরা বাড়ির নিচতলার ভাড়াটিয়া আঙ্গুরী ও তার সহযোগীরা মাদক ও নারী পতিতা ব্যবসা করিত। এব্যাপারে বাদী গত ১৩ই মার্চ মুগদা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। থানার এসআই এনামুল ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলেও মামলা রেকর্ড করায় না । বাদী ওই জোনের সহকারি কমিশনারের (এসি) কাছে গিয়েও প্রতিকার মিলেনি। মামলা আমলে না নেওয়ায় থানার ওসিকে বিবাদি করে ওই জোনের এসি ও থানার এসআইকে স্বাক্ষী করে। ধর্ষিতা বাদী হয়ে গত ১০ এপ্রিল আদালতে পিটিশন মামলা রুজু করেন ।
বাদির আইনজীবি এডভোকেট জাকির হোসেন হাওলাদার জানান, ১৩ জনকে সাক্ষী করে মলিনা আক্তার জুঁই নামে এক যুবতী বাদী হয়ে মানবপাচার ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। আদালত সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন।
এ মামলার তদন্ত সংশ্লিরা জানান, আদালতের নির্দেশ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাদির বক্তব্য নিয়েছেন। আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
মামলার বিষয় জানতে, বনগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।