স্ব-স্বীকৃত এক নম্বর অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়েছেন-রিজভী

রাজনীতি

অনলাইন নিউজ ডেস্ক :
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্ব-স্বীকৃত এক নম্বর অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়েছেন।

১০ ফেব্রুয়ারী সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এই মন্তব্য করেন।

এ সময় সম্প্রতি ইতালিতে জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন রিজভী। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন তিনি। কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা এবং মুক্তির দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ইতালিতে এক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের জন্ম বিহারে, এরশাদের জন্ম কুচবিহারে আর খালেদা জিয়ার জন্ম শিলিগুড়ি। জিয়া-এরশাদ-খালেদা তাদের একজনও এ মাটির সন্তান না।

এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন,কার সন্তান কোথায় আছেন, কোথায় বিয়ে করেছেন তা দেশবাসী ভালো করেই জানে। দেশের সন্তান কে, কারা এ মাটির সন্তান তা দেশবাসীর অজানা নয়। যাদের সন্তান দেশের বাইরে থাকেন, বাইরেই বিয়ে করেছেন তারা হয়ে গেলেন দেশপ্রেমী।

রিজভী বলেন, শুধু কি গোপালগঞ্জই বাংলাদেশ। গোপালগঞ্জের মাটিই বাংলাদেশের মাটি? বগুড়ার মাটি কি বাংলাদেশের মাটি নয়? ফেনীর মাটি বাংলাদেশের মাটি নয়? রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, খুলনার মাটি বাংলাদেশের মাটি নয়? একজন প্রধানমন্ত্রী যখন এমন উদ্ভট বক্তব্য দেন তখন বুঝতে হবে দেশ কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের উত্তোরণের ইতিহাসে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই পরিবারটি (জিয়া পরিবার) শুধু চোখ রাঙানি কেন, ১/১১ এর সরকারের নানা ষড়যন্ত্রের মুখেও দেশ ছেড়ে যাননি। জিয়া এবং খালেদা জিয়াই সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় বিনা অপরাধে দুই বছরের বেশি হলো কারাবন্দি রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। জেলের ভেতর হত্যার চেষ্টা চলছে। ৭৫ বছর বয়সী দেশনেত্রীর অবস্থা চরম খারাপ। এখনই মুক্তি দিয়ে দ্রুত উন্নত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা না করলে আমরা তার জীবনহানির আশঙ্কা করছি।

অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেছেন- তিনি বিশ্বের এক নম্বর অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রীর এই কথা চিরকুটে লিখে রাখলাম। হাসতে হাসতে হার্টফেল করলে অর্থমন্ত্রী দায়ী থাকবেন। এই বক্তব্য অজ্ঞাতপ্রসূত নয়, রাজনৈতিক ধান্দাবাজিপ্রসূত। অর্থমন্ত্রী এই বক্তব্যের পরের দিনই আবার বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ।

তিনি বলেন, মূলত স্ব-স্বীকৃত এক নম্বর অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়েছেন। আসলে গণতন্ত্র ধ্বংসকারী মন্ত্রীদের মুখে এ ধরনের অবান্তর বক্তব্যই মানায়।

দুই সিটি নির্বাচনের কারচুপির বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নামে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের বিজয় দেখানো হয়েছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় আওয়ামী পান্ডারা দিনে-দুপুরে দস্যুবৃত্তির মাধ্যমে কারচুপির যত রকমের কৌশল আছে সব প্রয়োগ করেছে এই ভোটে। এই সরকার বাদে নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও নগরবাসী এই কারচুপির ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচনের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরেছেন

রিজভী বলেন, সরকার চলছে দুই লক্ষ কোটি ঋণের টাকায়। আপনাদের (আওয়ামী লীগ) দলের ছিঁচকে নেতাও এখন অবৈধ শত কোটি টাকার মালিক। তাদের শাস্তি হয় না। মামলা হলে দায়মুক্তি দেয় দুদক। আর যে নেত্রী একটি টাকাও তসরুপ করেননি, তাকে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতার শিকার বানিয়ে সম্পূর্ণ বিনা অপরাধে হত্যার জন্য জেলে রাখা হয়েছে।


এ সময় তিনি ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বলেন, আমি মিস্টার ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বলব- আপনি ভোট কারচুপির এমনই মেকানিজম করেছিলেন যে, আপনি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আপনার সুস্থতা কামনা করি, কিন্তু জালিয়াতির মেশিন ইভিএম দিয়ে ভোটারদের যেভাবে সর্ষে ফুল দেখিয়েছেন সেজন্য আপনাকে নিয়ে ভোটাররা কী ভাবছেন সেটি একটু বোঝার চেষ্টা করবেন। বারবার অসুস্থ হওয়ার পরেও আপনি মিথ্যার ফেরিওয়ালাই থেকে যাচ্ছেন। সৃষ্টিকর্তার কথা বিবেচনা করে অন্ততপক্ষে কিছুটা সত্য বলার চেষ্টা করুন।

এ সময় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.